Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Jagadhatri Puja

রিষড়ায় জগদ্ধাত্রী শোভাযাত্রাও বন্ধ

চন্দননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেন না চলায় দুর্গাপুজোয় ভিড়ে রাশ টানা গিয়েছিল। কিন্তু এ বার লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে যাচ্ছে। তবুও আশা করব, পরিস্থিতি বুঝে সাধারণ মানুষ দলে দলে ভিড় জমাবেন না।’’

দেখা যাবে না পরিচিত এই দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।

দেখা যাবে না পরিচিত এই দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
রিষড়া শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৯
Share: Save:

করোনা আবহে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনে ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা হচ্ছে না চন্দননগরে। সেই পথেই হাঁটছে হুগলির গঙ্গাপাড়ের আর এক শহর রিষড়া। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের বক্তব্য, নতুন কোনও নির্দেশিকা না এলে দুর্গাপুজো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই অনাড়ম্বর ভাবে পুজোর আয়োজন হবে। বন্ধ থাকবে শোভাযাত্রা।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ রুখতে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি যাতে মেনে চলা হয়, তা দেখা হবে। চন্দননগরের মতোই রিষড়াতেও শোভাযাত্রা হবে না।’’

রিষড়ার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকেই আমরা যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়ে আসছি। জগদ্ধাত্রী পুজোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সরকারি সব নির্দেশিকা মেনেই পুজো হবে।’’ তিনি জানান, ভাসানের শোভাযাত্রা হবে না। পুজো কমিটির দু’জন ঘট নিয়ে বিসর্জনের ঘাটে নামতে পারবেন। প্রতিমা নিরঞ্জনের দায়িত্ব পুরসভার। সে জন্য ঘাটে পুরসভার লোক থাকবেন। গঙ্গা দূষণ রুখতে প্রতিমা দ্রুত জল থেকে তুলেও ফেলা হবে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী সোমবার জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন নিয়ে রিষডায় বৈঠক হবে। সেখানে পুলিশ-প্রশাসন, পুরসভা থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা থাকবেন। পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যাবতীয় বিধিনিষেধ নিয়ে আলোচনা করা হবে।

রিষড়ায় রেললাইনের দু’দিক মিলিয়ে শতাধিক পুজো হয়। চন্দননগরের পুজোর শেষ-পর্বে এখানে ঢাকে কাঠি পড়ে। অসংখ্য মানুষ ঠাকুর দেখতে আসেন। চার দিনের পুজো শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিরঞ্জনে নিয়ে যাওয়া হয়। অধিকাংশ প্রতিমা ভাসান দেওয়া হয় রিষড়া ফেরিঘাটে। শোভাযাত্রায় গোটা ত্রিশ পুজো যোগ দেয়। শোভাযাত্রা দেখতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় রাতভর মানুষের ঢল নামে।

কিন্তু করোনার জন্য এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, উৎসবে লাগামছাড়া ভাবে মানুষ শামিল হলে সংক্রমণ ব্যপক হারে ছড়িয়ে যেতে পারে। হুগলিতে কোভিড-হাসপাতালে এমনিতেই বিশেষত আইসিইউ শয্যার অভাবে সংক্রমিতদের অনেককেই ভুগতে হচ্ছে। সংক্রমণ মাত্রাছাড়া হলে পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছবে, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কিত। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, করোনার চরিত্র এখনও পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি। শীতকালে এই ভাইরাস কেমন আচরণ করবে, তা তাঁদের ভাবাচ্ছে। এই সময় কালীপুজো বা জগদ্ধাত্রী পুজোয় উৎসাহের আতিশয্যে পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। রিষড়ার পুজোকর্তাদের অনেকে জানান, বিষয়টি তাঁরাও অনুধাবন করতে পারছেন। সেই কারণে সাদামাটা ভাবে পুজোর আয়োজন করা হবে। উৎসবের আনন্দে করোনার জন্য হাট করে দরজা খুলে যাক, তা তাঁরাও চান না।

পুলিশের বক্তব্য, সাধারণ মানুষকেও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। চন্দননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেন না চলায় দুর্গাপুজোয় ভিড়ে রাশ টানা গিয়েছিল। কিন্তু এ বার লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে যাচ্ছে। তবুও আশা করব, পরিস্থিতি বুঝে সাধারণ মানুষ দলে দলে ভিড় জমাবেন না।’’

পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিন মণ্ডপ এবং সংলগ্ন চত্বর স্যানিটাইজ় করা হবে। মানুষকে সচেতন করতে প্রচার, মাস্ক বিলি করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jagadhatri Puja Rishra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy