ডাকাতির পরে ঘরের অবস্থা। ছবি: সুব্রত জানা।
মধ্যরাতে গৃহস্থের বাড়িতে হানা দিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না লুট করল এক দল ডাকাত। প্রতিরোধ করায় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন দুই মহিলা-সহ তিন জন। মঙ্গলবার রাতে শ্যামপুরের নবগ্রামে ঘটনাটি ঘটে। তদন্ত শুরু হলেও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের নাগাল পায়নি পুলিশ। এলাকার সিসি ক্যামোরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নবগ্রামের ওই বাড়ির কর্তা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কালীপদ দত্ত বলেন, ‘‘ঘড়িতে তখন রাত দুটো। ছাদের দরজা ভেঙে তিন জন দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢোকে। তাদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। ছুরি দেখিয়ে আলমারির চাবি চায়। ভয়ে চাবি দিয়ে দিই।’’ ওই সময় পাশের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন কালীপদবাবুর মেয়ে সুমনা দত্ত ও তাঁর স্ত্রী। শব্দ শুনে তাঁরাও উঠে পড়েন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের ঘরে ঢুকে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে জিনিসপত্র তছনছ করে। সুমনা বলেন, ‘‘পাশের ঘরে বাবা একা শুয়েছিলেন। আমি আর মা অন্য একটি ঘরে শুয়েছিলাম। বাবার ঘরে আওয়াজ হচ্ছে শুনে দরজা খুলি। তখনই দু’জন আমাদের মুখ চেপে ধরে। চিৎকার করতেই ওরা আমাকে চড় মারে। তারপর আলমারির চাবি চায়। ভয়ে চাবি দিয়ে দিই।’’ সুমনার দাবি, দুষ্কৃতীরা আলমারি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও সোনার গহনা লুট করে। তাঁর মায়ের গলা থেকে হার, কানের দুল ও চুড়ি ছিনিয়ে নেয়। তারপর বাড়িতে থাকা চারটি মোবাইল ফোন নিয়ে চম্পট দেয়। যাওয়ার সময় বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় তারা।
ভোর হতেই তাঁরা চিৎকার শুরু করেন। প্রতিবেশীরা হাজির হন কালীপদবাবুর বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দা সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকায় এই ধরনের ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ঘটেনি। আমরা আতঙ্কে ভুগছি।’’ ৮২ বছরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অজিতকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই গ্রামে বড় হয়েছি। ছোটখাট চুরির ঘটনা ঘটলেও আগে ডাকাতি কোনও দিন হয়নি। এখন পাড়ায় থাকতে ভয় করছে। প্রশাসনের উচিত টহলদারি বাড়ানো।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আশেপাশের এলাকার সমস্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে।’’
হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় চুরি-ছিনতাই বেড়ে চলেছে বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে উলুবেড়িয়া গরুহাটার কাছে জানালার গ্রিল ভেঙে এক ওষুধ ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে হানা দিয়ে লক্ষাধিক টাকা চুরি করে দুষ্কৃতীরা। দিন দশেক আগে উলুবেড়িয়া ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এক ব্যবসায়ীর থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ছিনতাই করে এক দল দুষ্কৃতী। সপ্তাহ খানেক আগে সাঁকরাইলের ধূলাগড়ে এক ব্যক্তির থেকে টাকা ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা। বাধা দেওয়ায় তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। পুলিশ কোনও ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি।
জেলা পুলিশের ওই কর্তার দাবি, ‘‘সবক’টি ঘটনার তদন্ত চলছে। টহলদারি প্রতিদিন চলে। এ বার তা আরও বাড়ানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy