অনিয়ম: কাঠের জ্বালে রান্না। —নিজস্ব চিত্র।
গ্যাস সিলিন্ডার চুরি হয়েছিল বছর তিন আগে। তারপর থেকে সিলিন্ডার আসেনি। রান্না হচ্ছে কাঠের জ্বালানিতে। ধোঁয়ার চোটে নাজেহাল হয়ে স্কুলের শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা প্রায়ই প্রধান শিক্ষক সমীর কুমার পাল এবং স্কুল পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। অথচ খানাকুল কৃষ্ণনগর জ্ঞানদা ইনস্টিটিউশনের ছবিটা বদলানো যাচ্ছে না কিছুতেই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন দফতরের সুপারিশে ২০১৫ সালের ৩১ অগস্টের মধ্যে হুগলি জেলার সমস্ত মিড ডে প্রকল্পের রান্নার জন্য গ্যাসের ব্যাবহার ১০০ শতাংশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলাশাসক। স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্প সার্বিক রূপায়িত করতেই মিড ডে মিল প্রকল্পটিকেও দূষণ এড়িয়ে স্বাস্থ্যসম্মত করতে কাঠ বা কয়লার জ্বালানি ব্যবহার নিষেধ হয়। একইসঙ্গে বলা হয়, এটি ধূমহীন, নিরাপদ, কয়লা বা অন্যান্য জ্বালানির চেয়ে খরচ কম হবে। এবং সর্বোপরি রান্না করতে সময় অনেক কম লাগবে। মিড ডে মিল প্রকল্পের অধীন প্রতিটি কেন্দ্র সরকারি ভর্তুকিতে বছরে ৯টি করে সিলিন্ডার পেয়ে থাকে স্কুলগুলি।
এই স্কুলের স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না ঘরের তালা ভেঙে গ্যাস সিলিন্ডার এবং ওভেন চুরি হয় হয় গত ২০১৭ সালের অগস্ট মাসের গোড়ায়। থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। জানানো হয় বিডিওকেও। স্কুলের সহ শিক্ষকদের অভিযোগ, “অনেক স্কুলেরই সিলিন্ডার চুরি হয়। সেটার জন্য কি সব স্কুলে কাঠে রান্না করা হয়? তাছাড়া দূষণ ঠেকাতে মিড ডে মিল গ্যাসে রান্না বাধ্যতামূলক হয়েছে। তারপরও প্রধান শিক্ষক সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করে কাঠের জ্বালানিতেই রান্না বহাল রেখেছেন।”
শিক্ষকদের আরও অভিযোগ, “কাঠ জ্বালিয়ে প্রতিদিন রান্নায় সকাল ১১টা থেকে ঘন্টা খানেক ধোঁয়ায় স্কুলে টেঁকা যায়না। ক্লাসে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।”
খুদে পড়ুয়াদেরও অভিযোগ, ‘‘ধোঁয়ার চোটে পড়াশোনা হয় না। আমরা তো চোখ বন্ধ করে বসে থাকি।’’ অভিভাবকদের মধ্যে স্থানীয় বিমল রায়, জামালউদ্দিন মল্লিক প্রমুখদের অভিযোগ, “ছেলে-মেয়েদের স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে কাঠে রান্না নিয়ে আমাদের তরফে একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। কিন্তু কিছু কাজ হয়নি। আমাদের সন্দেহ গ্যাস সিলিন্ডারে কারচুপির কোনও উপায় নেই দেখেই এই কাঠের ব্যবস্থা। ১ কুইন্ট্যাল কাঠ কিনে ১২ কুইন্ট্যাল দেখানো খুব সহজ।”
কারচুপির কথা অস্বীকার করে স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি আশিস মান্না বলেন, “আমার একার উদ্যোগে গ্যাসের ব্যবস্থা করা যাবে না। এ নিয়ে বহুবার প্রধান শিক্ষককে বলেও কাজ হয়নি। বিষযটা মৌখিকভাবে প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানিয়েছি। লিখিতভাবেও জানাব।”
বিষয়গুলি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তাঁর দু’টি ফোনই বন্ধ ছিল।
মিড ডে মিলে কাঠের জ্বালানি ব্যবহার নিয়ে জেলা মিড ডে মিল ওসি মৌমিতা সাহা বলেন, “খানাকুল-১ বিডিওকে বিষয়টা দেখতে বলছি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে”। খানাকুল-১-এর বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “স্কুলের মিড ডে মিলে রান্নার ক্ষেত্রে গ্যাসের ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কাঠে কেন রান্না হচ্ছে তা দেখা হবে।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy