হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার বড়বাজারে দুষ্কৃতী খুনের ঘটনায় আরও এক জন গ্রেফতার হল। এ বার পুলিশের জালে ধরা পড়ল চুঁচুড়া থানারই এক সিভিক ভলান্টিয়ার। ধৃত সন্দীপ সর্দার ওরফে হোগলা বড়বাজারেরই বাসিন্দা।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বড়বাজরের একটি ক্লাবের সামনে গুলিতে খুন হয় প্রবীর হেলা ওরফে হাতকাটা মুন্না নামে এক দুষ্কৃতী। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট অফিসের কাছে অভিজাত এলাকায় দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ওই ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা এবং বেআইনি অস্ত্রের রমরমা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সম্রাট ঘোষ ওরফে খ্যাঁক নামে এক দুষ্কৃতীকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বুধবার বিকেলে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই রাতেই হোগলাকে বাড়ি থেকে ধরা হয়। ধৃত দু’জনেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিজয় কাহারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, প্রমাণ লোপের চেষ্টা এবং একাধিক জন একই উদ্দেশ্যে অপরাধ সংগঠিত করার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তোলা হয়। বিচারক খ্যাঁককে সাত দিন পুলিশ হেফাজত এবং হোগলাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।’’
যে ক্লাবের সামনে মুন্না খুন হয়, তৃণমূল নেতা বিজয় ওই ক্লাবের সম্পাদক। ঘটনার রাতে ক্লাবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত-আফগানিস্তান খেলা চলছিল। বিজয় ক্লাবের বাইরে চেয়ারে বসে গল্প করছিলেন। তখন মুন্না আসে। দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, বিজয়কে ধাক্কা দেয় মুন্না। তাতে খেপে গিয়ে বিজয়ের ঘনিষ্ঠরা মুন্নাকে মারধর করে। খ্যাঁক মোটরবাইকে চেপে এসে গুলি চালিয়ে দেয়। তদন্তকারীরা নিশ্চিত, মুন্নাকে যারা মারধর করেছিল, সেই দলে হোগলা ছিল। সে মুন্নাকে লাঠি দিয়ে মারে। ঘটনার পরে ওই ক্লাবের সামনে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়। সে ভাবে কাউকে ক্লাবে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
চুঁচুড়া থানার তদন্তকারী আধিকারিকদের পাশাপাশি কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররাও ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সূত্রের খবর, জেরায় খ্যাঁক জানায়, মুন্নার সঙ্গে বিজয়ের ঝগড়ার সময় সে কাছেপিঠেই ছিল। ‘দাদাকে’ (বিজয়) হেনস্থা করা হচ্ছে বলে ফোনে খবর পেতেই সে সেখানে গিয়ে ওই কাণ্ড ঘটায়। ‘ডিউটি’ না থাকলে হোগলা ক্লাবের সামনে আড্ডা দিত। ওই দিনও তেমনই গিয়েছিল।
বছর দেড়েক আগে একটি মারপিটের ঘটনায় হোগলা এবং বিজয়ের ছেলের নামে পুলিশে অভিযোগ হয়। তখন কয়েক মাস হোগলাকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার এক সহকর্মীর কথায়, ‘‘আমরা হাজার বলেছি। কিন্তু হোগলার শিক্ষা হয়নি। এখন ফল ভুগছে।’’ বিজয়ের দাবি, ‘‘হোগলা ভাল ছেলে। ও কিছুই করেনি।’’ তবে খ্যাঁকের সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে তাঁর দাবি, ‘‘এলাকার ছেলে হিসেবে চিনতাম। কথাবার্তা হত না।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy