Advertisement
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
Chinsurah

আদালতের কাজে গতি নেই, ভরে উঠছে জেল

সূত্রের খবর, স্বাভাবিক সময়ে শ্রীরামপুর আদালতে মাসে অন্তত ২৫০টি মামলা হয়। সেই সংখ্যা এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।

 চুঁচুড়া আদালত চত্বর। ফাইল চিত্র।

চুঁচুড়া আদালত চত্বর। ফাইল চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৮
Share: Save:

করোনা আবহে এক সময় ‘ভার্চুয়াল’ ব্যবস্থায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল চুঁচুড়া জেলা আদালতে। কিন্তু এখন সেই ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ। হুগলির বাকি তিন আদালতেও মামলার কাজে গতি নেই। বিচার প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে। বিচারপ্রার্থীদের যেমন ফিরে যেতে হচ্ছে, তেমনই আসামিদের জামিনের প্রক্রিয়াও শ্লথ হচ্ছে বলে মানছেন আইনজীবীরা। এর জেরে জেলার সংশোধনাগারগুলিতে লাফিয়ে বাড়ছে বন্দির সংখ্যা। দুশ্চিন্তায় পড়ছেন জেল কর্তৃপক্ষ। কারণ, ইতিমধ্যে চুঁচুড়া এবং চন্দননগর জেলে করোনা হানা দিয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে প্রতিদিন।

বর্তমানে শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর আদালতে অন্তত ৮টি করে কোর্ট চলে। চুঁচুড়া আদালতে ১৫টির বেশি কোর্ট রয়েছে। সর্বত্রই একই ছবি। সূত্রের খবর, স্বাভাবিক সময়ে শ্রীরামপুর আদালতে মাসে অন্তত ২৫০টি মামলা হয়। সেই সংখ্যা এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।

কয়েকদিন আগে শ্রীরামপুর আদালতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কোনও কাজ প্রায় হচ্ছেই না। আদালত চত্বরে থাকা মহকুমাশাসকের দফতর, এআরটিও-র মতো সরকারি দফতরে কিন্তু কর্মব্যস্ততা চোখে পড়েছে।

পরিস্থিতির জন্য করোনাকেই দুষছেন আইনজীবীরা। আদালতের কাজ যে সে ভাবে হচ্ছে না, সে কথা মানছেন শ্রীরামপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী মহম্মদ মুসা মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘এখন আদালতের কাজকর্মে গতি নেই। কর্মীরাও আসছেন না। মামলা হলে সাক্ষীদের যাতায়াতে সমস্যা হবে। ট্রেন চলছে না। ফলে, সব মিলিয়েই করোনার জন্য কাজের সমস্যা হচ্ছে।’’

জেলার মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। পুজোর ছুটির পর মামলায় গতি আসবে। সব আদালতেই কাজ শুরু হবে। পরিস্থিতি আয়ত্তেই থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। পকসো মামলাগুলি অবশ্য এখন চলছে।’’

প্রতিবারই পুজোর আগে অপরাধমূলক কাজকর্ম বাগে আনতে পুলিশ ধড়পাকড় শুরু করে। এ বারও করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে জেলে যে আসামির সংখ্যা বাড়ছে, তা মেনে নিয়েছেন চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যথারীতি আসামি ধরে আদালতে পাঠাচ্ছি। বাকিটা আদালতের ব্যাপার।’’

বাড়তি আসামির ভারে জেলার চার জেলেই পরিস্থিতি খারাপ। হুগলি জেলে যেখানে সাড়ে ৪০০ আসামি থাকতে পারে, সেখানে কিছুদিন আগেই সংখ্যাটা ৭০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখনও সংখ্যাটা বেশি বলে জেল সূত্রের খবর। এই জেলে আসামিদের মধ্যে করোনা ছড়িয়েছি। জেলকর্মীদের মধ্যেও করোনা ছড়ায়। জেলের ভিতরে আলাদা ভাবে ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’ করা হয়। এখন যে সব আসামি আসছে, তাদের প্রাথমিক ভাবে সেখানে রাখা হচ্ছে। পরে কোনও উপসর্গ দেখা না দিলে তাদের সেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। করোনা হানা দিয়েছিল

চন্দননগর জেলেও।

ব্যান্ডেলের সদ্য জামিন পাওয়া এক ব্যক্তি কিছুদিন হুগলি জেলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘জেলেই আমার করোনা হয়। সেখানকার কোয়রান্টিন সেন্টারে আমরা যে ১৬ জন ছিলাম, প্রত্যেকের করোনা পজ়িটিভ হয়েছিল। আমি ডায়াবিটিস রোগী হওয়ায় জেল কর্তৃপক্ষ আমাকে দ্রুত চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy