মৃত সোমদত্তা। নিজস্ব চিত্র
কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বেতড় মোড়ে দুর্ঘটনায় জখম ছাত্রীর মৃত্যু হল। দক্ষিণ বাকসাড়ার বাসিন্দা পিয়ালী বেরা শনিবার তাঁর দুই মেয়ে সোমদত্তা ও সোমাদৃতাকে স্কুটারে চাপিয়ে টিউশনি পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বেতড় মোড়ে বাঁক ঘোরার সময়ে একটি ট্রেলার তাঁদের ধাক্কা মারে। তিন জনকে দক্ষিণ হাওড়ার এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই গভীর রাতে মারা যায় সোমদত্তা। আগামী বছর তার মাধ্যমিক দেওয়ার কথা ছিল। এ দিন মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ভিড় করেন তাদের বাড়িতে। তাঁরাই জানালেন, সোমদত্তা এবং সোমাদৃতা— দুই বোনই পড়াশোনায় অত্যন্ত ভাল। দু’জনেই বাস্কেটবল খেলোয়াড়। হাওড়া জেলার হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছে। খেলার পাশাপাশি, সোমদত্তার শখ ছিল ছবি আঁকাও। পিয়ালীকে এখনও জানানো হয়নি বড় মেয়ের মৃত্যুসংবাদ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রবিবার তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ছোট মেয়ে সোমাদৃতার অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।
এ দিকে, এই দুর্ঘটনার পরে ফের প্রশ্নের মুখে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের যান নিয়ন্ত্রণ। সাঁতরাগাছি সেতুর উপরে এক্সপ্রেসওয়ের যানজট নিয়ে হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও সকাল থেকে রাত, দফায় দফায় যানজটে নাজেহাল হচ্ছেন মানুষ। কয়েকশো ক্যামেরা বসিয়ে, রোড ডিভাইডার করে বা তিন লেনের রাস্তা করেও লাভ হয়নি। ভোর থেকে ট্রাক-ট্রেলারের ভিড়ে অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে এই রাস্তা। হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে ট্র্যাফিক পুলিশও।
বছরখানেক আগে এই সাঁতরাগাছি সেতুতেই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন অভিনেতা পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেতুতে যানজট কমাতে ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিছু দিনের জন্য যানজট কমলেও ফের ফিরে এসেছে সেই পুরনো ছবি।
হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক কর্তাদের অভিযোগ, বন্দর এলাকা ও বজবজ থেকে আসা মালবাহী ট্রাক, ট্রেলারের ফেরার সময় বদলে যাওয়ায় যানজট গুরুতর আকার নিয়েছে। আগে ওই সব যানবাহন রাতে জাতীয় সড়ক ধরত। কিন্তু এখন সেগুলি আসছে ভোরে। পুলিশের বক্তব্য, এই সব ভারী যানবাহন সাঁতরাগাছি সেতুতে ওঠার পরেই গতি কমে যাচ্ছে। ফলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সাঁতরাগাছিগামী লেনে ক্রমাগত গাড়ি জমতে থাকায় যানজটের লেজ পৌঁছে যাচ্ছে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজার কাছে।
ডিসি (ট্র্যাফিক) জাফর আজমল কিদওয়াই বলেন, ‘‘একে তো সাঁতরাগাছি সেতুটি সরু। তার উপরে এত গাড়ির চাপ নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’ তিনি জানান, সমস্যা মেটাতে শীঘ্রই কলকাতা পুলিশ কমিশনারেট ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তাঁরা।
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে এলিভেটেড করিডর তৈরির কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি হয়ে গিয়েছে। ডাকা হয়ে গিয়েছে দরপত্রও। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে বড় দুর্ঘটনার সংখ্যা চলতি বছরে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। এলিভেটেড করিডর হলে যানজটের সমস্যাও অনেকটা মিটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy