রমরমা: বাগনান বাসস্ট্যান্ডে ভিড় ডিজেল-অটোর। ছবি: সুব্রত জানা
ডিজেল চালিত অটো নিষিদ্ধ। কিন্তু বাগনান, আমতা, উলুবেড়িয়া-সহ হাওড়া জেলার বেশ কিছু বাসস্ট্যান্ডে থিক থিক করছে বেআইনি ডিজেল অটো। ফলে, পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। কিন্তু দেখে কে?
নজরদারির ফাঁক গলেই হাওড়া জেলায় বেআইনি অটোর বাড়বাড়ন্ত বলে অভিযোগ যাত্রী এবং বাস-মালিকদের। ‘বাগনান-মানকুর-বাকসি বাসযাত্রী অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অভিযোগ, বেআইনি অটোর দৌরাত্ম্যে শুধু যে মানকুর ও বাগনান— এই দুই রুটে মিনিবাস উঠে গিয়েছে তা নয়, বছর তিনেক ধরে বাকসি-ধর্মতলা রুটে তাঁদের উদ্যোগে একটি সিটিসি বাস চালাচ্ছে পরিবহণ দফতর। কিন্তু সেই বাস যাতে ওই রুটে যাত্রী তুলতে না পারে, সে জন্য বাগনান বাসস্ট্যান্ডে ওই বাস দাঁড়াতে দেন না অটো-চালকেরা।
শৈলেন্দ্রবাবুর ক্ষোভ, ‘‘সমস্যার সমাধান চেয়ে আমি নিজে ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করেছি। বিষয়টি দেখা হবে বলে আমাকে জানানো হয়। প্রায় এক মাস কেটে গেলেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’
রাজ্যে অটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পরিবহণ দফতর ২০১৬ সালের ১২ ডিসেন্বর একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির রিপোর্টে কিছু সুপারিশ করা হয়। তার ভিত্তিতে ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর পরিবহণ দফতর অটো চলাচল নিয়ন্ত্রণে কিছু নির্দেশিকা জারি করে। ওই বছরেরই ডিসেম্বরের মধ্যে তা পুরোপুরি কার্যকর করার জন্য জেলা পরিবহণ দফতরগুলিকে জানিয়ে দেয় পরিবহণ দফতর। দশ মাস পরেও সেই নির্দেশিকা কি মানা হচ্ছে হাওড়ায়?
যাত্রীদের অভিযোগ, খাতায়-কলমে নির্দেশিকা জারি করেই দায় সেরেছে পরিবহণ দফতর। বেআইনি অটো ধরার কোনও চেষ্টা করেনি তারা। অথচ, নির্দেশিকাতেই বলা হয়েছে, নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য পুলিশকে সঙ্গে নেবে জেলা পরিবহণ দফতর। পুলিশের সঙ্গে আলোচনাও করতে হবে। কিন্তু তা হয় না। কী বলছে জেলা পরিবহণ দফতর?
ওই দফতরের কর্তা জানান, অটো-চালকদের নির্দেশিকার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরা এমন সব রুটে অটো চালাতে চাইছেন, যেগুলিতে অনুমোদন দেওয়া যাবে না। রাজ্য সড়ক বা জাতীয় সড়কে অটো চালানোর অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই নেই। অটোর জন্য কিছু নতুন রুট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে যথেষ্ট আবেদন জমা পড়েনি। তা হলে বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে না কেন? জেলা পরিবহণ দফতরের ওই কর্তার দাবি, ‘‘অভিযান নিয়মিত চলে।’’ কিন্তু ক’টি বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার উত্তর মেলেনি ওই দফতর থেকে।
বাগনান বাসস্ট্যান্ডের নিজামুদ্দিন নামে এক অটো-চালকের দাবি, ‘‘আমরাও চাই বৈধ অটো চালাতে। গত বছরের নির্দেশিকার কথা কিছু জানিই না। নতুন রুটে বৈধ ভাবে অটো চালানোর জন্য সুযোগ পেলে আমরা তা মানব না কেন?’’ একই কথা জানান সুকুমার দাস নামে আর এক অটো-চালকও।
দু’পক্ষের এই টানাপড়েনেই নাভিশ্বাস উঠেছে বাস-শিল্পে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy