Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গাছে পেরেক মেরে পরিবেশ রক্ষার বার্তা!

দামোদরের ধারে উলুবেড়িয়ার মহিষরেখায় গেলেই দেখা যাবে, বাবলা, ক্ষিরীশ, অশ্বত্থ-সহ বিভিন্ন ধরন গাছ ওই ফ্লেক্স গায়ে দাঁড়িয়ে। ফ্লেক্সের নীচে লেখা পঞ্চায়েতের নাম— ‘চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত’।

গাছে পেরেক মেরে লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র

গাছে পেরেক মেরে লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

গাছে মারা পেরেক থেকে ঝুলছে চড়ুইভাতি করতে এসে যত্রতত্র বর্জ্য না-ফেলার আবেদন সংবলিত ফ্লেক্স!

দামোদরের ধারে উলুবেড়িয়ার মহিষরেখায় গেলেই দেখা যাবে, বাবলা, ক্ষিরীশ, অশ্বত্থ-সহ বিভিন্ন ধরন গাছ ওই ফ্লেক্স গায়ে দাঁড়িয়ে। ফ্লেক্সের নীচে লেখা পঞ্চায়েতের নাম— ‘চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত’।

পরিবেশর রক্ষার নামে এ ভাবে পরিবেশের ক্ষতি নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের বক্তব্য, গাছে পেরেক মারা বেআইনি। এতে গাছের ক্ষতি হয়। পেরেক মারা হলে জরিমানারও ব্যবস্থা আছে। সরকারের তরফ থেকেই এ বিষয়ে প্রচার চা‌লানো হচ্ছে। তা হলে পঞ্চায়েত কী করে এই বেআইনি কাজ করে?

এই এলাকায় গাছে পেরেক মারার প্রতিবাদে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার করছে ‘মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতি’। সমিতির দাবি, তাদের এই প্রচারের ফলে এ‌লাকায় গাছে পেরেক মারা আর হয় না বললেই চলে। কিন্তু মহিষরেখায় পঞ্চায়েতের কাণ্ডে অবাক সমিতির কর্ণধারেরা। তাঁদের পক্ষে জয়িতা কুণ্ডু বলেন, ‘‘আবর্জনা যাতে নদীতে ফেলা না হয়, সে জন্য পঞ্চায়েতের উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু গাছে পেরেক সাঁটিয়ে ফ্লেক্স ঝোলানো তাদের উচিত হয়নি। আমি ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতকে চিঠি লিখে পেরেক লাগানো ফ্লেক্স খুলে ফেলার অনুরোধ করেছি।’’ পঞ্চায়েত প্রধান রেজাউল হক মোল্লার দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যে সব কর্মীর উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, এটা তাঁরাই করেছেন। বিষয়টি দেখছি।’’

মহিষরেখা এলাকাটি চড়ুইভাতি করার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছিল, চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজন এখানে এসে দামোদরে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা থার্মোকল ও প্লাস্টিকের থালা-বাটি আনেন। সেগুলিও ফেলা হয় নদীতেই। ফলে, দামোদরে দূষণ হয়। এর প্রতিবাদ জানান পরিবেশপ্রেমীরা। চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজনের পাল্টা অভিযোগ ছিল, আবর্জনা ফেলার কোনও ব্যবস্থা নেই এখানে। আবর্জনা ফেলার বিশেষ ব্যবস্থা করার দাবি জানান তাঁরা। চলতি বছরের শীতের শুরুতেই নদীর পাড়ে নানা জায়গায় আবর্জনা ফেলার ভ্যাট বসিয়েছে পঞ্চায়েত। শুধু তা-ই নয়, গত ২৫ ডিসেম্বর চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজনকে এ বিষয়ে সচেতন করতে প্রধান রেজাউল হক মোল্লা নিজে মাইকে প্রচার করেন। সেই প্রচারে অনেকটা কাজও হয়েছে।

কিন্তু নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে গাছের গায়ে ফ্লেক্স। যাতে দেখা যাচ্ছে প্লাস্টিক ব্যবহার না করা, শালপাতার থালা ব্যবহার করা এবং নদীতে আবর্জনা না ফেলার আবেদন। ফলে, আপত্তি উঠেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Enviornment Environmental Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE