নির্বিকার: জিনিস দেওয়া হচ্ছে পলিপ্যাকে ভরেই। নিজস্ব চিত্র
প্লাস্টিক নিষিদ্ধ হয়েছিল এপ্রিল মাসেই। মেনে নিয়েছিলেন আরামবাগের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ডিসেম্বরে এসেই বদলে গেল ছবিটা। পুরসভার আয়োজিত ‘আরামবাগ উৎসব’-এ দেদার ব্যবহার হল পলিথিন ব্যাগ। তা নিয়ে ক্ষোভ গোপন করেননি শহরের মানুষ। পুর-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই দূষণে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।
২৬ ডিসেম্বর পুরসভা আয়োজিত মেলা ‘আরামবাগ উৎসব’ শুরু হয়েছে বয়েজ স্কুল মাঠে। মেলাপ্রাঙ্গণ তো বটেই, সংলগ্ন গৌরহাটি মোড় থেকে পুরনো বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার দু’দিকে সারিসারি দোকানে ব্যবহার হয়েছে প্লাস্টিক। চপ, জিলিপ থেকে শুরু করে নানা ধরনের খাবার বা গৃহস্থালির সামগ্রী— প্রায় সাড়ে সাতশো স্টল। বেশির ভাগ জায়গাতেই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ দেখা গিয়েছে। পরিত্যক্ত পলিব্যাগ ছড়িয়ে রয়েছে যত্রতত্র। নিকাশি নালা বুজে যাওয়ার জোগাড়।
শহরবাসীর অভিযোগ, প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরসভাই উৎসাহীত নয়। না হলে নিজেদের করা নিয়ম নিজেরাই ভাঙছে কেন?’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর এপ্রিলের গোড়ায় প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল পুরসভা। ব্যবসায়ীদের কাছে নোটিস পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়। নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যবহার করলে পুর আইনের ২৭২ ও ২৭৩ ধারা অনুযায়ী হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়। নোটিস পেয়ে শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ীই প্লাস্টিক বর্জন করেছিলেন বলে দাবি।
আরামবাগের ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক দেবরঞ্জন কবিরাজের বলেন, “শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে আমরা ব্যবসায়ীরা যখন পুরসভার পাশে দাঁড়িয়ে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করেছি। তখন পুরসভাই তাদের নিজেদের মেলায় প্লাস্টিক ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে। এরপরে সাধারণ মানুষকে জরিমানা করা হলে তাঁরা মেনে নেবেন?’’ দেবরঞ্জনের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরা মিছিল করতেই পারি, কিন্তু এখনই করলে উৎসবের মেজাজ নষ্ট হবে। তাই এ সব করছি না। মেলা শেষ হলে অবশ্যই প্রতিবাদ করব।’’
কিছুটা অপ্রস্তুত পুর কর্তৃপক্ষও। পুরপ্রধান স্বপন নন্দী বলেন, “আমরা ধারাবাহিক ভাবে মানুষকে সচেতন করছি। তারপরেও উৎসবের সুযোগে অনেকেই পলিথিন ব্যবহার করছেন বলে খবর পেয়েছি। কিন্তু তেত্রিশ বছরে পা দেওয়া আরামবাগ উৎসব পণ্ড হওয়ার আশঙ্কায় কড়া পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না।’’ তবে পরের বছর থেকে মেলায় স্টল বণ্টনের সময়ে পলিথিন ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আরামবাগ নিজেদের ‘নির্মল পুরসভা’ ঘোষণা করেছে ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। খাতায় কলমে মুক্তশৌচের উদাহরণ নেই গোটা শহরে। কিন্তু ১৯টি ওয়ার্ডে ঘুরলেই দেখা যাবে আবর্জনা আর প্লাস্টিকে বিধ্বস্ত নিকাশি নালাগুলি উপচে পড়ছে। শীত পড়ে গেলেও মশার উপদ্রব বিন্দুমাত্র কমেনি। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডায়েরিয়া এবং জ্বর নিয়ে সারা বছর ভোগান্তি হয় শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy