পাশে: পেঁয়াজ দিয়ে সাহায্য বিধায়কের। নিজস্ব চিত্র
গত এক মাস ধরে বাজারে পেঁয়াজের আগুন দামে হাত পুড়ছে গৃহস্থের। বুধবার ‘দিদিকে বলো’র প্রচারে বেরিয়ে মানুষের মন পেতে বাড়ি বাড়ি পেঁয়াজ বিলি করলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।
এ দিন ওই দলীয় কর্মসূচিতে সপার্ষদ অসিতবাবু গিয়েছিলেন পোলবা-দাদপুর ব্লকের সুগন্ধ্যা পঞ্চায়েতের অমরপুরে। দরিদ্রদের হাতে কম্বল তুলে দেন তিনি। এর পাশাপাশি পাঁচশো গ্রাম করে পেঁয়াজও দেওয়া হয়। গ্রামের অনেকেই ছোট কাজ করে সংসার চালান। তাঁরা জানান, বেশি দামের জন্য পেঁয়াজ তাঁদের নাগালের বাইরে।
অল্প হলেও বিধায়কের দেওয়া পেঁয়াজে কয়েক দিন তাঁদের চলবে। এক বৃদ্ধা বলেন, ‘‘যা দাম, আমাদের মতো লোক পেঁয়াজ কিনবে কী করে? আমাদের রান্নাঘরে পেঁয়াজ ঢুকছে না। পাঁচশো পেঁয়াজে দু’দিন
তাও চলবে।’’
হুগলিতে বেশ কিছু জায়গায় পেঁয়াজ চাষ হয়। কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থার অভাবে নির্দিষ্ট মরসুমের বাইরে তা পাওয়া যায় না। এখন ভিন্রাজ্য থেকে বেশি দাম দিয়ে দামে পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হুগলির চাষিরা হাত কামড়াচ্ছেন।
তাঁরা মনে করছেন, সংরক্ষণের উপায় থাকলে এই সময় তাঁরাই পেঁয়াজের জোগান দিতে পারতেন। বাড়তি উপার্জন হত। এ দিন বিধায়কের পেঁয়াজ বিলি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, এক দিন সামান্য পেঁয়াজ দিয়ে আখেরে মানুষের কতটা উপকার হবে?
বিষয়টি বিধায়কও মানছেন। তবে তাঁর দাবি, এই জেলায় বলাগড়ের পাশাপাশি তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রেও অনেক জায়গায় পেঁয়াজের ফলন হয়। পেঁয়াজের চাষ বাড়ানো এবং সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা নিয়ে ইতিমধ্যেই তিনি উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দাম অগ্নিমূল্য বলেই গরিব পরিবারকে যেটুকু পারছি পেঁয়াজ দিচ্ছি। বলাগড়ের পাশাপাশি আমার বিধানসভা এলাকাতেও অনেক জায়গায় পেঁয়াজ চাষ হয়। এখানে পেঁয়াজ চাষ কী ভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। পেঁয়াজ সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় দু’বার প্রশ্ন করেছি। কৃষিমন্ত্রী এবং কৃষি বিপণন মন্ত্রী এ নিয়ে কথা বলছেন।’’ তিনি জানান, পেঁয়াজ চাষ এবং সংরক্ষণের পদ্ধতি নিয়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও চেষ্টা করা হচ্ছে।
জেলার উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকরা জানান, ঠিক পদ্ধতি মানলে ছ’মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়। চাষির বাড়ি বা জমিতেই অল্প খরচে পেঁয়াজের সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করা যায়। রাজ্য সরকারের তরফে ওই সংরক্ষণ কেন্দ্রের জন্য ভর্তুকিও দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে চাষিদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবিরও
করা হয়।
বহু চাষিরই অবশ্য বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় ফসল ওঠার কিছু দিনের মধ্যেই সব পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে হয়। সব সময় ভাল দামও মেলে না। পোলবার চাষি বলেন, ‘‘সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকলে শুধু ধান-আলুর উপরে নির্ভর করতে হবে না। বিকল্প চাষ হিসেবে পেঁয়াজ চাষ করতে পারব।’’
উপযুক্ত ব্যবস্থা কবে হবে, চাষি সে দিকেই তাকিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy