উদ্যোগ: পরিবেশবান্ধব টি-শার্টের উদ্বোধন উত্তরপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
শহর হোক বা গ্রাম— সর্বত্রই প্লাস্টিক একটি জ্বলন্ত সমস্যা। অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহারে প্রায় প্রতিটি পুর-এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত ধ্বংস হচ্ছে। জল জমা নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে মাটির মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্যে। এই আবহে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা প্লাস্টিক দিয়ে টি-শার্ট বানানোর কাজ শুরু করেছে।
এর আগে দেশের কিছু জায়গায় বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরির নজির রয়েছে। এ বার টি-শার্ট বানানোর উদ্যোগ পরিবেশ রক্ষায় অনেকটাই রাস্তা দেখাবে বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তরপাড়া পুর কর্তৃপক্ষ এলাকার প্লাস্টিক ওই সংস্থাকে দিয়ে যন্ত্রণার হাত থেকে নিস্তার পেতে চাইছেন।
হুগলির এই শহরে পুরসভার তরফে হাটে-বাজারে প্রচার চালিয়েও প্লাস্টিকের রমরমা বন্ধ করা যায়নি। দৈনিক যে আবর্জনা তৈরি হয়, তার বড় অংশই প্লাস্টিক। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছিল পুর-কর্তৃপক্ষের। এ বার সেই চিন্তা অনেকটা দূর হচ্ছে ওই বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে। সংস্থার কর্তারা জানান, প্লাস্টিক পুনর্ব্যহার করে টি-শার্ট তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়া শহর থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে তা দিয়ে টি-শার্ট তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি ওই টি-শার্ট পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কঠিন বর্জ্য প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে উত্তরপাড়া পুরসভা রাজ্য তথা দেশ, এমনকি বিদেশেও প্রশংসিত হয়েছে। পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু প্লাস্টিক নিয়ে আমাদের চিন্তা বাড়ছিল প্রতিদিন। বাড়ি থেকে যে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়, তার মধ্যে বোতল, ক্যারিব্যাগ-সহ প্লাস্টিকজাত নানা জিনিস প্রচুর থাকে। ওই সংস্থা অর্থের বিনিময়েই আমাদের থেকে প্লাস্টিকের বর্জ্য নেবে। যে প্লাস্টিক ফেলতে খরচ হচ্ছিল, এখন তা দিয়ে পুরসভা অর্থ উপার্জন করবে। শহরও দূষণমুক্ত হবে।’’
ওই বেসরকারি সংস্থার চিফ অপারেটিং অফিসার নবীন আগরওয়াল বলেন, ‘‘পচনশীল আর অপচনশীল বর্জ্য পুরসভার দেওয়া আলাদা পাত্রে সংগ্রহ করতে হবে। ভিজে আর শুকনো বর্জ্য আলাদা করে রাখলে তার কিন্তু ভাল দাম পাওয়া যায়। সেটা বোঝাতে বাড়ি বাড়ি প্রচার করা হবে।’’ তাঁর দাবি, প্লাস্টিকজাত জিনিস দিয়ে তৈরি হলেও এই টি-শার্ট চামড়ার পক্ষে আদপেই ক্ষতিকারক নয়। পরীক্ষায় তা প্রমাণিত হয়েছে।
ওই শহরে প্রতিদিন সংগৃহীত সব প্লাস্টিকই ওই সংস্থা নিয়ে নেবে বলে তাঁরা পুর-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। বোতল ‘রি-সাইকেল’ করে টি-শার্ট তৈরি করা হবে। দুধ, চিপসের প্যাকেটের মতো প্লাস্টিক চলে যাবে সিমেন্ট তৈরির কারখানায়। এই ব্যবস্থা আপাতত প্লাস্টিক থেকে মুক্তির বড় উপায় বলে পুরসভার কর্তাদের বক্তব্য। এই উদ্যোগ গতি পেলে বড় এলাকা জুড়ে প্লাস্টিকের ব্যবহারকে বাগে আনা যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy