বাড়িতে তৈরি হচ্ছে বাজি। শুক্রবার গোঘাটের একটি গ্রামে— ছবি সঞ্জীব ঘোষ
শব্দবাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিলই। করোনা আবহে এ বার সব ধরনের আতশবাজি থেকেও মানুষকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে হুগলি এবং হাওড়া জেলার পুলিশ-প্রশাসনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। ফুলঝুরিও বেচাকেনা করা যাবে না।
হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ জানিয়েছে, বাজি পোড়ানো বন্ধ করতে বিভিন্ন ক্লাব-সংগঠনকে নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হবে। আজ, শনিবার থেকেই তা শুরু হবে। বাজি কারখানাতেও হানা দেওয়া হবে। তার আগে অবশ্য হাইকোর্টের রায়ের কথা জানিয়ে উৎপাদকদের সতর্ক করা হবে। যাতে তাঁরা বাজি তৈরি না করেন। রাস্তা বা দোকানেও কেউ বাজি বিক্রি করলে সতর্ক করা হবে। তাতে কাজ না হলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হবে।
কলকাতার কাছে অন্যতম বড় বাজি উৎপাদক জেলা হুগলি। ডানকুনি, চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়ার কিছু এলাকায় ঘরে ঘরে বাজি তৈরি হয়। হরিপাল, ধনেখালি, পোলবা, পান্ডুয়া এবং বলাগড় ব্লকেও বাজি তৈরি হয়। এই জেলা থেকে কলকাতাতেও বাজি সরবরাহ করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বাজির উৎপাদন বা বিক্রি বন্ধে বদ্ধপরিকর এখানকার পুলিশ-প্রশাসন। পুলিশের বক্তব্য, বাজি বিক্রেতাদের প্রথমে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিষেধ না-মানলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
বাজি ফাটানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে বৃহস্পতিবার থেকেই আরামবাগের মহকুমায় পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার শুরু হয়। লিফলেটও বিলি হচ্ছে। শুক্রবার আরামবাগের হাসপাতাল রোড, গৌরহাটি মোড় সংলগ্ন ৩ নম্বর ওয়ার্ড, পুরনো বাজার, ব্লকপাড়া, বসন্তপুর মোড় প্রভৃতি এলাকায় বাজি বিক্রির জায়গাগুলিতে পুলিশ অভিযান চালায়। মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ধরে ধরে প্রচার করা হবে। পুলিশও নজরদারি চালাচ্ছে।’’ এসপি (গ্রামীণ) আমনদীপ সিংহ বলেন, ‘‘‘প্রত্যেক থানার আইসি-ওসিকে হাইকোর্টের নির্দেশ যথাযথ পালনে যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে জোরদার প্রচার চালানো হবে।’’’
কারবারিদের একাংশ জানিয়েছেন, বেচাকেনা না জমলেও কিছু বাজি বিক্রি হয়েছে। কিছু কারবারিকে দোকানে সাজিয়ে রাখা বাজি গুদামে সরিয়ে ফেলতে দেখা গিয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাজির অস্থায়ী দোকান বসে। এ বার এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু বিশেষ চোখে পড়েনি। আরামবাগ হাসপাতাল রোডের বাজি ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমানের কথায়, ‘‘করোনার আবহে এই রায়কে আমরা সমর্থন করছি। কিন্তু, দুর্গাপুজোর আগে এই নির্দেশ দেওয়া হলে আমাদের বাজি তোলার লগ্নি আটকে যেত না।’’ হাফিজুরের বাজি বিক্রির লাইসেন্স আছে। পুলিশকর্তারা মনে করছেন, ইতিমধ্যেই অনেক বাজি তৈরি হয়েছে। কিছু বাজি বাজারেও পৌঁছেছে। সেগুলি চোরাগোপ্তা বিক্রির চেষ্টা করা হতে পারে। তা যাতে না হয়, সে দিকে সতর্ক নজর রাখা হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশ জেনে আরামবাগের বাসিন্দা চিন্ময় ঘোষ কয়েকদিন আগে কেনা শ’পাঁচেক টাকার বাজি নষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘জলে চুবিয়েই বাজি নষ্ট করতে হয়েছে। আদালতের কড়া নির্দেশ। অমান্য করব কোন সাহসে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy