আরামবাগ স্টেশনেও দেখা গেল যাত্রীদের উঁকিঝুঁকি। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ ও সঞ্জীব ঘোষ
সাড়ে সাত মাস বন্ধ থাকার পরে আজ, বুধবার থেকে বঙ্গে চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন। গ্যাঁটের বাড়তি কড়ি ফেলে যাঁদের কর্মস্থলে যেতে হচ্ছিল, তাঁরা খুশি। তবে, করোনা আবহে বিশেষত অফিস-টাইমে ভিড় সামাল দেওয়া রেল এবং পুলিশ-প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সুরক্ষাবিধি কতটা মানা হয়, তার উপরে করোনা রেখচিত্রের বাড়া-কমা নির্ভর করছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
এই পরিস্থিতিতে হাওড়া গ্রামীণ এবং হুগলি জেলার স্টেশনগুলিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে রেলের সূত্রের দাবি। বিভিন্ন স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম, টিকিট কাউন্টারের সামনে গোল দাগ কাটা হয়েছে। নির্দিষ্ট একটি রাস্তা দিয়ে ঢোকা-বেরনোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর ডিভিশনের অন্যতম জনবহুল স্টেশন বাগনান। হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরের বহু যাত্রী এখান থেকে ট্রেন ধরেন। মঙ্গলবার এই স্টেশনে দেখা গেল, স্টেশনে ঢোকা-বেরনোর রাস্তা আলাদা করা হয়েছে। টিকিট কাউন্টার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে হবে। সেখানেও সবাই যাতে গাদাগাদি করে ঢুকতে না পারেন, সে জন্য ফিতে দিয়ে কিছুটা অংশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। টিকিট কাউন্টারের সামনে গোল দাগ কাটা। টিকিট কাটার সময়ে শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কিনা, আরপিএফ, জিআরপি এবং রাজ্য পুলিশ তা দেখবে। মঙ্গলবার তারা স্টেশন চত্বর পরিদর্শন করে। ট্রেনে ওঠানামার সময়ে ভিড় যাতে না হয়, রেল পুলিশ তা-ও দেখবে। স্টেশন চত্বর স্যানিটাইজ় করা হবে। ট্রেন থেকে নেমে ওভারব্রিজ দিয়ে বেরোতে হবে।
রেল সূত্রের খবর, মাস্ক না পরলে টিকিট দেওয়া হবে না। মাস্ক পরা-সহ অন্য সুরক্ষা বিধি নিয়ে মাইকে ঘোষণা করা হবে। হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের অন্যান্য স্টেশনেও একই ব্যবস্থা করা হয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে আবেদন করা হয়েছে।
হুগলিতে স্টেশনে ভিড় সামলাতে জিআরপি, আরপিএফের পাশাপাশি গ্রামীণ জেলা বা চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ থাকবে। চন্দননগরের সিপি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় ১৫টি স্টেশন। জিআরপি এবং আরপিএফের আওতার বাইরে স্টেশন চত্বরে আমাদের কর্মীরা থাকবেন।’’ মাসিক, ত্রৈমাসিক টিকিট কাটতে মঙ্গলবার বিভিন্ন স্টেশনে লাইন পড়ে। স্টেশন চত্বর স্যানিটাইজ় করা হয়।
পুলিশের একাংশের বক্তব্য, বাড়তি ভিড় হলে সাবধানতা অবলম্বনের কারণে স্টেশনে ঢুকতে দেরি বা পরের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে। তাতে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলে, তা কী ভাবে সামলানো যাবে, পুলিশকে তা ভাবাচ্ছে। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, এমন পরিস্থিতি হলে দ্রুত সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে। পূর্ব রেল সূত্রের দাবি, হাওড়া-ব্যান্ডেল, তারকেশ্বর, বর্ধমান কর্ড প্রভৃতি শাখায় স্বাভাবিক সময়ে যে সংখ্যায় ট্রেন চলত, আজ দিনের ব্যস্ত সময়ে তার ৮৪% চলবে। যাত্রীদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
পান্ডুয়ার বাসিন্দা অভিজিৎ নন্দী কলকাতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাসে অফিস যেতে হচ্ছিল। তাতে অনেক খরচ। সময়ও বেশি লাগে। ট্রেন চলায় টাকা-সময় দুইই বাঁচবে। তবে সচেতন থাকতে হবে। মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার নিতে ভুললে চলবে না।’’ এই বক্তব্য অনেকেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy