Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
self help group

‘ভুল বুঝিয়ে’ সভায়, ক্ষোভের মুখে তৃণমূল

সভায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ এসেছিলেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। তাঁদের বেশির ভাগই স্বনির্ভর গোঠীর সদস্যা। 

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যাকে ‘ধমকাচ্ছেন’ পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা (বাঁ দিকে)। ওই সদস্যাকেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যাকে ‘ধমকাচ্ছেন’ পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা (বাঁ দিকে)। ওই সদস্যাকেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৪০
Share: Save:

সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সভায় আনার অভিযোগ উঠল রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। এই কাজের সমালোচনা করায় এক মহিলাকে নিগ্রহের নালিশও উঠেছে। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে পান্ডুয়ায়। এ দিনের সভায় হাজির মহিলাদের একাংশের অভিযোগ, ভুল বুঝিয়ে তাঁদের সভায় নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। শাসক দলের পাল্টা দাবি, অভিযোগ মিথ্যা। বিজেপি এ সব করাচ্ছে।

এ দিন পান্ডুয়ার হারাধনচন্দ্র নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের মাঠে সভা ছিল তৃণমূলের। বিভিন্ন দল থেকে অনেক কর্মী এ দিন শাসক দলে যোগ দেন বলে তাদের দাবি। সভায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ এসেছিলেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। তাঁদের বেশির ভাগই স্বনির্ভর গোঠীর সদস্যা।

সভায় হাজির পপি মালাকার, হাসিনা বিবির মতো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বেশ কয়েক জন সদস্যার অভিযোগ, ‘‘স্বনির্ভর দলের মাধ্যমে রাখি তৈরি করি আমরা। আমাদের একটি সরকারি কার্ড দেওয়া হবে বলে এখানে ডাকা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ওই কার্ডের বিনিময়ে আমরা মাসে আট কেজি করে চাল আর কিছু সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাব।’’ পান্ডুয়ার থৈপাড়ার বাসিন্দা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কার্ড দেওয়ার জন্য আমাদের থেকে ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডের ফোটোকপি নেওয়া হয়েছিল। কিন্ত এখানে এসে দেখি, তৃণমূলের সভা হচ্ছে। কয়েক হাজার মহিলা এখানে এসে হতাশ হলাম।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এই কথা পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরাকে বললে তিনি আমার উপরে চড়াও হন। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।’’ পক্ষান্তরে চম্পার দাবি, ‘‘ওই মহিলাকে প্রথমেই বলা হয়েছিল, রাখি তৈরির কাজ বা অন্য কোনও সরকারি প্রকল্পের কার্ড এখানে দেওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র বিভিন্ন দল থেকে আসা কর্মী-সমর্থকদের তৃণমূলে যোগদান উপলক্ষ্যে সভা হবে। অনুষ্ঠানের শেষে ওই মহিলা ইচ্ছাকৃত ভাবে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছিলেন। ওঁকে চলে যেতে বলেছিলাম। মারধর এবং হেনস্থার কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’ থানায় কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখার পরে শ্রাবণীকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই মহিলা থানায় কারও বিরুদ্ধে লিখিত কোনও অভিযোগ করেননি বলে পুলিশের দাবি।

সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব, দলের পান্ডুয়া ব্লক সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়। অসিতের দাবি, ‘‘ভুল বুঝিয়ে বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাউকে সভায় আনা হয়নি। বিজেপির কিছু লোক বিশৃঙ্খলা করেছে।’’ সভার মূল বক্তা ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র। বিতর্কের খবর পৌঁছেছিল তাঁর কানেও। ওমপ্রকাশের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্য সরকারের যে সব সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প রয়েছে, তার অধীনে আসতে পারেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই সদস্যারা। সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশা সকলেরই থাকে। তবে কিছু পদ্ধতিগত বিষয় আছে। সেগুলি মেনেই তাঁরা যা পাওয়ার পাবেন।’’

সুযোগ পেয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের পান্ডুয়া মণ্ডলের নেতা অশোক দত্তের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল দু’দিন ধরেই ব্লকের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডের ফোটোকপি সংগ্রহ করেছে। সরকারি প্রকল্পের কার্ড দেওয়া হবে বলে এ দিনের সভায় তাঁদের ডাকা হয়েছিল। ওঁরা সভায় গিয়েছিলেন। কিন্তু কার্ড না-পেয়ে ফিরে এসেছেন। শুনেছি, এই কাজের প্রতিবাদ করে তৃণমূল নেতাদের হাতে মারও খেয়েছেন কয়েক জন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

self help group TMC Pandua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy