কামারপুকুর শ্রীপুরে বৈদ্যুতিক চুল্লি উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
কাজ হয়েছে অনেক। যে কেউ মানবেন। তবে ‘খোঁচা’টাও থাকছে!
২০১৬-র আগে যাঁরা গোঘাটে এসেছেন, তাঁরা এখন এলে অবাক হবেন। চারদিক হাইমাস্ট আলোয় ভাসছে। ভাল রাস্তাঘাট। বাজারে জলসত্র, মসজিদে অজুখানা, শ্মশান— আরও কত কী!
এ সবের মধ্যে সাধারণ মানুষের হাহাকারও প্রকট। না হলে সুন্দরপুর গ্রামের বাগানপাড়ার ভিখারিণী সখিনা বিবি কেন বলবেন, ‘‘বহুবার দরবার করেও আমার ঘর মেলেনি। জীবনও পাল্টায়নি।” ভাতশালা গ্রামের রায়পাড়ার তাপস রায়ের কথাও ধরা যাক, ‘‘আমাদের মতো যাঁদের ঘর নেই, তাঁরা ঘর পাচ্ছি না। বার্ধক্য-ভাতা, বিধবা-ভাতাও মিলছে না। মানুষের উন্নতি না হলে এ কেমন উন্নয়ন!”
ব্যক্তিগত অপ্রাপ্তির এমন ক্ষোভ শোনা যাচ্ছে গোঘাট বিধানসভা এলাকার ১৬টি অঞ্চল থেকেই। কিন্তু এতেই শেষ নয়। বহু গ্রামবাসীরই অভিযোগ, এই পাঁচ বছরে পাল্লা দিয়ে তোলাবাজি আর দুর্নীতিও বেড়েছে। খুনোখুনি, মারপিট, বালি চুরির রমরমাও কম নয়। এমনকি, যে কাজ হয়েছে সতার গুণমানও ঠিক নয়।
গোঘাট গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বিভাস মালিক এলাকার ভাঙা কংক্রিটের রাস্তা দেখিয়ে বলেন, “এ রকমই প্রচুর কাজ হয়েছে। একটাও গুণমানের নয়। মানুষের জন্য কিছু না করে খালি নির্মাণের কাজে দুর্নীতি হয়েছে।” প্রায় একই অভিযোগ শোনা যাচ্ছে বিরোধীদের মুখেও। এক ধাপ এগিয়ে প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক শিবপ্রসাদ মালিকের অভিযোগ, “শ্যাওড়া হাইস্কুলে ২০০৪ সাল নাগাদ তফসিলি এবং আদিবাসী ছাত্রদের জন্য দোতলা ছাত্রাবাস করেছিলাম। তা এরা বন্ধ করে দিয়েছে।’’
সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির সুবিধা মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে শুনিয়া, বালি, দেওয়ানগঞ্জ, কুমুড়শা, গোবিন্দপুর, বেঙ্গাই ইত্যাদি গ্রাম থেকে। খানাটি গ্রামের মনসা রায়ের অভিযোগ, “বাম আমলের একটি নলকূপ নতুন করে বসানো ছাড়া কিছু হয়নি।”
বিধানসভা ভোট আসছে। শৌচাগার নির্মাণ এবং সামাজিক প্রকল্পগুলি নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ যা নির্বাচনী বৈতরণী পেরোতে বেগ দিতে পারে, মানছেন তৃণমূল নেতা তথা গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পাল। তাঁর কথায়, ‘‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা-য় গিয়ে বিধবা-ভাতা, বার্ধক্য-ভাতা, আবাস যোজনা নিয়ে অভিযোগে জেরবার হতে হচ্ছে আমাদের। সত্যিকার প্রয়োজনও অনেক। আমরা লোকদের বোঝাচ্ছি, ২০২১ সাল থেকেই সব হবে।”
মনোরঞ্জন গ্রামবাসীদের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু দলেরই একসময়ের দাপুটে নেতা ফরিদ খান ‘পরিস্থিতি সুবিধার’ দেখছেন না। তাঁর ক্ষোভ বিধায়কের কাজকর্মে। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ কী চাইছেন, সেটা দেখেননি বিধায়ক। এ দিকে সব ক্ষেত্রে তিনি রয়েছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৮ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার শুধু উন্নয়ন দিয়েই সেই ব্যবধান তাঁরা মুথে দিতে পারবেন বলে দাবি করছেন বিধায়ক মানস মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘“আমাদের কিছু নেতিবাচক দিক ছিল। সেগুলো সংশোধন করা হয়েছে। জেলায় উন্নয়নে বেচারাম মান্না ছাড়া আমার আগে কেউ নেই। আমার বিধায়ক তহবিলের কোনও টাকাও পড়ে নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy