চমক: এই আলোর কাজেই মুগ্ধ সচিন। নিজস্ব চিত্র।
কখনও টেমস নদীর পাড় সেজে উঠেছে গঙ্গাপাড়ের এই শহরের তৈরি আলোয়। কখনও ‘বিগ-বি’ অমিতাভ বচ্চনের বাংলোয় শোভা বাড়িয়েছে। জেলা, রাজ্যের গণ্ডী ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে সমাদৃত হয়েছে এখানকার আলোকসজ্জা। এ বার চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রার আলোকসজ্জায় মুগ্ধ হলেন ক্রিকেটের ‘ঈশ্বর’ সচিন তেন্ডুলকর। তাঁর টুইট এখন ছড়িয়ে পড়ছে মোবাইল থেকে মোবাইলে। যা নিয়ে বিসর্জনের মন খারাপ কাটিয়ে খুশিতে ভাসছেন চন্দননগরের মানুষ।
শুক্রবার বিকেলে সচিন একটি টুইট করেন। তাতে রয়েছে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার একটি আলোকসজ্জার ভিডিয়ো। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযান। ঘুরছে আলোর তৈরি বায়ুসেনার বিমান। প্যারাসুট নামছে। ভিডিয়োটির সঙ্গে সেনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ক্রিকেটের ‘লিটল মাস্টার’ লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রায় এই বিস্ময়কর (ওয়ান্ডারফুল) ভিডিয়োটি দেখলাম’।
ওই আলোকসজ্জাটি ছিল বিবিরহাট চড়কতলা সর্বজনীনের। ওই পুজোর এ বার ছিল ৫২ তম বর্ষ। তাদের ভাসানের আলোকসজ্জার থিম ছিল ‘ভারতীয় সেনা’। দু’টি ট্রাকে ওই আলোকসজ্জা ফুটিয়ে তোলেন চড়কডাঙা নুরিয়াপাড়ার আলোকশিল্পী লাল্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো কমিটির সম্পাদক সৌমেন দে বলেন, ‘‘একেবারে সচিন তেন্ডুলকরের প্রশংসা! আমরা ভাবতে পারছি না। দুর্দান্ত অনুভূতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা করতে পারলাম। ফেসবুকে সচিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করতে পারলে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠাব।’’
প্রায় দেড় যুগ বিভিন্ন আলো-কারখানায় কারিগরের কাজ করেছেন লাল্টু। সেই অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে নিজে ব্যবসা শুরু করেন ১১ বছর আগে। তিনি জানান, এলইডি আলোয় বায়ুসেনার ওই আলোকসজ্জা করেছেন। তাঁর গলায় উচ্ছ্বাস, ‘‘সচিন আমার ফেভারিট ক্রিকেটার। ওঁর মতো এক জনের টুইটে আমার আলোর ছবি! ভাবতে পারছি না। রোমাঞ্চ লাগছে। ক্রিকেটার এবং মানুষ হিসেবে ওঁর অবস্থানটাই যে আলাদা জায়গায়।’’
লাল্টুর ধারণা, সচিনের এ হেন বার্তা সার্বিক ভাবে চন্দননগরের আলোক-শিল্পকে আরও অনেকটা এগিয়ে দেবে। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘আমাদের শহরের আলো নিয়ে ক্রিকেটের ভগবানের টুইট। গর্ব হচ্ছে।’’ খুশিতে ভাসছে চন্দননগরের ক্রীড়া মহলও। উদীয়মান ক্রিকেটার, চন্দননগরের বাসিন্দা ঈশান পোড়েল বলেন, ‘‘অত বড় এক জন মানুষের এমন স্বীকৃতি, চন্দননগরবাসী হিসেবে ভাল লাগছে। প্রচুর মানুষ বার্তা শেয়ার করছেন।’’
সম্বৎসর চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা ব্যস্ত থাকেন আলোর মাধ্যমে নানা বিষয় ফুটিয়ে তুলতে। কখনও তা কল্পনাকে আশ্রয় করে। কখনও তাতে থাকে বাস্তব ঘটনার প্রতিফলন। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় আলোর সাজ একে অপরকে টেক্কা দেয়। সেই আলোকসজ্জা দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ আসেন এই শহরে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। আর তা দেখেই সচিনের টুইট চন্দননগরের আলোকসজ্জার ঐতিহ্যের মুকুটে যেন নতুন পালক জুড়ল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy