বৃক্ষচ্ছেদ: এই দুই বটগাছ কাটা নিয়ে বিতর্ক। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
কাছাকাছি জনবসতি নেই। পুরশুড়ার ভাঙামোড়া পঞ্চায়েত এলাকার সাহাপুর মৌজায় দামোদর নদের বাঁধের গায়ে দু’টি প্রাচীন বট দীর্ঘদিন মেহনতি মানুষকে ছায়া দিয়েছে। বহু পাখির আশ্রয়স্থল ছিল দুই গাছের ডালপালা। কিন্তু আচমকা কোপ পড়েছে দুই বটেই। কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে, দুই গাছের গুঁড়িটুকু রেখে বাকি অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা। এর পিছনে শাসকদলের ইন্ধনের অভিযোগও তুলছেন তাঁরা। বিহিত চেয়ে ‘চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমি’র দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
অ্যাকাডেমির সভাপতি তথা পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যয় গত ৩ ফেব্রয়ারি লিখিত ভাবে জেলাশাসকের কাছে কাটা দু’টি গাছের ছবি-সহ অভিযোগ জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। বিশ্বজিৎবাবুর ক্ষোভ, ‘‘একদিকে ‘সবুজমালা’ প্রকল্প চালু করে প্রশাসন বলছে, তারা সবুজায়ন করছে। অন্যদিকে বড় বড় বট গাছ কেটে ফাঁক করে দিচ্ছে কেউ কেউ। তা হলে তো সমস্ত টাকাটাই নষ্ট হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ তদন্তে নামেনি। না পঞ্চায়েত, না ব্লক প্রশাসন।”
তৃণমূল পরিচালিত ভাঙামোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান স্নিগ্ধা বাইরির দাবি, ‘‘গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই।” পুরশুড়ার বিডিও অচিন্ত্য ঘোষ বলেন, “কে বা কারা বট গাছ কেটেছে তা পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলা হবে।” একই কথা বলেছেন সেচ দফতরের চাঁপাডাঙা বিভাগের সহকারী বাস্তুকার বোনকেশ ওঝা। বন দফতরের আরামবাগ রেঞ্জ অফিসার সুকুমার সরকার বলেন, “সরেজমিনে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসীর অভিযোগ, কয়েক মাস আগে গ্রামের তৃণমূলের কিছু ছেলে দাঁড়িয়ে থেকে গাছ দু’টি কাটার ব্যবস্থা করে। প্রশাসনের লোকেরা ওই বাঁধের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করলেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাত্রের দাবি, ‘‘গাছ কাটার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। কাটা হয়ে যাওয়ার পরে শুনেছি, যাঁর ছেড়ে দেওয়া জায়গায় সেচ দফতরের বাঁধ হয়েছে, সেই সহদেব পাল গাছ দু’টিকে গ্রামের মন্দিরের উন্নয়ন কল্পে দান করেছেন।”
সহদেব বলেন, “আমারই জায়গা ছিল ওটা। ওই গাছ দুটোর ছায়ায় ৫ কাঠা জমিতে কোনও ফসল পাচ্ছিলাম না। গ্রামের ছেলেরা বলল, দুর্গামন্দির সংস্কারে গাছ দু’টির ডালপালা কেটে তারা বিক্রি করবে। জমি উদ্ধারের কথা ভেবে আমি রাজি হই। গাছ কাটতে অনুমতি নিতে হয় বলে আমার জানা ছিল না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy