প্রতীকী ছবি
করোনার প্রকোপ বাড়ছে হুগলিতে। কিন্তু যথেষ্ট সংখ্যায় লালারস পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যা বাড়ানো দূরঅস্ত, রিষড়া শহরে করোনা-পরীক্ষা শিবির বন্ধই হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বেশি করে করোনা পরীক্ষার জন্য মে মাসের গোড়ায় তাদের ব্যবস্থাপনায় এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তত্বাবধানে ওই শিবির চলছিল। প্রথম দিকে সপ্তাহে এক দিন করে জনাপঞ্চাশের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল। পরে তা সপ্তাহে দু’দিন করে করা হয়। সংগৃহীত নমুনা কলকাতা অথবা দুর্গাপুরে পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছিল। অর্থাৎ, প্রতি সপ্তাহে এই শহর থেকে প্রায় ১০০ জনের পরীক্ষা হচ্ছিল স্থানীয় ভাবেই। কিন্তু চলতি মাসে এক দিনও পরীক্ষা হয়নি। এতেই অনেকে দাবি করছেন, শিবির বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শহরবাসীর ক্ষোভ, কোনও জায়গায় করোনা ধরা পড়লে পুর-কর্তৃপক্ষ সেখানকার বাসিন্দাদের শিবিরে এনে লালারসের নমুনা নেওয়ার বন্দোবস্ত করছিলেন। কারও উপসর্গ দেখা দিলে তিনিও শিবিরে এসে সহজেই পরীক্ষা করাতে পারছিলেন। ফলে, নির্ঝঞ্ঝাটে গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ করা যাচ্ছিল। কিন্তু চলতি মাসে সেই সুযোগ মেলেনি। উপসর্গ রয়েছে, এমন লোকজনকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়েছে।
রিষড়ার কংগ্রেস নেতা সাবির আলির অভিযোগ, ‘‘ভাল একটা ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হল। বেশি পরীক্ষা করলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে বুঝেই বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে প্রশাসন এটা করল।’’
শিবির বন্ধের কথা অবশ্য পুর প্রশাসক বিজয়সাগর মিশ্র মানছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘পরীক্ষার জন্য আমরা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওরা পরীক্ষার কিট পাঠিয়ে দেয়। ফের পরীক্ষার জন্য কিটের আবেদন করা হয়েছে। সেগুলো এলেই পরীক্ষা করা হবে।’’
শহরে লালারস সংগ্রহ শিবির ফের চালু করতে পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। সংগঠনের সদস্য সঞ্জীব আচার্য বলেন, ‘‘মানুষ যখন পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছিলেন, তখন তা বন্ধের কী যুক্তি থাকতে পারে? পুরসভা এই কাজ অবিলম্বে শুরু করুক।
স্থানীয় ভাবে পরীক্ষা অনেক যুক্তিযুক্ত। না হলে মানুষ হয়তো বাড়াবাড়ি হলে তবে হাসপাতালে যাচ্ছেন। রোগ দেরিতে ধরা পড়ছে। ততদিনে হয়তো নিজের অজান্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মাধ্যমে অনেকের মধ্যে ভাইরাস ছড়াচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, দু’মাসে শিবিরে কয়েকশো মানুষের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় প্রায় চল্লিশ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন উপসর্গহীন। তাঁরা পুরসভার তত্বাবধানে বাড়িতে থেকেই সেরে উঠেছেন। উপসর্গ থাকলে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy