প্রতীকী ছবি।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের কড়া নজরদারির সামনে নয়, করোনা পরিস্থিতিতে এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা এ বার অনলাইন-নির্ভর। বৃহস্পতিবার বাড়িতে বসেই পরীক্ষার্থীরা ওয়েবসাইটে পেলেন প্রশ্নপত্র। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর লিখে চটজলদি তা ই-মেল করে পাঠাতে হল কলেজে। মোবাইল বা ইন্টারনেটের সমস্যায় অনেকে অবশ্য কলেজে গিয়ে উত্তরপত্র জমা দিলেন। একই কারণে কিছু ছেলেমেয়ে কলেজে বসে পরীক্ষাও দিলেন।
এই অভিজ্ঞতা ছাত্র-শিক্ষক সকলের কাছেই নতুন। প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই মিটেছে বলে হাওড়া এবং হুগলি জেলার বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত এবং বাণিজ্য বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের পরীক্ষায় এ দিন উলুবেড়িয়া কলেজে ১৬৮৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪০০ জনই উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন অনলাইনে। অ্যানড্রয়েড ফোন উত্তরপত্র আপলোড করার উপযুক্ত না হওয়ায় কিছু পরীক্ষার্থী কলেজে গিয়ে উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান অধ্যক্ষ দেবাশিস পাল। বাগনান কলেজ, জয়পুর পঞ্চায়েত রায় কলেজ, উদয়নারায়ণপুর মাধবীলতা মহাবিদ্যালয়, আমতা রামসদয় কলেজে অবশ্য বহু ছাত্রছাত্রী সশরীরে উত্তরপত্র জমা দিয়ে গিয়েছেন।
বাগনান কলেজেই জনা কুড়ি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোমা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁরা অভাবী পরিবারের সন্তান। অ্যানড্রয়েড ফোন নেই।’’ উত্তরপত্র জমা দিতে কলেজে ঢোকার সময় যাতে ভাইরাস সংক্রমণ না হয়, সে জন্য কলেজে স্যানিটাইজ়া্র যন্ত্র বসানো হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানান। জয়পুরের কলেজটির অধ্যক্ষ সৌমিত্র সরকার বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যন্ত এলাকা। ইন্টারনেটের সমস্যা আছে। তাই বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী কলেজে এসে উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন।’’ রামসদয় কলেজের অধ্যক্ষ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘আমরা অনলাইনে উত্তরপত্র জমার উপরেই জোর দিয়েছিলাম। দু’জন দুঃস্থ ছাত্রকে কলেজ তহবিল থেকে অ্যানড্রয়েড ফোন কিনে দেওয়া হয়। তবে অনেকেই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসেন। নেটের সমস্যায় ভুগতে পারেন, এই আশঙ্কায় তাঁরা কলেজে এসে উত্তরপত্র দিয়ে গিয়েছেন।’’
হুগলির বিভিন্ন কলেজের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে অনলাইন পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষার্থীদের অবহিত করা হয়েছে। রিষড়া বিধানচন্দ্র কলেজের উপাধ্যক্ষ রমেশ কর জানান, উত্তরপত্র পাঠাতে অনেকে প্রযুক্তির সমস্যায় পড়েছেন, কেউ কেউ তা পাঠাতে গিয়ে বুঝতে না পেরে হোঁচট খেয়েছেন। ইন্টারনেট বা মোবাইলের জন্য অনেকের সমস্যা হয়েছে। এই সব পরীক্ষার্থীরা কলেজে এসে উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী সকলেরই এই অভিজ্ঞতা নতুন। বিশেষত পরীক্ষার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল।’’ শ্রীরামপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় ৯০% পরীক্ষার্থী অনলাইনেই উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন।
গোঘাটের বেঙ্গাই অঘোরকামিনী প্রকাশচন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পরমার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা সচেতন ছিলেন। নির্দিষ্ট সময়ে ই-মেলে উত্তরপত্র চলে এসেছে। কিছু পরীক্ষার্থী আধ ঘণ্টার মধ্যে কলেজে এসে উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন।’’ আরামবাগ নেতাজি মহাবিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান অনার্সের ছাত্রী অঙ্কনা কুণ্ডুর বক্তব্য, ‘‘উত্তর লেখার থেকে উত্তরপত্র পিডিএফ করে জমা দেওয়া বেশি ঝামেলা। এই কারণেই ঘরে বসে পরীক্ষা দিতে বেশি টেনশন হচ্ছিল। তবে, শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়েই ই-মেলে উত্তরপত্র পাঠিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy