অসচেতন: চলছে ফুটবল ম্যাচ। জমায়েত বহু দর্শক। —নিজস্ব চিত্র
করোনা ছড়াচ্ছে তো কী হয়েছে! তার জন্য খাসির মাংস ছাড়া যায় নাকি! চ্যাম্পিয়ন পাবে ২০ কিলো ওজনের খাসি। আর রানার্স-আপ পাবে ১৫ কেজি ওজনের। এই ছিল ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরস্কার। যার লোভে প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিল জেলার বিভিন্ন জায়গার ষোলোটি দল। দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে খেললেন শতাধিক যুবক। দেখলেন কয়েকশো দর্শক। স্থান— পান্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের পোঁটবা গ্রাম।
মঙ্গলবার ওই গ্রামে পোঁটবা রায়পুকুর আদিবাসী সাগেন রাকাব গাঁওতার পরিচালনায় এক দিনের ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়। খেলা শুরু হয় বেলা ১২টা নাগাদ। সকাল ৮টা থেকে পোঁটবা ফুটবল মাঠে মাইকে ঘোষণা শুরু হয়, প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন দলকে ২০ কিলো এবং রানার্স আপ-কে ১৫ কিলো ওজনের খাসি পুরস্কার দেওয়া হবে। পোঁটবা, গ্রামগোহাল, পাটরা, সিমলাগড়-সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ভিড় করেন মাঠের চৌহদ্দিতে।
ক্লাবের সদস্য সমর মান্ডি বলেন, ‘‘চন্দননগর, খন্যান, গজিনাদাসপুর, পান্ডুয়ার মতো বিভিন্ন ব্লক থেকে ষোলোটি দল এ দিন ফুটবল প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। এন্ট্রি ফি ছিল ১০০০ টাকা। খেলা শুরু হয় বেলা বারোটা থেকে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।’’
করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসন বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে। মাস্ক পরে বেরনো এবং দূরত্ব-বিধি মানার কথা বারবার বলা হচ্ছে। বহু লোকের সমাগম হয়, এমন কোনও অনুষ্ঠান বা প্রতিযোগিতার অনুমতিও প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও কী করে ফুটবল প্রতিযোগিতা হল, আর কেনই বা প্রশাসন তা বন্ধ করল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন খেলা দেখতে আসা দর্শকদের বেশির ভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। আর দূরত্ব-বিধি মানতেও দেখা যায়নি কাউকে। ওই গ্রামের প্রবীণ এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সরকারি বিধি মানা হয়নি। কারও মুখেই মাক্স ছিল না। তবে ফি বছর প্রতিযোগিতাটি হয়ে আসছে বলে কেউ কোনও আপত্তি করিনি। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আশপাশের অনেক গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ খেলা দেখতে আসেন।’’
করোনা পরিস্থিতিতে ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর না-বসানোই কি ভাল ছিল না?
সমর বলেন, ‘‘চার বছর ধরে এই খেলার আয়োজন করে আসছি। প্রত্যেক বছরই আমরা খাসি পুরস্কার দিই।’’ প্রশাসনের অনুমতি কি নেওয়া হয়েছিল? সমরের উত্তর, ‘‘কোনও বছরই তা নেওয়া হয় না।’’
কী বলছে প্রশাসন?
পান্ডুয়া ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা-আবহে কোনও প্রতিযোগিতার অনুমতি দেওয়া
হচ্ছে না। এ দিনও খেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবুও আমরা বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy