—প্রতীকী চিত্র।
দেড় মাসেরও বেশি অতিক্রান্ত। সরকারি অনুদান পাওয়া আরামবাগের ভুয়ো ক্লাবের বিরুদ্ধে এখনও পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগই দায়ের করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।
ঘটনার কথা সামনে আসার পরে হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই তদন্ত রিপোর্ট শুক্রবার পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। এ নিয়ে এ দিন জেলাশাসককে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটস্অ্যাপেরও জবাব দেননি। সাধারণ মানুষ তো বটেই, আরামবাগের বিধায়ক-সহ জেলা তৃণমূল নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশও চাইছেন, তদন্ত রিপোর্ট সামনে আসুক।
জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ভুয়ো ক্লাবের অনুদান পাওয়ার পুরো বিষয়টিই জেলা প্রশাসনের দেখার কথা। প্রশাসনিক তদন্তে কিছু উঠে এলে এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ নিশ্চিত ব্যবস্থা নেবে।’’
আরামবাগ পুর এলাকার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লিতে ‘নবপল্লি মাঠপাড়া সম্প্রীতি সঙ্ঘ’ নামে কোনও ক্লাবের অস্তিত্ব নেই। অথচ, ক্লাবটি এ বার সরকারি অনুদান পেয়েছে ১ লক্ষ টাকা। সেই চেক গত ১১ এপ্রিল থানা থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা নীতীশ ভট্টাচার্য তুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ ওঠে। নিয়মমতো অনুদান পেতে গেলে ক্লাবের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দাখিল করতে হয় এবং জায়গার দাগ নম্বর দেখাতে হয়। সে সবও জাল করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে নীতীশ চেক নেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন। তবে, ক্লাবের অস্তিত্ব কোথায়, কে সুপারিশ করেছিলেন, আগের বারের পাওয়া অনুদানের অডিট কী ভাবে হল— এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। তারপর থেকে নীতীশ আর ফোন ধরেননি। এলাকাতেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। শুক্রবারও তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। হোয়াটস্অ্যাপেরও কোনও উত্তর দেননি।
এতদিনেও ওই তদন্তের বিষয়ে কিছু সামনে না-আসায় প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার ক্ষোভ, ‘‘জেলাশাসক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্ত সেই তদন্ত এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে? পুলিশ, প্রশাসন বিষয়টি এ বার দেখুক। কোনও বেনিয়ম হয়েছে কিনা, সেটাও তো দেখা দরকার।’’ আরামবাগ ব্লক তৃণমূল সভাপতি কমল কুশারী বলেন, “ওই ঘটনার কথা সামনে আসার পরে নীতীশকে তারপর কয়েকবার দলীয় কার্যালয়ে দেখা গিয়েছিল। এখন আর আসেন না। আমরা সবাই চাই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। দলের স্বার্থেই এটা দরকার।”
আরামবাগের মাস্টারপাড়ার এক প্রবীণ বলেন, ‘‘আমাদের করের টাকাই সরকার ক্লাবকে অনুদান হিসেবে দেয়। সেই টাকা কোনও ক্লাব খেলাধুলোর কাজে লাগালে কিছু বলার নেই। কিন্তু সরকারি টাকা নয়ছয় হবে কেন? প্রশাসনই বা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন? তদন্ত-রিপোর্ট এল না। যাঁরা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হল না। এটা কি ঠিক?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy