বন্ধ সেই বর্জ্য নষ্ট করার প্ল্যান্ট। ছবি: তাপস ঘোষ
হুগলি থেকে চিকিৎসা-বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সংস্থা প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। নিজেদের প্ল্যান্টে নিয়ে গিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তারা ওই বর্জ্য নষ্ট করার জন্য পোলবার ওচাই গ্রামে একটি প্ল্যান্ট গড়ে গত বছর। কিন্তু মাস দুয়েক চলার পরেই তা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। দূষণ এবং দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কায় গ্রামবাসীদের একাংশের বাধায় প্ল্যান্টটি বন্ধ রাখতে হয়েছে বলে সংস্থার অভিযোগ।
এই অবস্থায় অন্যান্য চিকিৎসা বর্জ্যের সঙ্গে হুগলির একাধিক হাসপাতালে কোভিড-বর্জ্যও জমছে। খোলা জায়গায় ওই বর্জ্য জমতে থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে বলে জেলার একাধিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। সংস্থাটি অবশ্য ওই বর্জ্য নিজেদের কল্যাণীর প্ল্যান্টে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা নিয়মিত তোলা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। গাড়ি এলেও জমে থাকা বর্জ্যের কিছুটা নিয়েই তারা চলে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
সংস্থার সাফাই, কল্যাণীর প্ল্যান্টে একাধিক জেলার চিকিৎসা-বর্জ্য যায়। বিপুল পরিমাণ কোভিড-বর্জ্যের চাপ থাকাতেই এই পরিস্থিতি। পোলবার প্ল্যান্টটি চালু থাকলে হুগলিতে কোভিড বা অন্য চিকিৎসা বর্জ্য ফেলার সমস্যা একেবারেই থাকবে না এবং অনেক দ্রুত এবং নিয়মিত বর্জ্য সরানো যাবে বলে সংস্থার দাবি।
সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুদ মালিক জানান, প্ল্যান্টটি চালুর জন্য হুগলি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বিশ্বমানের যন্ত্রপাতি রয়েছে। দূষণ বা দুর্গন্ধের আশঙ্কা অমূলক। কিছু মানুষ গুজব ছড়ানোতেই এই পরিস্থিতি। প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরও চায়, ওই প্ল্যান্ট চলুক। তারাও চেষ্টা করে কিছু করতে পারেনি। আমরা হতাশ। এই অতিমারির সময় প্ল্যান্টটা মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামবাসী যদি চান, আমি নিজে গিয়ে ওঁদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি।’’
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বহু বার গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। চেষ্টা চলছে। প্রশাসনিক স্তরে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে।’’
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এবং অন্য দেশেও ওই সংস্থার প্ল্যান্ট রয়েছে। এ রাজ্যে কল্যাণী ছাড়াও হাওড়া, দুর্গাপুর এবং হলদিয়ায় প্ল্যান্ট রয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পোলবার প্ল্যান্টটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হয়। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশ দূষণ এবং দুর্গন্ধের অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামে। অভিযোগ তোলা হয়, সেখান থেকে বেরনো রাসায়নিকে খেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে। সেখানে মৃতদেহ পোড়ানো হচ্ছে, এমন গুজবও রটে বলে অভিযোগ। প্ল্যান্টে ঢোকার মুখের রাস্তা কেটে দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে ওই বছরের এপ্রিল মাসে প্ল্যান্টটি বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, সেখানে বর্জ্য নষ্ট করার যন্ত্রপাতি পড়ে নষ্ট হচ্ছে। বর্জ্য সংগ্রহের চারটি গাড়িও আটকে রয়েছে। অথচ, সংশ্লিষ্ট সব দফতর প্ল্যান্ট চালানোর অনুমতি দিয়েছে।
এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘ওই প্ল্যান্ট থেকে জল বেরিয়ে ধানজমি নষ্ট হচ্ছিল বলে চাষিদের অভিযোগ রয়েছে। প্ল্যান্ট চালু করার আগে ওই সংস্থার উচিত ছিল মানুষের সঙ্গে ভাল করে কথা বলা।’’ পোলবা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রমেন হালদার বলেন, ‘‘মুষ্টিমেয় লোকের জন্য সমস্যা। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করায় আমাকে, প্রশাসনের আধিকারিকদের হেনস্থা হতে হয়েছে। অথচ, জনস্বার্থেই প্রকল্পটা চলা দরকার। আশা করব যাঁরা ভুল বুঝে রয়েছেন, তাঁদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy