Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

হাওড়ার নতুন আদালত ভবন নিয়ে অসন্তোষ

এমনিতেই হাওড়া আদালতের চারদিকের পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। ঘিঞ্জি জায়গার মধ্যে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই আদালত চত্বরের ভিতরেই রয়েছে অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হওয়া ২৮টি হোটেল ও দোকান।

নির্মাণ: শুরু হয়েছে নতুন আদালত ভবন ৈতরির কাজ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নির্মাণ: শুরু হয়েছে নতুন আদালত ভবন ৈতরির কাজ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

পরিত্যক্ত জমি রয়েছে প্রায় ১৫ কাঠা। পাশেই হোটেল ও দোকান রয়েছে আরও কয়েক কাঠা জুড়ে। তা সত্ত্বেও মাত্র ১২ কাঠা জমিতে হাওড়া আদালতের ভবন তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে মূল ভবন হবে মাত্র চার কাঠা জমির উপরে। কারণ প্রায় আট কাঠা জমি ছেড়ে দিতে হচ্ছে বিদ্যুৎ, দমকল ও আদালত ভবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থার জন্য। এর জেরে বাদ গিয়েছে আইনজীবী-সহ ল’ ক্লার্কদের কক্ষ। অডিটোরিয়াম এবং মহিলা ও পুরুষদের আলাদা বার লাইব্রেরিরও জায়গা হয়নি। এর জেরে হাওড়ায় নতুন আদালত ভবনের কাজ শুরু হলেও রীতিমত অসন্তুষ্ট আইনজীবীমহল।

এ প্রসঙ্গে হাওড়া ক্রিমিনাল কোর্টের বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী বলেন, ‘‘২০০৮ সালে পূর্ত দফতর যে দশ তলা আদালত ভবনের নকশা করেছিল, তাতে অডিটোরিয়াম, বার লাইব্রেরি সবই ছিল। কিন্তু বর্তমানে যে নকশায় আদালত ভবন তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শুধু তা-ই নয়, অর্থ দফতরের অনুমোদন না মেলায় গত এক বছরে অহেতুক খরচও বেড়েছে।’’

এমনিতেই হাওড়া আদালতের চারদিকের পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। ঘিঞ্জি জায়গার মধ্যে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই আদালত চত্বরের ভিতরেই রয়েছে অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হওয়া ২৮টি হোটেল ও দোকান। রয়েছে পাঁক জমা খোলা নর্দমা। সেই নর্দমায় হোটেল ও দোকানের উচ্ছিষ্ট পড়ে নিকাশি ব্যবস্থা প্রায় রুদ্ধ হয়ে যায়। দুর্গন্ধে ভরে যায় আদালত চত্বর। এ জন্য গত ২৫ বছর ধরে হাওড়া আদালতের আইনজীবীরা একটি আধুনিক মানের আদালত ভবন তৈরির জন্য বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়ে এসেছেন। কিন্তু নানা বিষয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় কাজ এগোয়নি।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৪ সালে সিভিল কোর্টের কার্নিস ভেঙে দু’জনের মৃত্যু হয়। আইন বিভাগ ওই সময়ে রাজ্য সরকারকে নতুন আদালত ভবন তৈরির জন্য জমি নির্দিষ্ট করতে বলে। সেই মতো রাজ্য পূর্ত দফতর হাওড়া আদালতের মধ্যে থাকা ২৪ কাঠা জমি ভবন তৈরির জন্য নির্দিষ্ট করে। এর পরে জমি হস্তান্তর নিয়ে নানা টালবাহানা চলতে থাকে। শেষমেশ ২০১৭ সালে নতুন ভবনের শিলান্যাস হয়। ২০১৮ সালে ভবনের নকশার অনুমোদন মেলে। এর জন্য খরচ ধরা হয় ১৪ কোটি টাকা। কিন্তু টাকা মঞ্জুর করতে রাজ্য অর্থ দফতর এক বছর দেরি করায় সেই খরচ বেড়ে গিয়েছে আরও চার কোটি টাকা। আইনজীবীদের অভিযোগ, প্রশাসনিক জটিলতার জন্য আদালত ভবনের অনুমোদন পেয়ে কাজ শুরু করতে যেমন দীর্ঘ এক দশক লেগেছে, তেমনই আদালত ভবন তৈরি করার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাও মানা হয়নি। তবুও এই দশ তলা আদালত ভবনটি তৈরি হলে হাওড়া আদালতের পরিবেশ অনেকটাই পাল্টে যাবে, তা মানছেন আইনজীবীদের অনেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Court Lawyers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy