প্রতীকী ছবি।
নতুন বছরে হাওড়ার বাসিন্দাদের জন্য সুখবর দিল স্বাস্থ্য দফতর। এ মাসের শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে এই জেলায় করোনার টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে বলে স্বাস্থ্যভবন থেকে তাঁদের কাছে বার্তা এসেছে বলে জানিয়েছেন হাওড়ার স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক। সে জন্য চূড়ান্ত প্রস্ততি কার্যত সারা হয়ে গিয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘টিকাকরণের জন্য আমরা প্রস্তুত।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে তিনটি পর্যায়ে টিকাকরণ হবে। প্রথম পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের, এমনকি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদেরও টিকাকরণ হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে পুলিশকর্মীদের এবং তৃতীয় পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে সাধারণ মানুষকে। প্রথম দু’টি পর্যায়ের জন্য পরিকাঠামো তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
টিকাকরণ হবে সরকারি হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। কেন্দ্রগুলিতে তিনটি করে ঘর থাকছে। একটিতে টিকা রাখা হবে। দ্বিতীয় ঘরে টিকা দেওয়া হবে। তৃতীয় ঘরে যাঁদের টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এ জন্য মোট ৬০টি কেন্দ্র বাছা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, টিকাকরণের পরে কারও শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কিনা, সেটা দেখার জন্যই পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ে যাঁরা টিকাকরণের আওতায় আসবেন, সেই সব চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকাকরণের জন্য পুলিশকর্মীদের তালিকাও তৈরি হচ্ছে। তবে, কত জনকে দৈনিক টিকা দেওয়া হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। তা নির্ভর করবে কত পরিমাণ টিকা আসবে, তার উপরে। সাধারণ মানুষের টিকাকরণের সময় স্কুলভবনগুলিকে নেওয়া হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, টিকাকরণের ব্যবস্থা তত্বাবধানের জন্য টাস্ক ফোর্স থাকছে। ইতিমধ্যেই জেলা পর্যায়ের টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়ে গিয়েছে। তার প্রথম বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। সেই বৈঠকেই প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে তার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে। চলছে ব্লক এবং পুরসভা পর্যায়ের টাস্ক ফোর্স গঠনের কাজ। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, স্বাস্থ্যভবন থেকেই তাঁদের টিকাকরণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রস্তুতিরই একটি অংশ টাস্ক ফোর্স গঠন এবং বৈঠক।
গত বছরের মার্চ মাসের গোড়া থেকেই দেশ জুড়ে শুরু হয় করোনা সংক্রমণ। হাওড়াও তা থেকে বাদ যায়নি। নভেম্বর পর্যন্ত সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে থাকে। চিকিৎসার জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে জেলায় পাঁচটি কোভিড হাসপাতাল করা হয়। ডিসেম্বরের গোড়া থেকে করোনার প্রকোপ কমেছে। ২৯ ডিসেম্বর দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৭৬ জনের। ওইদিন পর্যন্ত জেলায় মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৫৬৩ জন। মারা গিয়েছেন ১০০১ জন। জেলায় দৈনিক মৃতের সংখ্যাও কমেছে।
এই পরিস্থিতিতে নতুন বছরের গোড়াতেই টিকাকরণ শুরু হচ্ছে দেখে স্বাস্থ্যকর্তাদের মুখের হাসি চওড়া হতে চলেছে। একইসঙ্গে খুশি সাধারণ মানুষও। উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব তারকনাথ মেটে বলেন, ‘‘প্রথম দু’টি পর্যায়ে হয়তো আমরা টিকাকরণের আওতায় থাকব না। কিন্তু সত্যিই যদি টিকাকরণ শুরু হয়, তার থেকে খুশির খবর আর কিছু হতে পারে না। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy