Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আরামবাগে বিনা পয়সার ফর্ম বিকোচ্ছে দশ টাকায়!

তবে দালালরাও ছেড়ে দেবার পাত্র নন। তাঁরা ‘সমাজসেবা’ করছেন জানিয়ে এক দফা তর্কাতর্কির পর বিডিও অফিস চত্বরের বাইরে রাস্তার দু’পাশে চট বা কাগজ পেতে নতুন করে সেরেস্তা বানিয়ে ফেলেন।  আর না বুঝে অনেকেই টাকা দিয়ে কিনলেও সেই ফর্ম। 

অনৈতিক: ব্লক অফিসের পাশেই দালালদের সেরেস্তায় ভিড়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

অনৈতিক: ব্লক অফিসের পাশেই দালালদের সেরেস্তায় ভিড়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৫
Share: Save:

রেশন কার্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন চাহিদার সমাধানে ব্লক প্রশাসন থেকে শিবির করে আবেদন পত্র বিলি এবং জমা নেওয়ার কাজ চলছে। তা নিয়ে বিডিও অফিসে ভিড়। যথারীতি সেখানে দালালরাও হাজির। সরকারি চত্বরে বিভিন্ন কাউন্টারের পাশেই সেরেস্তা করে বিনা পয়সার ফর্ম ১০ টাকায় বিক্রি করছে তারা!
আরামবাগ বিডিও অফিস চত্বরের শুক্রবার সকালে ব্লক প্রশাসন কর্তাদের এই বিষয়টি নজরে আসার পরই ৬০ জন দালালকে পুলিশ ডেকে বের করে দেওয়া হল। তবে দালালরাও ছেড়ে দেবার পাত্র নন। তাঁরা ‘সমাজসেবা’ করছেন জানিয়ে এক দফা তর্কাতর্কির পর বিডিও অফিস চত্বরের বাইরে রাস্তার দু’পাশে চট বা কাগজ পেতে নতুন করে সেরেস্তা বানিয়ে ফেলেন। আর না বুঝে অনেকেই টাকা দিয়ে কিনলেও সেই ফর্ম।

পুলিশ ‘সমাজসেবা’র বহর কিছুক্ষণ দেখে ফিরে যায়। কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করে দালালদের সতর্ক করে দেওয়া হয়, যাতে তারা ব্লক চত্বরে না ঢোকে।
এ দিন বিডিও বিশাখ ভট্টাচার্য ছিলেন না। যুগ্ম বিডিও অয়ন রক্ষিত বলেন, “গতকালই বিকেলে ফর্ম বিক্রির অভিযোগ পেয়েছিলাম। এ দিন পুলিশ ডেকে তাঁদের অফিস চত্বর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।”

এ দিন আরামবাগ বিডিও অফিসে গিয়ে দেখা গেল, খালি রেশন কার্ড সংক্রান্ত ভিড়েই ব্লক চত্ত্বর ভিড়ে একাকার। বিভিন্ন আবেদনপত্র দেওয়া এবং জমা নেওয়ার খান চারেক কাউন্টার করেও সামলানো যাচ্ছে না। অনেকেই দালালদের কাছেই চাহিদা মতো ফটোকপি করা আবেদন পত্র নিচ্ছেন। এবং তা পূরণে দালালদেরই দ্বারস্থ হচ্ছেন। ফটোকপি করা ফর্ম ১০টা করে বিক্রি হচ্ছে। আর ফর্ম ভর্তি করে দিলে পরিবারের সদস্য পিছু দিতে হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা।

তিরোল গ্রাম থেকে ৮ নম্বর ফর্ম নিতে আসা আরতি মালিক নামে বললেন, “লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম নিলে তা পেতে বিকেল হয়ে যাবে। আবার তা তা জমা দিতে আসতেও দিন নষ্ট। সব মিলিয়ে ১৫০ টাকা খরচ হয়ে যেত। তার চেয়ে ৩০ টাকায় সব হয়ে গেল।” দালালদের পক্ষে স্থানীয় দৌলতপুরে অরূপ দাস বলেন, “আমি আরামবাগ আদালতে মহুরির কাজ করি। সামান্য টাকার বিনিময়ে এই পরিষেবা তো সমাজসেবাই।”আর এক দালাল পাড়াবাগনানের বিকাস দাস বলেন, “টাকার দাবি আমরা করছি না। মানুষ নিজেরাই রেট ঠিক করে দিয়েছেন।”

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে জেলার সমস্ত ব্লকেই রেশন কার্ড সংক্রান্ত নানা সমস্যা সমাধানে বিশেষ শিবির চালু হয়েছে। ব্লকগুলি থেকে রেশন সংক্রান্ত ৩ নম্বর ফর্ম থেকে ৯ নম্বর ফর্ম দেওয়া হচ্ছে। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ৮ নম্বর ফর্ম। ‘রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ২’ রেশন কার্ডের পরিবর্তে ২ টাকা কেজি চাল পেতে ‘রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ১’ কার্ডে রূপান্তরের জন্য এই ৮ নম্বর ফর্ম। সবচেয়ে বেশি ৮ নম্বর ফর্মের লাইনেই। ৩ নম্বর ফর্ম থেকে ৮ নম্বর ফর্মের আবেদনগুলি সব পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেগুলি পঞ্চায়েত আধিকারিকরা খাদ্য দফতরে পাঠাবেন। ৯ নম্বর ফর্ম সরাসরি খাদ্য দফতরে পাঠানো হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

NRC Arambagh Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy