Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

জাতীয় সড়কেও দাপিয়ে চলছে ‘বেআইনি’ অটো

দশ বছর আগেও গ্রামীণ হাওড়ায় রমরমিয়ে চলত বিভিন্ন রুটের বাস ও মিনিবাস। ছিল বিশেষ ‘এল’ রুটের বাস। হাওড়া থেকে গাদিয়াড়া, মাতাপাড়া, মুন্সিরহাট, বাকসি, জালালসি, আমতা এবং ঝিকিরা পর্যন্ত সাতটি রুটে ‘এল’ বাস চলত।

এভােবই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চলছে।

এভােবই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চলছে।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

লোকালয়ের ভিতরের অলি-গলি সেই কবেই ছেয়ে গিয়েছে অটোরিকশায়। হাওড়া জেলায় রাজ্য সড়ক এবং জাতীয় সড়কেও (মুম্বই রোড) নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটো। জেলায় যত অটো চলে, যার বেশিরভাগই বেআইনি বলে অভিযোগ। এর জেরে যাত্রী কমছে বাসের। বন্ধ হচ্ছে বাসরুট। অবিলম্বে বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে কালীপুজোর পরেই হাওড়া জুড়ে ধর্মঘটে নামার হুমকি দিলেন জেলা বাস-মালিক সংগঠনের সভাপতি অসিত পণ্ডিত।

দশ বছর আগেও গ্রামীণ হাওড়ায় রমরমিয়ে চলত বিভিন্ন রুটের বাস ও মিনিবাস। ছিল বিশেষ ‘এল’ রুটের বাস। হাওড়া থেকে গাদিয়াড়া, মাতাপাড়া, মুন্সিরহাট, বাকসি, জালালসি, আমতা এবং ঝিকিরা পর্যন্ত সাতটি রুটে ‘এল’ বাস চলত। একমাত্র ঝিকিরা ছাড়া বাকি রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, ছ’টি রুটে অন্তত ১২০টি বাস বসে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১৩টি রুটের সাধারণ বাস-মিনিবাসও। সব মিলিয়ে ওই রুটগুলিতে অন্তত ২৫০ বাস-মিনিবাস চলত। এখন সেগুলিরও দেখা নেই।

যে সব রুট এখনও চালু রয়েছে, সেখানেও বাসের সংখ্যা কমেছে। হাওড়া-রামপুর (এক্সপ্রেস) রুটে ২০টির পরিবর্তে আটটি বাস চলছে। হাওড়া-ডিহিভুরসুট (এক্সপ্রেস) রুটে ২০টি বাস চলত। এখন চলে ১৫টি। হাওড়া-ঝিকিরা ‘এল’ রুটেও ২০টি বাস চলত। তা কমে হয়েছে ১০টি। বাসের সংখ্যা কমেছে আমতা-বাগনান, আমতা-উলুবেড়িয়া, বাগনান-জয়পুর, আমতা-সাঁকরাইল প্রভৃতি রুটেও।

রাস্তায় বাস কমে যাওয়ায় যাত্রীদের ভরসা তাই অটো। কিন্তু সেই অটোর বিরুদ্ধে অভিযোগ শুধু বাস-মালিকদেরই নয়, ক্ষোভ রয়েছে যাত্রীদেরও। কিন্তু তাঁরা যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, অটোতে বহন ক্ষমতার থেকে বেশি যাত্রী তোলা হয়। অনেকে ঝুলে যেতেও বাধ্য হন। এতে যেমন ভাড়া বেশি লাগছে, তেমন নিরাপত্তাও থাকছে না। দুর্ঘটনায় ক্ষতি হলে বিমার সুবিধাও মেলে না। বেশি রাতে অটো-চালকেরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। বাগনান থেকে মানকুর, বাইনান, বাকসি প্রভৃতি রুটে যে সব অটো চলে, রাত ন’টার পর থেকেই ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে চালকদের দর কষাকষি শুরু হয়ে যায়। এমনকি, পরিবহণ দফতরের নিয়মের বাইরে গিয়ে রাজ্য সড়ক এবং মুম্বই রোডর দিয়েও বাগনান-উলুবেড়িয়া, বাগনান-কোলাঘাট, উলুবেড়িয়া-রানিহাটি, আন্দুল -রানিহাটি প্রভৃতি রুটে অটো চলছে।

পরিস্থিতির জন্য জেলা পরিবহণ দফতরকেই দায়ী করেছেন বাস-মালিকেরা। তাঁদের সংগঠনের সভাপতি অসিতবাবু বলেন, ‘‘আমরা কারও ভাত মারতে চাই না। পরিবহণ দফতরের নির্দেশিকা মতো বৈধ অটোর পরিষেবা চলতে পারে। তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কারণ বৈধ অটো চললে অবৈধ অটো কমবে। কিন্তু জেলা পরিবহণ দফতর সেই নির্দেশিকা মানছে না কেন আমাদের সেটাই প্রশ্ন।’’

অটো-চালকেরা আবার পরিস্থিতির জন্য বাস-মালিকদেরই দায়ী করেছেন। তাঁদের একটা বড় অংশের দাবি, এই অবস্থা রাতারাতি তৈরি হয়নি। কোনও সময়সীমা মেনে বাস চলত না। যাত্রীরা দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে অটোর শরণাপন্ন হতে শুরু করেন। তা থেকেই যাত্রীদের অটো নির্ভরতা বেড়েছে।

গত বছর রাজ্য পরিবহণ দফতর অটো চলাচলের ক্ষেত্রে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছিল। কিন্তু গ্রামীণ হাওড়ায় যে তার অনেক কিছুই মানা হয় না, তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট।

অন্য বিষয়গুলি:

Autorickshaw Mumbai Road Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy