Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

জয়পুর থেকে প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী নিখোঁজ, গ্রামে পোস্টার

লোকসভা নির্বাচনের আগে আট দিন ধরে এলাকার এক প্রাক্তন তৃণমূল কর্মীর নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে সরগরম জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া গ্রাম।

সেই পোস্টার। নিখোঁজ দিনু (উপরে)। নিজস্ব চিত্র

সেই পোস্টার। নিখোঁজ দিনু (উপরে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়পুর: শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০২:১১
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের আগে আট দিন ধরে এলাকার এক প্রাক্তন তৃণমূল কর্মীর নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে সরগরম জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া গ্রাম। মহম্মদ হানিফ ওরফে দিনু নামে বছর সাতাশের ওই যুবক একশো দিনের কাজ প্রকল্পের প্রাক্তন সুপারভাইজারও। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ওই প্রকল্পে দুর্নীতি ফাঁস করে দিতে পারেন, এই আশঙ্কায় দলের বিরুদ্ধ-গোষ্ঠীর লোকজন হানিফকে অপহরণ করেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব।

ওই যুবককে খুঁজে বের করার দাবি জানিয়ে গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যেই ভাটোরা তদন্তকেন্দ্রে স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রও ওই যুবকের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য দ্রুত ভেদ করার জন্য পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সামসুদ্দিন বিশ্বাস এবং উলুবেড়িয়ার এসডিপিও মহম্মদ সানা আখতার গ্রামে গিয়ে হানিফের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। জেলা পুলিশের কর্তাদের একাংশ জানান, এমনিতে এই এলাকায় কয়েকটি অপরাধমূলক কাজ হয়ে গিয়েছে। ভোটের আগে আবার যুবকটির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় যাতে নতুন করে উত্তেজনা না-বাড়ে, তা দেখা হচ্ছে। এসডিপিও বলেন, ‘‘আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত চলছে।’’

ঘোড়াবেড়িয়াতে দু’বছর আগে এক তৃণমূল নেতা এবং তাঁর ভাই প্রকাশ্যে খুন হন। কয়েক মাস আগে ওই জোড়া খুনে মূল অভিযুক্তও খুন হন উলুবেড়িয়ায়। তাই হানিফের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে গ্রামে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

হানিফের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ মার্চ তিনি কলকাতা যান। পরের দিন তাঁর ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সে দিন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে কুলিয়াঘাট পর্যন্ত এসে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। মঙ্গলবার তাঁরা থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন।

ওই পরিবারের দাবি, ১০০ দিনের প্রকল্প নিয়ে পঞ্চায়েতের কর্তাদের একাংশের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে মাসছয়েক আগে সুপারভাইজারের কাজ ছেড়ে দেন হানিফ। দলের সঙ্গেও আর সম্পর্ক রাখতেন না।

হানিফের কাকা হারুন রশিদ বলেন, ‘‘ব্যবসা করবে বলে দাদাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে ও কলকাতায় গিয়েছিল। পরের দিন ফেরার কথা ছিল। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, কুলিয়াঘাট থেকে সাঁকো পার হয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিল ও। তারপরে কী ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল, মাথায় ঢুকছে না। ও অনেককে বলেছিল, ১০০ দিনের প্রকল্পের দুর্নীতি ফাঁস করে দেবে। সে জন্যই মনে হয় ওঁকে অপহরণ কর হয়।’’

গ্রামবাসীরাও ঘোড়াবেড়িয়ায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সরব বয়েছেন। শাসকদলের একাংশের মদতে তোলাবাজি এবং দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য চলছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। গ্রামে দুষ্কৃতী তাণ্ডব বন্ধ করতে এবং হানিফকে অবিলম্বে খুঁজে বের করার দাবিতে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় হাতে লেখা পোস্টার মেরেছেন।

আমতা বিধানসভা কেন্দ্র তৃণমূলের সভাপতি সেলিমূল আলম বলেন, ‘‘ওই এলাকা এখন পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ। দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তোলাবাজিও হচ্ছে না। পুলিশ হানিফের সন্ধানে তদন্ত করছে। আমরাও পুলিশের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছি।’’ ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের প্রধান সাবিনা বেগমের স্বামী তথা ওই পঞ্চায়েতের সদস্য বাপি মল্লিকও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime TMC Politics Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy