স্তূপীকৃত: রামকৃষ্ণ সেতুর নীচে এ ভাবেই পড়ে থাকা জঞ্জাল পোড়ানো হচ্ছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
আরামবাগের দ্বারকেশ্বর নদের চরে রামকৃষ্ণ সেতুর নীচে দীর্ঘদিন ধরেই শহরের আবর্জনা ফেলা হয়। এর জেরে পুরসভার বিরুদ্ধে ওই এলাকায় দূষণ সৃষ্টির অভিযোগও উঠেছে অনেকবার। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হন এলাকাবাসী। গত সোমবার ওই আবর্জনার স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেয় কেউ। দমকল গিয়ে আগুন নেভালেও এখনও ধোঁয়া বন্ধ হয়নি। তার জেরে বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত এবং ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। পুরসভার বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার দায় চাপিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভও মাথাচাড়া দিচ্ছে। তাঁদের খেদ, বছর চারেক ধরে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলা হলেও পুরসভা কিছু করেনি।
এ নিয়ে আরামবাগের পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দীর দাবি, “এইসব অসুবিধা থাকবে না। আমরা শীঘ্রই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলব। চাঁদুরে জায়গা চিহ্নিত করে ঘেরা হয়ে গিয়েছে। কর্মীদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা হয়েছে। শহরের পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য বাছাই করার জন্য নদের গর্ভে রাখা হয়। সম্ভবত রাখাল ছেলেরা তার স্তূপে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। দমকল ডেকে আগুন নেভানোও হয়েছিল।”
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ২০১৭ সালের গোড়ায় পল্লিশ্রী সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদের রামকৃষ্ণ সেতুর নীচে বেআইনি ভাবে নদীর চর ভরাট করে মাঠ তৈরি করে পুরসভা। সেই মাঠেই শহরের গৃহস্থালি, চিকিৎসা সরঞ্জাম-সহ যাবতীয় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। তার জেরে সমস্যায় পড়ছেন নদের দু’পাড়ের ৪টি ওয়ার্ডের (পূর্ব পাড়ের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং পশ্চিম পাড়ের ১২ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড) বাসিন্দারা।
৬ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লিশ্রীর মনোতোষ রায় নামে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর অভিযোগ, “তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা চরটি ভরাট করার সময় বলেছিল, এখানে জনসভা, ধর্মসভা ইত্যাদির জন্য মাঠ তৈরি হবে। একইসঙ্গে ছেলেদের খেলার ব্যবস্থাও হবে। কিন্তু ভরাট হতে শহরের আবর্জনা ফেলতে শুরু করে। প্রতিবাদ করলেই রক্তচক্ষুর সামনে পড়তে হয়।”
১২ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী আব্বাস আলি বলেন, “সেতুর নীচে শহরের সমস্ত আবর্জনা ফেলে নদ এবং পুরো শহর দূষিত করছে পুরসভা। আবর্জনা পাহাড়প্রমাণ হয়ে গেলে গোপনে সেই স্তূপে আগুন লাগিয়ে বলছে রাখাল ছেলেরা আগুন লাগিয়েছে। ধোঁয়ার দূষণে জেরবার হচ্ছি আমরা।”
শুধু ভুক্তভোগীরাই নয়, নদের চরে আবর্জনা নিয়ে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের গৌরহাটি মোড় এলাকার সমাজসেবী বিমল দত্ত বলেন, “পুরসভা গত তিন বছর ধরে এলাকায় বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে বলছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। উল্টে নদের সেতুর নীচে শহরের সমস্ত আবর্জনা ফেলে নদী এবং পুরো শহর দূষিত করছে। বিষয়টা পরিবেশ দফতরের নজরে আনব আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy