মহম্মদ নাসিমের বাড়ির সিঁড়িতে বোমার দাগ। —নিজস্ব চিত্র
রাতের অন্ধকারে হুগলি জেলার দু’প্রান্তে শাসকদলের দুই নেতার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার চাঁপদানির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পিবিএম লেনের বাসিন্দা মহম্মদ নাসিমের বাড়ির সামনে বোমাবাজি হয়। পরপর কয়েকটি বোমা ফাটিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তাতে অবশ্য কেউ হতাহত হননি। অন্য দিকে, আরামবাগের আরান্ডি-১ পঞ্চায়েতের প্রধান সোহরাব হোসেনের বাড়ির শৌচাগারের জানলা দিয়ে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। গুলির আওয়াজে তাঁর স্ত্রী নীলিমা বেগমের ডান কানের পর্দা ফেটে যায় বলে সোহরাবের দাবি। দু’টি ক্ষেত্রেই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চাঁপদানির ঘটনাটি ঘটে রাত ২টো নাগাদ। বোমার আওয়াজে ওই পাড়ার বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। যদিও আতঙ্কে তাঁরা তখন বাইরে বেরোতে পারেননি। পরে ঘর থেকে বের হন। পুলিশ আসে। তবে কে বা কারা এই বোমাবাজিতে যুক্ত তা নিয়ে অন্ধকারে ওই তৃণমূল কাউন্সিলর এবং এলাকার লোকজন। অনেকেরই ধারণা, উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া, জগদ্দল বা কাঁকিনাড়ার মতো এলাকা থেকে এসে দুষ্কৃতীরা ওই কাণ্ড করেছে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন পুরপ্রধান সুরেশ মিশ্র এবং অন্য কাউন্সিলররা।
নাসিম বলেন, ‘‘ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মাঝরাতে হঠাৎ বিস্ফোরণে ঘুম ভেঙে যায়। আমার বাড়ির দরজার সামনেই বোমা ফাটানো হয়। কারা করল বুঝতে পারছি না। আমার এমন কোনও শত্রু নেই যে এই ধরনের হামলা করবেন। সকলে খুব আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পুর পরিষেবা সংক্রান্ত কাজে নাসিম খুবই সচেতন। এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এ ভাবে পুর পরিষেবা স্তব্ধ করা যাবে না।’’
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া এলাকায় এবং গঙ্গার ঘাটে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরামবাগের ঘটনায় জখম নীলিমা বেগমকে স্থানীয় দক্ষিণনারায়ণপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। তাঁর ডান কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাঁর স্বামী, পঞ্চায়েত প্রধান সোহরাব বুধবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে রাতে পাঁচ-ছ’টি মোটরবাইকে কিছু দুষ্কৃতী আমার বাড়ির কাছে এসে ইট ছুড়ছে। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করছে। মঙ্গলবার রাতে বাথরুমে আলো জ্বলতে দেখে সেই জানলা দিয়ে ওরা গুলি চালায়। স্ত্রী বাথরুমে ছিলেন। গুলির আওয়াজে তাঁর কানের পর্দা ফেটে যায়। মনে হচ্ছে সিপিএম থেকে বিজেপিতে যাওয়া দুষ্কৃতীরা আমাকে খুনের
চক্রান্ত করেছে।” পুলিশ অবশ্য সোহরাবের বাড়ির শৌচাগারে কোনও গুলি পায়নি।
তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি স্বপন নন্দীর দাবি, ‘‘সিপিএম এবং বিজেপি একজোট হয়ে সোহরাবকে সরাতে চাইছে।’’ অভিযোগ মানেনি দুই বিরোধী
দলই। বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, ‘‘নোংরা রাজনীতি হচ্ছে। সিপিএমের কোনও দুষ্কৃতী আমাদের সঙ্গে নেই।” সিপিএমের আরামবাগ এরিয়া সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের আবার লোক কোথায় ওখানে? বাড়িতে গিয়ে সোহরাবকে মারবে, তেমন বুকের পাটা কার?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy