রাস্তায় পড়ে থাকা অসুস্থ বা জখম মানুষকে হাসপাতাল-নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে পুলিশি টানাটানির আশঙ্কা করেন অনেকে। এ বার সেই আশঙ্কা রদ করতে উদ্যোগী হল হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ।
শনিবার ডোমজুড়, বাগনান, সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া— চারটি থানা এলাকার ছোট-মাঝারি নার্সিংহোম এবং বেসরকারি হাসপাতালের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ সুপার সুমিতকুমার। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই ওই সব নার্সিংহোম এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অচেনা কেউ কোনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষকে আনলে নার্সিংহোম বা হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নিতে হবে। যিনি আনছেন, তিনি নিজের সম্পর্কে কোনও তথ্য না দিলে তাঁকে জোর করা যাবে না। জখমকে ভর্তি করিয়ে তার পরে থানায় খবর দিতে হবে। পুলিশ তাঁর আত্মীয়দের খোঁজ করবে।
পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে যে স্বাস্থ্য-বিল পাশ হয়েছে, তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে যাতে ভারসাম্য না নষ্ট হয়, সেটাই দেখতে হবে। নার্সিংহোমের গাফিলতি থাকলে স্বাস্থ্য দফতর দেখবেই, কিন্তু আইনের অপপ্রয়োগ করার সুযোগ রোগী বা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ যাতে না নিতে পারে, সেটাও পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হচ্ছে।’’
বাগনান, ডোমজুড়, সাঁকরাইল এবং উলুবেড়িয়া— এই চারটি থানা এলাকাই দুর্ঘটনাপ্রবণ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ এবং মুম্বই রোড— দু’টিই গিয়েছে এই এলাকাগুলি দিয়ে। ফলে, দুর্ঘটনার হারও এখানে বেশি। দেখা গিয়েছে, পুলিশি হেনস্থার ভয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের নার্সিংহোমে আনতে চান না অনেকে। আবার দুর্ঘটনাগ্রস্তকে অপরিচিত কেউ নার্সিংহোমে নিয়ে এলে, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, আসলে রোগীর আত্মীয়েরা না এলে কে চিকিৎসার বিল মেটাবেন তা নিয়ে সংশয়ে ভোগেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। তাই দুর্ঘটনাগ্রস্তকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেটাই এ বার বন্ধ হতে চলেছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায় বলছে— জখম কাউকে যে কেউ হাসপাতালে বা নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে দিতে পারেন। কে তাঁকে এনেছেন, তা নিয়ে হাসপাতাল বা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কাটাছেঁড়া করতে পারবেন না। শনিবারের বৈঠকে আলোচনা করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের কথাও উল্লেখ করেন পুলিশ সুপার।
কিন্তু স্বাস্থ্য-বিল পাশ হওয়ার পরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন নার্সিংহোম মালিকদের একাংশ। তাঁদের আশঙ্কা, এই আইনের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা নার্সিংহোমে হামলা চালাবে। চিকিৎসককে মারধর করবে। কয়েক দিন আগে উলুবেড়িয়াতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। একটি শিশুর মৃত্যুর পরে সংশ্লিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞকে ডেকে এনে বেধড়ক পেটান অভিভাবকেরা। প্রহৃত চিকিৎসক উলুবেড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার জানান, এই রকম কিছু হলে যেন পুলিশকে দ্রুত খবর দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তিনি প্রতিটি নার্সিংহোমের ভিতরে-বাইরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দেন।
বৈঠকের পরে বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশের উদ্যোগে তাঁদের সংশয় অনেকটাই কেটেছে। তাঁরা খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy