Advertisement
০৪ জুলাই ২০২৪
বর্ষা আসতেই বন্যা নিয়ে উদ্বেগ
Coronavirus Lockdown

বাঁধ মেরামতিতে জোর সেচমন্ত্রীর

শুক্রবার হাওড়া, হুগলি-সহ আটটি জেলার জেলাশাসক, সেচকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন সেচমন্ত্রী।

বেহাল: বাউড়িয়াতে নদী ভাঙন (বাঁ দিকে)। গোঘাটে দ্বারকেশ্বরের বাঁধের হাল এমনই (ডান দিকে)। — নিজস্ব িচত্র

বেহাল: বাউড়িয়াতে নদী ভাঙন (বাঁ দিকে)। গোঘাটে দ্বারকেশ্বরের বাঁধের হাল এমনই (ডান দিকে)। — নিজস্ব িচত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া-চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০৫:২৩
Share: Save:

বর্ষা নেমে গেল। কিন্তু লকডাউনের গেরোয় দুই জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের কাজ অসম্পূর্ণ। তার উপর আমপান বিপর্যয়ে কোথাও নতুন করে বাঁধ ভেঙেছে, কোথাও ফাটল চওড়া হয়েছে, কোথাও বাঁধ পলকা হয়েছে। মেরামতিতেও আর বিশেষ সময় নেই। সব মিলিয়ে বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে উদ্বেগ বাড়ছে। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতিতে জোর দিলেন সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

শুক্রবার হাওড়া, হুগলি-সহ আটটি জেলার জেলাশাসক, সেচকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন সেচমন্ত্রী। সেখানেই মন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতিতে জোর দেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

২০১৭ সালে বর্ষার সময়ে ডিভিসি-র ছাড়া জলে উদয়নারায়ণপুর থেকে আমতা পর্যন্ত দামোদরের বাঁধের ১৯টি জায়গা ভেঙে যায়। প্লাবিত হয় উদয়নারায়ণপুর, আমতা-১ এবং ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সব ভাঙন মেরামতির কাজ শুরু হলেও তা এখনও শেষ হয়নি। ২০১৭-র বন্যাতেই উদয়নারায়ণপুরের মজা দামোদরের ১৪টি ঢালাই সেতু ভেঙে গিয়েছিল। ছ’টি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা ব্লকের বাকি অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। কাঠের সাঁকো করে কোনও মতে ঠেকনা দেওয়া হয়। ঢালাই সেতু তৈরির দাবি ওঠে।

এ দিনের ভিডিয়ো কনফারেন্সে সেচমন্ত্রীকে সব সমস্যার কথাই জানান উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়। আমপানে গাছ পড়ে শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া, সাঁকরাইল প্রভৃতি জায়গায় রূপনারায়ণ ও হুগলি নদীর বাঁধে যে বেশ ক্ষতি হয়েছে, তা-ও জানানো হয়। সেচমন্ত্রী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে দুই বিধায়কই জানান। উদয়নারায়ণপুরে কাঠের সাঁকোগুলি মেরামত করা হবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

বৈঠকে আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র ডাক পাননি। তিনি বাগনানের মানকুর ঘাট থেকে বাকসিহাট পর্যন্ত রূপনারায়ণের পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানান। বিষয়টি তাঁদের নজরে আছে বলে সেচ দফতরের কর্তাদের দাবি।

হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও শনিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করেন। তিনি জানান, বন্যা মোকাবিলায় সব রকম ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, হুগলিতে ইতিমধ্যে নদনদীর বাঁধে শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত অংশ চিহ্নিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে জমা জল বের করতে রাজ্য সরকারের কাছে পাম্পের জন্য আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জেলা সেচ দফতরের (নিম্ন দামোদর) এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন পাল বলেন, ‘‘আরামবাগ, খানাকুলের দু’টি ব্লক এবং জাঙ্গিপাড়া মিলিয়ে ৩৪টি জায়গায় বাঁধ সংস্কারের জন্য ঠিকাদারদের বরাত দেওয়া হয়েছে। দু’-এক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। বেশ কিছু খাল পরিষ্কারের কাজও শুরু হবে।’’ জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাওড়ার সীমানায় খানাকুলের তেলিদহতে একটি লকগেট নিয়ে যাতে গোলমাল না হয়, সে জন্য দুই জেলার পুলিশ-প্রশাসন এবং সেচ দফতরের মধ্যে শীঘ্রই সমন্বয় বৈঠক হবে বলে স্থির হয়েছে।’’

গত বৃহস্পতিবার আরামবাগের মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহ সেচ দফতর, সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ কমিটি গড়েছেন। বাঁধের ভাঙা এবং ভঙ্গুর জায়গা চিহ্নিত করে আগামী সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE