উলুবেড়িয়ার করাতবেড়িয়ায় ভেজা ধান কাটছেন এক চাষি। ছবি: সুব্রত জানা
আমন ধান পেকে গিয়েছে। কোথাও জমি থেকে তা কটার অপেক্ষা। কোথাও আবার কাটার পর এখনও জমি থেকে ধান সরানো হয়নি। এই অবস্থায় শীতের মুখে শনিবার ভোরের আচমকা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়লেন দুই জেলার ধানচাষিরা। অনেক জমিতে জল জমে যাওয়ায় পেকে যাওয়া ধানের শিস নিয়ে গাছগুলি লুটিয়ে পড়েছে। ডুবেছে কাটা ধানও।
এ দিন ভোর তিনটে নাগাদ মুষলধারে বৃষ্টি হয়। চলে প্রায় এক ঘণ্টা। বেলার দিকে আর বৃষ্টি না হলেও আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। ফলে, জমি শুকোয়নি। হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, জয়পুর, উলুবেড়িয়া প্রভৃতি নিচু এলাকাগুলিতে সমস্যা হয় বেশি। বহু চাষি ধান কেটে জমিতে ফেলে রেখেছিলেন। জমিতে জল জমে যাওয়ায় সেই সব ধান ভিজে যায়।
চাষিদের আশঙ্কা, ধান পুরোপুরি নষ্ট না হলেও গুণমান অনেকটা কমবে। একই আশঙ্কা ডুবে যাওয়া ধানগাছগুলি নিয়েও। জয়পুরের অমরাগড়ির চাষি সৌরভ রায় বলেন, ‘‘আমি আট বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। ফলন বেশ ভাল হয়েছে। কিন্তু শেষবেলায় বৃষ্টি এসে সব গোলমাল করে দিল। কিছু ধান কাটা হয়েছে। সেগুলি জমিতেই পড়ে আছে। বাকি ধানগাছগুলিও লুটিয়ে পড়েছে। জমিতে জল জমে আছে। রোদও ওঠেনি। ধানের ক্ষতি হয়ে যাবে।’’
জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানান, এ বারে জেলায় মোট ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। বৃষ্টির জন্য নিচু এলাকাগুলিতে ধানের কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা আছে। কতটা কী ক্ষতি হল, তার হিসাব করা হচ্ছে। আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘এলাকা ঘুরে দেখেছি। জমিগুলি ডুবে গিয়েছে।’’ জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমেশ পাল বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকা থেকে জমিতে জল জমে ধান ডুবে যাওয়ার খবর আসছে।’’
হুগলিতে অবশ্য পান্ডুয়া, বলাগড়-সহ কিছু এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। আরামবাগে বৃষ্টি হলেও প্রকোপ কম ছিল। অন্যদিকে হরিপাল, ধনেখালি, সিঙ্গুর প্রভৃতি জায়গায় ভালই বৃষ্টি হয়েছে। ফলে, এইসব এলাকার আমন চাষিরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। ধনেখালির কানা নদী এলাকার চাষি কাশীনাথ পাত্র বলেন, ‘‘আচমকা বৃষ্টিতে ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। রোদ না ওঠায় সমস্যা আরও বাড়ল। ধান পুরোপুরি নষ্ট না হলেও গুণমান বেশ নষ্ট হবে। এই ধান বিক্রি করে আমরা আলু চাষ করার সার-বীজ কিনি। ধানের গুণমান নষ্ট হলে বেশি দাম পাব না। আলু চাষ করতে সমস্যা হবে।’’ ধানের কল বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মালিয়া এলাকার চাষি কালী বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন ভোরে বৃষ্টি হয়েছে ০.৩৪ মিলিমিটার। জেলায় এ বারে আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৮৩ হজার হেক্টর জমিতে। বৃষ্টিতে এলাকাবিশেষে ধান চাষে কিছুটা সমস্যা হলেও সামগ্রিক ভাবে ক্ষতির আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তবে ফের বৃষ্টি হলে যে বড় ক্ষতি হতে পারে, তা স্বীকার করেছেন জেলা কৃষি আধিকারিকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy