উদ্ধার: মিলেছে এই অস্ত্র। ছবি: তাপস ঘোষ
শুধু মজুত রাখাই নয়, চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে অস্ত্র তৈরির কারখানাই গড়ে ফেলেছিল সমাজবিরোধী টোটন বিশ্বাসের বাহিনী। রবিবার রাতে ফের ওই এলাকা থেকে আধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তার সঙ্গে মিলেছে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম।
রবিবার চুঁচুড়ায় পুলিশ লাইনে সাংবাদিক সম্মেলন করে সিপি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা নিয়মিত বন্দুক ব্যবহার করত। প্র্যাকটিসও করত। আগ্নেয়াস্ত্র ভেঙে গেলে বা ত্রুটি থাকলে এখানেই সারাই করত। অস্ত্র তৈরিও করত।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘অস্ত্র তৈরি বা সারানো বাইরে থেকে লোক এনে করানো হত, না কি এখানকার দুষ্কৃতীরাই ট্রেনিং নিয়ে এসে ওই কাজ করত, তা দেখা হচ্ছে।’’
কমিশনারেট সূত্রের দাবি, গত বৃহস্পতিবার টোটনের বিশ্বস্ত সহযোগী প্রসেনজিৎ সাহা ওরফে নেপা এবং মিলন সিংহ ওরফে ভাগনা গাঁজা-সহ গ্রেফতার হয়। একটি দামি গাড়িতে তারা গাঁজা পাচার করছিল। গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। আদালত তাদের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে রবিবার রাতে পুলিশ রবীন্দ্রনগরে হানা দেয়। দু’জনের বাড়ি থেকে মোট ১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। তার মধ্যে রয়েছে দু’টি কার্বাইন, তিনটি সেভেন এমএম, দু’টি নাইন এমএম পিস্তলের মতো আধুনিক অস্ত্র। তালিকায় আছে মাস্কেট, পাইপগান, ছ’ঘড়া রিভলভারও। বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের প্রায় দেড়শো গুলি পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি অস্ত্র তৈরির জন্য রাখা ড্রিল মেশিন-সহ অন্যান্য সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়।
দিনের পর দিন ধরে রবীন্দ্রনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা দুষ্কৃতীদের কার্যত মুক্তাঞ্চল হয়ে গিয়েছিল। মাস চারেক আগে টোটনের ডেরায় হানা দিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি টের পায়। টোটন-বাহিনী পুলিশকে গুলি ছোড়ে। পুলিশকে পিছু হঠতে হয়। এর পরেই পুলিশ ওই এলাকা দুষ্কৃতীশূন্য করতে অভিযান শুরু করে। টোটন-সহ বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতী ধরাও পড়েছে।
তিন মাস আগেও টোটনের ডেরা থেকে কার্বাইন উদ্ধার হয়েছিল। কমিশনারেটের আধিকারিকরা জানান, কার্বাইন থেকে একসঙ্গে অনেক গুলি ছোড়া যায়। এই আগ্নেয়াস্ত্র মূলত আরপিএফ ব্যবহার করে। সিপি জানান, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে একটি কার্বাইন, একটি সেভেন এমএম পিস্তল-সহ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র সরকারি অস্ত্রাগারে তৈরি।
কমিশনারেটের কর্তারা জানান, মাসকয়েকের লাগাতার অভিযানে রবীন্দ্রনগর থেকে মোট ২৬ জন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে। গোটা পঞ্চাশ আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় সাড়ে ছ’শো গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সিপির দাবি, রবীন্দ্রনগর এখন কার্যত দুষ্কৃতীশূন্য। দু’-এক জন বাংলাদেশে পালিয়েছে। তাদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।
দিন কুড়ি আগে রবীন্দ্রনগরে এক দুষ্কৃতীর বাড়ি থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং তার একশো গুণ গুলি উদ্ধার করার পরে কমিশনারেটের আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, সেখানে আরও অস্ত্র আছে বলে তাঁরা মনে করছেন। তাঁদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। এক পুলিশকর্তার বিষ্ময়, ‘‘একটা পাড়ায় এত গুলি-বন্দুক। ভাবা যায়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy