প্রতীকী ছবি।
রাজ্য সরকারের কাছ থেকে শিল্পীভাতা নিচ্ছেন। আবার জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য যা প্রাপ্য, তা-ও সরকারের থেকে নিতে ছাড়ছেন না। তৃণমূল পরিচালিত চণ্ডীতলা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কারেরী দাসকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে জেলা রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠেছে, এক ব্যক্তি সরকারের থেকে দু’টি ভাতা নেন কী করে। শিল্পীদের জন্য রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দেওয়া মাসিক এক হাজার টাকা ভাতা পান কাবেরীদেবী। আবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে সরকারের থেকে সাম্মানিক হিসাবে মাসে ৬,২০০ টাকাও নেন তিনি। এ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কাবেরীর বক্তব্য,‘‘আমি এই নিয়ম না জেনেই শিল্পীভাতা নিয়েছি। তবে বিষয়টি নজরে আসার পরে আমি তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে আবেদন জানিয়েছি, যাতে আমাকে ভাতাপ্রাপক শিল্পীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। সেই আবেদনের রসিদও রয়েছে আমার কাছে।’’ এক ব্যক্তি কী সরকারের থেকে দু’টি ভাতা পেতে পারেন? কী বলছে প্রশাসন?
মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক (শ্রীরামপুর) দীপঙ্কর দে বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিধি খতিয়ে দেখেছি। সব দিক দেখে আমার মনে হয়েছে, এক সঙ্গে দু’টো সরকারি ভাতা না-নেওয়াটাই সঙ্গত।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘ভাতাপ্রাপক শিল্পীদের তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি আবেদন করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘প্রশ্নটা আইন ভাঙা হল কিনা, তা নয়। প্রশ্নটা ‘এথিক্স’ বা নীতি নিয়ে। উনি জনপ্রতিনিধি হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাঁর উচিত একটি ভাতা ছেড়ে দেওয়া। বেতন বা স্যালারি নিলে সেটি আইনের আওতায় পড়ত। উনি দু’টি সাম্মানিক পান। একটি ছেড়ে দেওয়াই ভাল।’’ এক সঙ্গে দু’টো সাম্মানিক গ্রহণ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কি রয়েছে? ওই আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সেই সুযোগ নেই। তা ছাড়া উনি নিজেই শিল্পীভাতা না-নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি সরকারের নজরে আগে এলে প্রশাসনই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নিষেধ করে দিত।’’ এ দিকে, তৃণমূল সূত্রে খবর, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে দলের অন্দরে জলঘোলা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কাবেরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি একজন শিল্পী। তাই ভাতার জন্য আবেদন করেছিলাম।’’ তারপর সংযোজন: ‘‘সরকারি ভাতা খুবই অনিয়মিত ভাবে পাওয়া যায়। ছয় মাস, এক বছর অন্তর অন্তর হয়ত এক সঙ্গে সব টাকা চলে এল।’’
তৃণমূল সূত্রে এ-ও দাবি করা হয়েছে, ভাতা-বিতর্কে ইতি টানতে কাবেরীকে ‘সতর্কও’ করা হয়েছে। এ নিয়েও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কিছু বলেননি। তবে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা একই পদে থেকে সরকারের থেকে দুই ধরনের ভাতা তোলেন।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘আমি শিল্পীদের তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা দুটো পদে থেকেও সরকারি ভাতা তুলছেন। তাঁদের বিষয়টা কী হবে?’’ তাঁর এই মন্তব্যের লক্ষ্য কে বা কারা, তা স্পষ্ট করেননি কাবেরী। এমনটা হয়ে থাকলে কেন তিনি তা প্রশাসনের নজরে আনছেন না, তার উত্তরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে কখনই কারও বিরাগভাজন হতে চাই না।’’
কী বলছে শাসকদল?
তৃণমূল জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমায় বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ-ও জানান যে, নিয়ম না-জেনেই আবেদন করেছিলেন। আবেদন প্রত্যাহার করতে বলেছিলাম ওঁকে। সম্ভবত উনি তা করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy