Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নিয়মরক্ষা হাওড়াতেও

এখানে প্রায় ২০০০ ছোট ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা আছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দশ হাজার শ্রমিক এই শিল্পের উপরে নির্ভরশীল। এক সময়ে এই এলাকায় রীতিমতো ঘটা করে বিশ্বকর্মা পুজো হত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা
জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

এত খারাপ অবস্থা আগে দেখেনি বড়গাছিয়া। হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের এই এলাকা ছোট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের জন্য খ্যাত। যেভাবে হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডে ঘরে ঘরে ছোট ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা গড়ে উঠেছে বড়গাছিয়াও তেমনই। সেই কারণে বড়গাছিয়াকে ‘ছোট বেলিলিয়াস রোড’ বলা হয়। কিন্তু মন্দার ছোঁয়া লেগেছে এখানেও। ফলে কমেছে বিশ্বকর্মা পুজোর জাঁকজমক।

এখানে প্রায় ২০০০ ছোট ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা আছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দশ হাজার শ্রমিক এই শিল্পের উপরে নির্ভরশীল। এক সময়ে এই এলাকায় রীতিমতো ঘটা করে বিশ্বকর্মা পুজো হত। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই একটু একটু করে আড়ম্বর কমেছে দেব-কারিগরের। এ বছর তো অনেক জায়গায় পুজো হচ্ছেই নিয়মমাফিক।

এই এলাকায় কারখানা মালিক নিজে যেমন কাজ করেন, তেমনই শ্রমিকও নিয়োগ করা হয়। স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক দুই ধরনের শ্রমিকই আছেন। বড় বড় কারখানা থেকে কাজের বরাত এনে এখানে তা তৈরি করে সংস্থাগুলিতে জোগান দেওয়া হয়। কিন্তু বরাত দিনের পর দিন কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে। তারই প্রভাব পড়েছে পুজোর উপরে।

মলয় জানা নামে এক কারখানা মালিক বলেন, ‘‘আমার এখানে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পুজো বড় করেই হত। এ বছর নিয়মরক্ষার জন্য করব। শ্রমিকদের আলাদা করে খাওয়ানো হবে না। শুধু মিষ্টি দেওয়া হবে।’’ মলয়বাবু বলেন, ‘‘এই পরিবর্তন শ্রমিকেরা মানতে চাননি। কিন্তু তাঁদের বোঝাতে হয়েছে পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই। তাঁরা বুঝেছেন, এটাই রক্ষে।’’

একটি তালা তৈরির কারখানার অন্যতম মালিক তুষার কর বললেন, ‘‘ব্যবসা দিনের পর দিন কমছে। তবে বিশ্বকর্মা পুজো তো আর বন্ধ রাখা যায় না। কিন্তু অনেকটাই নিয়মরক্ষার পুজোতে পরিণত হয়েছে।’’ ব্যতিক্রম দেখা গেল না বড় কারখানাগুলিতে। উলুবেড়িয়ার বীরশিবপুরের সরকারি শিল্পবিকাশ কেন্দ্রে যে বড় কারখানা আছে সেখানে একসময়ে বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে একটা প্রতিযোগিতা চলত। এখন পুজো হয় নামমাত্র।

শিল্পতালুকের উল্টোদিকে মুম্বই রোডের ধারে কয়েকটি বড় কারখানা রয়েছে। সেখানের পরিবেশও ম্রিয়মাণ। একটি কারখানার শ্রমিক দীপঙ্কর কপাট বললেন, ‘‘এ বছর সেই রমরমা আর নেই। বাজারের অবস্থা যা তাতে আমরাও কিছু বলতে পারছি না। ফলে কোনওমতে পুজো হচ্ছে।’’ একই বক্তব্য, পাশের কারখানার শ্রমিকদেরও। উলুবেড়িয়ায় বিএসএনএল-এর কার্যালয়ে গত বছর পর্যন্ত ধিমধাম করে বিশ্বকর্মা পুজো করেছেন কর্মীরা। কিন্তু বর্তমানে এই সংস্থার হাল ভাল নয়। বেতন হচ্ছে অনিয়মিত। এই ডামাডোলের জেরে পুজো হচ্ছে শুধু নিয়ম রাখতেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Economic slowdown Vishwakarma Puja Jagatballavpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy