Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

‘গাছশিশু’দের অভিভাবক কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা

যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। শুক্রবার ওই কলেজের চৌহদ্দিতে অধ্যক্ষের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান হল। এক-একটি চারাকে বড় করার দায়িত্ব পড়ল এক এক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার কাঁধে।

রোপণ: শুক্রবার পান্ডুয়ার কলেজে। —নিজস্ব চিত্র

রোপণ: শুক্রবার পান্ডুয়ার কলেজে। —নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০০:২৫
Share: Save:

পরিবেশ দিবস বা অন্য বিশেষ দিনে বৃক্ষরোপণ করা হয়। কিন্তু তার পরে আর সেই গাছের দিকে কারও নজর পড়ে না। পরিচর্যার অভাবে অনেক চারা বাঁচতে পারে না। এ ব্যাপারেই সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে পান্ডুয়ার ইটাচুনা বিজয়নারায়ণ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ গৌতম বিট স্থির করলেন, ‘গাছশিশু’দের অভিভাবক দরকার।

যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। শুক্রবার ওই কলেজের চৌহদ্দিতে অধ্যক্ষের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান হল। এক-একটি চারাকে বড় করার দায়িত্ব পড়ল এক এক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার কাঁধে। কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকা ৬০ জন। প্রত্যেকের নামেই একটি করে গাছ লাগানো হয়েছে। আম, জাম, কাঁঠাল, সবেদা-সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। যে চারাকে যে শিক্ষক লালন-পালন করবেন, তিনিই সেটি বসিয়েছেন। কর্মসূচিতে ছাত্রছাত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। গৌতমবাবু নিজের জন্য বরাদ্দ করেছেন কাঁঠাল গাছ। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকে নিজের নামের গাছের পরিচর্যা করবেন। গাছে জল দেওয়া, সার দেওয়া— সব তাঁর দায়িত্ব। ছাত্রছাত্রীরা সাহায্য করবেন। আমি কাঁঠাল গাছের চারাটাকে যত্ন করে বড় করার চেষ্টা করব।’’

শিক্ষকেরা জানান, গত বছর কলেজের সামনে থেকে খন্যান রেল স্টেশন পর্যন্ত বেশ কিছু চারা লাগানো হয়েছিল। কিন্তু অযত্নে তার মধ্যে বেশ কিছু চারা বাঁচেনি। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘এতে গাছগুলো অভিভাবক পাবে। আমাদের সকলেরও নির্দিষ্ট গাছের প্রতি ভালবাসা বাড়বে। কলেজ ক্যাম্পাস এক দিন ফুল-ফলে ভরে যাবে। প্রচুর পাখি আসবে।’’

বাংলার শিক্ষক সুচরিতা ভট্টাচার্য থেকে সংস্কৃতের শিক্ষক সন্তুকুমার পাল— সকলেই জানান, ছাত্র পড়ানোর পাশাপাশি অন্য ধরনের দায়িত্ব মন দিয়েই পালন করবেন। কেউ কেউ জানিয়ে দেন, পরিচর্যার ব্যাপারে প্রয়োজনে অন্যদের পরামর্শ নেবেন। উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক মলয়কুমার ঘোষ আবার বলেন, ‘‘ভালই হল। গাছ বড় হবে। ছেলেমেয়েদের হাতেকলমে পাঠ দেওয়ারও সুবিধা হবে।’’

বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মগরার সার্কেল ইনস্পেক্টর অরূপ ভৌমিক এবং পান্ডুয়া থানার ওসি সুব্রত দাস। তাঁরা একটি সবেদা গাছ লাগান। সেটিকে পরিচর্যার দায়িত্ব বর্তেছে থানার উপরে। নতুন কাজে পুলিশ অফিসাররা আপ্লুত। তাঁরা জানিয়ে দেন, অফিসার থেকে কনস্টেবল বা সিভিক ভলান্টিয়ার— পালা করে সেটির দেখভাল করবেন। যত্নআত্তিতে ঘাটতি পড়বে না।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Day Trees Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE