নিগৃহীতা সাঁতারুর বাড়িতে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
কোচের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে হুগলির রিষড়ার এক সাঁতারু। এ বার তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ‘প্রতিযোগিতা’ শুরু হল রাজ্যের শাসক এবং প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে।
রবিবার দুপুরে মেয়েটির বাড়িতে যান হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তার খানিক আগেই সেখানে ঘুরে যান হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব। বিজেপির অভিযোগ, লকেটের কর্মসূচি জেনেই দিলীপবাবুরা তড়িঘড়ি এখানে আসেন। তৃণমূল তা মানেনি। দুই নেতা-নেত্রীই সপার্ষদ গিয়েছিলেন।
দিলীপবাবুর সঙ্গে ছিলেন রিষড়ার পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র-সহ অন্যরা। দিলীপবাবু জানান, ফোনে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্যাতিতাকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দেন। রাজ্য বিদ্যালয় ক্রীড়া পর্ষদের সচিব দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘মেয়েটিকে চিনতাম। স্কুল সাঁতারে আমার সই করা শংসাপত্র রয়েছে ওর বাড়িতে। ওর পাশে আমরা আছি।’’
তাঁরা বাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই লকেট ঢোকেন। সঙ্গে ছিলেন দলের নেতা শ্যামল বসু, ভাস্কর ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই। রিষড়া থানা প্রাথমিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়নি বলে মেয়েটির বাড়ির লোকেরা অভিযোগ করেন। মেয়েটি ভাল জায়গায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার আর্জি জানায় লকেটের কাছে। লকেট তাকে বলেন, সে যাবতীয় প্রয়োজনের কথা লিখিত ভাবে জানালে তিনি কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরণ রিজিজুকে জানাবেন। শ্যামলবাবু জানান, তিনি শ্রীরামপুরের একটি সাঁতার ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারেন।
সংবাদমাধ্যমকে লকেট বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। তারপরও মেয়েটির উপর এমন আচরণের জন্য কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি সঙ্গে সঙ্গে। স্থানীয় থানা দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে মেয়েটির পরিবারকেই হয়রান করেছে।’’ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় তিনি গোয়া ও কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীকে বাহবা জানান।
তৃণমূল নেতাদের আসা প্রসঙ্গে তাঁর খোঁচা, ‘‘এত দিন কেন আসেননি? আমি আসব শুনে রাজনীতি করতে এসেছেন।’’ দিলীপবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘আমরা আপদে-বিপদে মানুষের পাশে থাকি। তাই গিয়েছিলাম। উনি আসবেন শুনে যাব, এমন দুর্দিন আসেনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ঘটনাটা ঘটেছে গোয়ায়। ওখানকার প্রশাসনই তো ব্যবস্থা নেবে। ফলাও করে বলার কি আছে? এটা রাজনীতি নয়?’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কিশোরী বালির সাঁতার প্রশিক্ষক সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে অনুশীলন করত। কিছু দিন আগে সুরজিৎ গোয়ায় চলে যান। ছ’মাস আগে মেয়েটিও তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিতে সেখানে চলে যায়। সেখানে কোচ যৌন হেনস্থা করতেন বলে তার অভিযোগ।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের দাবি, প্রথমে মেয়েটির পরিবারের লোকেরা লিখিত অভিযোগ করতে চাননি। পরের দিন পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে যায়। তার পরেই লিখিত অভিযোগ করা হয়। ইতিমধ্যে গোয়া পুলিশ রিষড়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ই’মেল করে মেয়েটির পরিবারের দায়ের করা অভিযোগ গোয়া পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয় রিষড়া থানা। তার ভিত্তিতে সেখানে মামলা রুজু হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy