Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Illegal building construction

শহর জুড়ে অবৈধ নির্মাণ, দেখবে কে?

সামনেই পুরভোট। নাগরিক সমস্যা প্রায় সর্বত্রই। কোথাও নল দিয়ে জল পড়ে না। কোথাও ফুটপাত বেহাল। কোথাও নিকাশি সমস্যায় মানুষ জেরবার। রয়েছে দূষণও। পুর এলাকাগুলিতে এমন সমস্যার দিকে নজর আনন্দবাজারের। আজ অবৈধ নির্মাণ।

বাড়ছে শহর, ঘিঞ্জি হচ্ছে পরিবেশ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

বাড়ছে শহর, ঘিঞ্জি হচ্ছে পরিবেশ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৪০
Share: Save:

দিন দিন ঘিঞ্জি হচ্ছে আরামবাগ শহর। যত্রতত্র বেআইনি ভাবে বাড়ি-সহ নানা নির্মাণ এবং তাতে কিছু কাউন্সিলর এবং এক শ্রেণির পুরকর্মীর মদতের অভিযোগও কম নয়। কিন্তু সুরাহা করবে কে? পুরসভা হাত তুলে দিয়েছে।

পুর কর্তৃপক্ষই মানছেন, খাতায়-কলমে ওয়ার্ডগুলিতে ১২ ফুট চওড়া রাস্তা রয়েছে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে চার ফুট ছাড় রেখে বাড়ি করার নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুরসভার নজর এড়িয়ে মাত্র এক ফুট ছেড়েই দোতলা বাড়ি নির্মাণ হয়ে যাচ্ছে। পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “আমরা অভিযোগ পেলেই কাজ বন্ধ রাখার নোটিস পাঠাই। দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মেটানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। আমাদের কিছু করার থাকে না।”

পুর কর্তৃপক্ষের এই সাফাই অবশ্য মানছেন না বহু মানুষই। তাঁদের প্রশ্ন, এ পর্যন্ত ক’টি অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হয়েছে? পুরসভা অবশ্য সে তথ্য দিতে পারেনি। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাজারপাড়ার বাসিন্দা নগেন্দ্র ভৌমিকের খেদ, ‘‘অবৈধ নির্মাণ ভাঙা দূরঅস্ত্‌, স্থানীয় বাধা এড়াতে রাজনৈতিক নেতারা দাঁড়িয়ে থেকে সেই সব বেআইনি নির্মাণ তদারকি করেন। পুরসভা নাম-কা-ওয়াস্তে ‘নোটিস’ দেওয়া ছাড়া কোনও পদক্ষেপ করেনি।” ২ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপল্লির বাসিন্দা শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট ছাড় না-রেখে

যথেচ্ছ বাড়ি নির্মাণ তো হচ্ছেই, নিকাশি নালার একদিক দখল করেও নির্মাণ হচ্ছে। মাস কয়েক আগে এখানেই নালা দখল করে নির্মাণ হয়ে গেল। বাধা দিয়েও আটকাতে পারা যায়নি। সরেজমিনে তদন্তেই এলেন না পুর কর্তৃপক্ষ। খালি নির্মাণ বন্ধে নোটিস দিলেন। অথচ, পুরসভার লোকেরাই দাঁড়িয়ে থেকে রাতারাতি কাজটা করে ফেললেন।”

আরামবাগ গ্রামীণ পুরসভা। ১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে শহর সীমাবদ্ধ ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ১৩ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। বাকিগুলিতে গ্রাম। এই শহরের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে বর্ধমান, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়ার। ওই সব জেলা থেকে শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষ মূলত যাতায়াতের সুবিধার জন্য আরামবাগকে বসবাসের জন্য বেছে নিচ্ছেন। বর্তমানে শহরটা বাড়ছে মূলত ২, ১৩, ৬ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে রেল স্টেশন হয়েছে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে কর দেয় এমন বাড়ির সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এ ছাড়া অবৈধ বাড়ি আছে প্রায় দু’হাজার। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বেআইনি আর অপরিকল্পিত নির্মাণের জেরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের অধিকাংশ রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের ইঞ্জিন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ট্রাক্টর যেতে পারে না। নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ারও অন্যতম কারণ বেআইনি নির্মাণ।

সমস্যা রয়েছে। সমাধান নেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy