Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
jammu and kashmir

শীত পড়লেও সে ভাবে দেখা নেই পরিযায়ী কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের

এ বার শীত পড়তে শুরু করলেও রাজ্যে সে ভাবে দেখা নেই কাশ্মীরি শালওয়ালাদের। করোনা আবহে মন্দা দেখা দিয়েছে তাঁদের ব্যবসাতেও।

কাশ্মীরি শালবিক্রেতারা কাঁধে কিংবা সাইকেলে পশরা নিয়ে ঘোরেন দরজায় দরজায়। নিজস্ব চিত্র।

কাশ্মীরি শালবিক্রেতারা কাঁধে কিংবা সাইকেলে পশরা নিয়ে ঘোরেন দরজায় দরজায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:৪০
Share: Save:

ওঁরা শীতের অতিথি। প্রতি বছর শীত পড়তেই সুদূর কাশ্মীর থেকে ভিড় জমান এ রাজ্যে। কাঁধে কিংবা সাইকেলে পশরা নিয়ে ঘোরেন দরজায় দরজায়। কিন্তু এ বার শীত পড়তে শুরু করলেও রাজ্যে সে ভাবে দেখা নেই কাশ্মীরি শালওয়ালাদের। করোনা আবহে মন্দা দেখা দিয়েছে তাঁদের ব্যবসাতেও। তবে যে ক’জন এখনও পর্যন্ত শহরে এসেছেন, তাঁরা নতুন উদ্যোগে শুরু করেছেন ব্যবসা।

কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নভেম্বরের শুরুতেই এই কাশ্মীরি শালওয়ালারা রকমারি নকশার শাল, চাদর, বেডকভার, সোয়েটার, টুপি, মাফলার এবং বাচ্চাদের শীতের পোশাক নিয়ে হাজির হন। সাধারণত কাশ্মীরের বড় বড় মহাজনদের কাছ থেকে ধার করে পণ্য কিনে আনেন তাঁরা। বাংলায় শীতের মরশুম ছাপিয়ে ৩ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত চলে বিক্রিবাটা।

তাঁদের একাংশের এখানে নিজেদের দোকান থাকলেও অনেক কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাই সাইকেলে বাড়ি বাড়ি মাল বিক্রি করেন। তাঁদের মধ্যে জান মহম্মদ নামে এক বিক্রেতা জানালেন, তিন মাসের ধারে তাঁরা শাল বিক্রি করেন। কাশ্মীরি সূচিশিল্পীদের তৈরি বাহারি নকশার শালের এখানে প্রচুর চাহিদা।

আরও পড়ুন: ১২৫ কিমি উজিয়ে এসে মুমূর্ষুকে রক্তদান যুবকের

অন্যান্য বছর সাধারাণত পয়লা বৈশাখ অবধি চলে কারবার। তার পর তাঁরা ফিরে যান উপত্যকায় নিজেদের বাড়িতে। কিন্তু এ বছর মার্চ মাসে লকডাউন চালু হওয়ায় বিপদে পড়েন এই কাশ্মীরি শাল ব্যবসায়ীরা। তাঁরা আটকে পড়েন কলকাতায়। করোনার কারণে অনেকেই বাড়িতে এই শালওয়ালাদের ঢোকার অনুমতিও দেননি।

আরও পড়ুন: খানাকুলে দোকানে হামলা, মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল

অপর্ণা কোলে নামে মধ্য হাওড়ার এক গৃহবধূ জানালেন, ‘‘প্রতি বছরই কিছু না কিছু শীতের পোশাক কিনি কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের থেকে। সুবিধা হল, একবারে টাকা দিতে হয় না। মাসে মাসে বিনা সুদে টাকা দেওয়া যায়। তবে এ বার করোনার জন্য পরিচিত শালওয়ালাদের দেখা মেলেনি এখনও।’’

আচমকা লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় অনেক শালওয়ালাই তাঁর মতো ক্রেতাদের কাছ থেকে পুরো টাকা কিস্তিতে নিতে পারেননি বলে দাবি মহম্মদ হাসান নামে এক বিক্রেতার। ফলে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে ৩ হাজারের মতো কাশ্মীরি শুধু হাওড়ায় আসেন। গোটা রাজ্যে সংখ্যাটা প্রায় ২০ হাজার।

এ বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ শুরু হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র কুড়ি শতাংশ ব্যবসায়ী এখানে এসে পৌঁছেছেন। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবার কাশ্মীরেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনেকে লকডাউন পরবর্তী সময়ে কোনও মতে নিজের বাড়িতে ফিরে আবার লম্বা সময়ের জন্য বাংলায় পাড়ি দিতে চাননি। ফলে আশঙ্কা, পছন্দসই শাল নাও পেতে পারেন রাজ্যবাসী।

তবে সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে যে কয়েকজন শাল বিক্রেতা এসে পৌঁছেছেন, ভাল ব্যবসার লক্ষ্যে বুক বাঁধছেন তাঁরা। তাঁদের আশা, শীতবিলাসী বঙ্গবাসী এ বারেও তাঁদের বিমু্খ করবেন না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy