আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার। —ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের কেউ বলছেন, ‘‘হাস্যকর’’! কেউ মনে করছেন, স্রেফ চমক!
গত ১২ এপ্রিল চুঁচুড়ার প্রশাসনিক দফতরে আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা বলছে, তাঁর হাতে (ক্যাশ ইন হ্যান্ড) ১০ টাকা রয়েছে। স্বামী সাকির আলির হাতে রয়েছে পাঁচ টাকা। অর্থাৎ, দম্পতির হাতে মাত্র ১৫ টাকা। এটা দেখেই টিপ্পনী কাটছেন বিরোধীরা।
অনেকে বলছেন, এক দিনের জন্য হলেও ১৫ টাকায় ওঁদের সংসার চলেছিল? তামাকপ্রিয় সাকির কি সে দিন একটি সিগারেটও খাননি? বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পালের কথায়, ‘‘দু’জনের হাতে পনেরো টাকা রয়েছে শুনে আকাশ থেকে পড়ছি। তা হলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার টাকা কে দিল? সেটা কি নারদ (নারদ-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অপরূপা) থেকে এল?’’ বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা সুদর্শন রায়চৌধুরীর ইঙ্গিতও সে দিকেই। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তা হলে টাকাটা কোথায় গেল, যেটা ছবিতে দেখা গিয়েছিল!’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রশ্ন শুনে অপরূপা-সাকির অবশ্য হাসছেন। সাকিরের দাবি, নারদে স্ত্রীর নেওয়া অনুদানের টাকা ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটেই তো খরচ হয়েছে। সেই হিসেব কমিশনকে দেওয়া আছে। কিন্তু ১৫ টাকার হিসেব কতটা বিশ্বাসযোগ্য? সাকির বলেন, ‘‘আমার এবং অপরূপার ব্যবসা রয়েছে। ফলে, টাকা থাকবে না কেন? আসলে মনোনয়নপত্র যখন পূরণ হচ্ছিল, তখন আমাদের দু’জনের কাছে মাত্র ১৫ টাকাই ছিল। মিথ্যা লিখতে যাব কেন! এটা নিয়ে চর্চারই বা কী আছে? এখন কেনাকাটা মোবাইলেই করি। কেন্দ্র সরকারই তো ডিজিটাল লেনদেনে জোর দিচ্ছে। হাতে টাকা রাখার কী দরকার!’’
সাকির যা-ই বলুন, কয়েক জন প্রশাসনিক আধিকারিকের কাছেও বিষয়টি ‘হাস্যকর’ ঠেকেছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দু’জনের কাছে মাত্র ১৫ টাকা থাকাটা হাস্যকরই শোনায়। তবে, যে হেতু হলফনামা দিয়ে এই তথ্য জানানো হয়, তাই এ ক্ষেত্রে আমরা কিছু করব না। তথ্য নিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ জানালে নিশ্চয়ই দেখা হবে।’’
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রার্থীকে সম্পত্তির খতিয়ান (স্বামী বা স্ত্রীর সমেত) পেশ করতে হয়। আরামবাগের বিদায়ী সাংসদ অপরূপা এ বারেও তৃণমূলের টিকিটে ওই কেন্দ্র থেকেই ভোটে দাঁড়িয়েছেন। অপরূপার দাখিল করা হলফনামায় তাঁর এবং স্বামীর হাতে মোট ১৫ টাকা থাকলেও ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা থেকে গয়নাগাটি রয়েছে দু’জনেরই। অপরূপার দামি গাড়ি, সাকিরের মোটরবাইক রয়েছে। সাকির রিষড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর।
অন্য প্রার্থীদের হলফনামায় দেখা যাচ্ছে, কারও হাতে রয়েছে ২৫ হাজার টাকা, কারও হাতে দু’লক্ষ। হুগলির সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা বা শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী দলের সর্বক্ষণের কর্মী। হলফনামায় প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, তাঁর হাতে রয়েছে দেড় হাজার টাকা। তীর্থঙ্করের হাতে রয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা।
তবে, দু’জনে মিলিয়ে ১৫ টাকার হিসেবে সকলের শেষে জায়গা করে নিয়েছেন অপরূপা-সাকির!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy