Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পার্থেনিয়ামের বাড়বাড়ন্ত, বাড়ছে রোগের আশঙ্কা

বিপদ: রাস্তার ধারে পার্থেনিয়াম। —নিজস্ব চিত্র

বিপদ: রাস্তার ধারে পার্থেনিয়াম। —নিজস্ব চিত্র

পীযূষ নন্দী ও সুব্রত জানা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

গাছটি প্রায় সকলেই চেনেন। অনেকের কাছে তা ‘হাঁপানি গাছ’!

ওই গাছ এবং তার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আরামবাগ মহকুমার অনেকেই সচেতন। কিন্তু মহকুমা জুড়ে যথেচ্ছ ভাবে বেড়ে চলা ওই গাছের বংশবিস্তার কী ভাবে রোধ হবে, তা জানেন না সাধারণ মানুষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার রেল লাইনের ধারেও প্রচুর পরিমাণে পার্থেনিয়াম গাছ গজিয়ে উঠেছে। মানুষ নানা ভাবে সেই বিষাক্ত গাছের সংস্পর্শেও আসছেন।

আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন রাস্তার দু’ধারে পার্থেনিয়াম গাছে ছেয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন খালের পাড়-সহ বেশ কিছু গ্রামেও একই ছবি দেখা যাচ্ছে। গ্রামবাসীরা হাঁপানি এবং চর্মরোগের আশঙ্কায় ভুগছেন। তাঁদের অভিযোগ, গাছ ধ্বংসের ক্ষেত্রে প্রশাসনের উদাসীনতা রয়েছে। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, “বিষাক্ত গাছটি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। বাতাসে মিশে পার্থেনিয়াম ফুলের রেণু শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকে হাঁপানি, চর্মরোগ সৃষ্টি করে। অন্য সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকে। এই গাছ ধ্বংস করার সময়েও নাক ও হাত ঢাকার ব্যবস্থা-সহ প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিতে হয়। তা নিয়ে শিবিরও করা হয়।”

আরামবাগের মায়াপুর থেকে খানাকুলের গড়েরঘাট রাস্তার দু’দিক জুড়ে পার্থেনিয়াম গাছে ছয়লাপ। বিশেষত, খানাকুল-১ ব্লকের পোল-২ পঞ্চায়েত এলাকায় তা জঙ্গলের চেহারা নিয়েছে। সেখানকার বিভিন্ন গ্রামের বাড়ির আনাচে-কানাচেতেও দেখা যাচ্ছে পার্থেনিয়াম ফুল। কাঁটাপুকুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক মহম্মদ সালেহিনের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা গড়েরঘাট রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। রাস্তার দু’ধারে পার্থেনিয়ামের জঙ্গল। তারপরেও ওই গাছ ধ্বংসের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ হচ্ছে না।” এ রকমই অভিযোগ তুলেছেন পাতুল গ্রামের শশাঙ্ক মণ্ডল, সাপদ গ্রামের কাঞ্চন রায়রা। নাঙ্গলুপাড়া গ্রামের আব্দুল মামুদ বলেন, “এমনিতেই এই বন্যাপ্রবণ এলাকায় চর্মরোগের প্রকোপ আছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, পার্থেনিয়াম গাছের বাড়বাড়ন্তে তা আরও বাড়বে। শ্বাসকষ্টেও ভোগান্তি হবে। এ নিয়ে নানা মহলে জানিয়েছি। কেউ গুরুত্ব দেয়নি।”

পার্থেনিয়াম গাছ বাড়ছে স্বীকার করে খানাকুল-১ ব্লকের বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “আগামী সপ্তাহের গোড়া থেকেই বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং ক্লাবগুলিকে নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে পার্থেনিয়াম গাছ ধ্বংসের কাজ শুরু করা হবে।”

হাওড়া জেলার ফুলেশ্বর স্টেশনে ট্রেন ধরতেও যাত্রীদের পার্থেনিয়ামের জঙ্গল পেরোতে হচ্ছে। স্টেশনের পাশেই আছে বহুতল এবং বাজার। ওই এলাকার বাসিন্দা অজয় দাস বলেন, ‘‘রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গেলেই পার্থেনিয়াম গাছ শরীরে লেগে যায়।’’ উলুবেড়িয়ার চিকিৎসক এস কে মাইতি বলেন, ‘‘পার্থেনিয়াম গাছ থেকে শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগ হয়। এই গাছ দ্রুত কেটে পুড়িয়ে ফেলা উচিত। রেল স্টেশনের পাশে ভীষণ ভাবে বেড়েছে সেগুলি।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, রেলের অধীন য়ে সব জায়গায় পার্থেনিয়াম গাছ হয়েছে, সেগুলি দ্রুত কেটে পরিষ্কার করে দেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Health Disease Parthenium Trees
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy