চুঁচুড়ায় ভার্চুয়াল সভায় দিলীপ যাদব (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র
কর্মীদের কাছে ঐক্যের বার্তা পাঠাতে হুগলির সব দলীয় বিধায়ক-সাংসদদের এক মঞ্চে হাজির হয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শনিবার চুঁচুড়ায় সেই বৈঠক হল ঠিকই, তবে তাতে গরহাজির রইলেন সাংসদ-বিধায়ক-প্রাক্তন মন্ত্রী সমেত প্রথম সারির বেশ কয়েক জন জেলা নেতা। এতে, দলের অনৈক্যের ছবিটাই ফের একবার সামনে এল বলে মনে করছেন নেতৃত্বের একাংশ।
তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলা নেতৃত্বের একাংশের কার্যকলাপে বীতশ্রদ্ধ দলের শীর্ষনেতারা। তাঁদের নির্দেশেই শনিবার চুঁচুড়ায় বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব। সেখানে হাজির থাকার কথা ছিল দলের দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার এবং দলের সব বিধায়কদের। কিন্তু বৈঠকে আসেননি অপরূপা, উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এবং হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না। ঘটনাচক্রে, এই তিন জনই দলীয় সমীকরণে ‘দিলীপ-বিরোধী’ বলে পরিচিত। প্রবীর, বেচারাম ও অপরূপা আবার তৃণমূলের জেলা আহ্বায়ক।
ওই তিন জন ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন না কৃষি বিপণনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তও। তিনি অবশ্য জানান, ব্লকের একটি কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে যেতে পারেননি। তিনি অবশ্য দিলীপের সঙ্গেই রয়েছেন।
কী বলছেন দিলীপ? তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই পুরো কর্মসূচিটাই ঘোষণা করেছিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁরা দলের সাংগঠনিক ব্যাপার সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। এই বিষয়ে যা বলার, তা দলকেই জানাব।’’ জেলা সভাপতি পদে দিলীপের পুনর্নিয়োগে পর থেকেই বারবার দলে অনৈক্যের ছবি প্রকাশ্যে আসে। শুক্রবার নাম না-করে দিলীপ-গোষ্ঠীর নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন প্রবীর।
তাঁর অভিযোগ ছিল, বিধায়কদের এলাকায় কর্মসূচির কথা বিধায়কদেরই জানাচ্ছেন না জেলা নেতৃত্ব। তাঁর দাবি, এতে অনৈক্যের ছবিই ফুটে উঠছে। এ দিন সেই অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রবীরকে খোঁচা দিয়েছেন দিলীপ-গোষ্ঠীর কয়েকজন নেতা। তাঁদের এক জনের তীর্যক মন্তব্য, ‘‘এ দিনই বৈঠকে না এসে প্রবীরবাবু বুঝিয়ে দিলেন কাদের জন্য অনৈক্যের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। ঐক্য চাইলে তিনি বৈঠকে আসতেন।’’ বৈঠকে গরহাজির কেন? প্রবীরের দাবি , ‘‘চুঁচুড়ায় ওই বৈঠকে যাওয়ার জন্য গাড়ি ছিল না। আমি মোটর বাইকে কিছুটা যাওয়ার পরেই বৃষ্টি নামে। বৃষ্টিতে ভেজার সঙ্গে সঙ্গে জ্বর-জ্বর লাগতে শুরু করে। আমি ফিরে আসি। সেটা নেতৃত্বকে জানিয়েও দিই।’’ যদিও জেলা নেতাদের এক জনের দাবি, ‘‘প্রবীরবাবু নিজে ফোন করেননি। ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।’’
জেলার এক তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘বৈঠকে আসছেন না-দেখে বেচারামকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।’’ এ প্রসঙ্গে বেচারামের প্রতিক্রিয়া জানতে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটস্অ্যাপ-এরও জবাবও আসেনি। যোগাযোগ করা যায়নি অপরূপার সঙ্গেও। তবে তাঁর স্বামী সাকিব আলি বলেন, ‘‘ওঁর মা অসুস্থ। সন্ধ্যায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনা হয়। সেই কারণে অপরূপা থাকতে পারেননি।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, দিলীপ-বিরোধী সাংসদ-বিধায়কেরা নিজেদের মধ্যে একাধিক বার বৈঠক করেছেন। বেড়েছে ‘উপদলীয়’ কার্যকলাপ। সম্প্রতি খানাকুলে ত্রাণ বণ্টন করায় কল্যাণের সমালোচনাও করতে শোনা গিয়েছিল অপরূপা-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের। পাল্টা তোদ দেগেছিলেন কল্যাণও। পরপর যা ঘটে চলেছে, তাতে যারপরনাই ক্ষুব্ধ রাজ্য নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy