Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

খুনের তদন্তে মনোরোগী দাদা আটক

খুনের কিনারা তো হলই না, উল্টে আরও জটিল হয়ে উঠল রহস্য। গত মঙ্গলবার লিলুয়ার পঞ্চাননতলায় নিজের ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছিল সনাতন বিশ্বাস (৫২) নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। তাঁকে কে বা কারা ওই ভাবে পিটিয়ে মারল, কী ভাবেই বা তিনি ওই অবস্থায় নিজের ঘরে পৌঁছলেন— সবটাই এখনও ধোঁয়াশায় মোড়া।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:০৭
Share: Save:

খুনের কিনারা তো হলই না, উল্টে আরও জটিল হয়ে উঠল রহস্য।

গত মঙ্গলবার লিলুয়ার পঞ্চাননতলায় নিজের ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছিল সনাতন বিশ্বাস (৫২) নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। তাঁকে কে বা কারা ওই ভাবে পিটিয়ে মারল, কী ভাবেই বা তিনি ওই অবস্থায় নিজের ঘরে পৌঁছলেন— সবটাই এখনও ধোঁয়াশায় মোড়া। এর মধ্যে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আর তার পরেই সনাতনবাবুর মানসিক ভারসাম্যহীন মেজ দাদা ষষ্ঠী বিশ্বাসকে খুনের অভিযোগে বাড়ি থেকে তুলে আনে পুলিশ। সারা রাত তাঁকে লক-আপে রেখে দেওয়া হয়। পরের দিন আদালতে নিয়েও যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এজলাসে তোলার আগেই থানায় ফিরিয়ে আনা হয়। কোর্ট থেকে ফেরত আনা হয় কাগজপত্রও।

কিন্তু কেন? লিলুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের সাফাই, ‘‘আমরা তো ওঁকে গ্রেফতার করিনি। অন্য আসামির সঙ্গে কোর্টে চলে গিয়েছিলেন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সনাতনের ছোট ভাই রবির অভিযোগের ভিত্তিতেই মেজদা ষষ্ঠীকে থানায় তুলে আনা হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ভাল ভাবে খোঁজখবর না নিয়েই কোন যুক্তিতে এক জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগে ধরে এনে সারা রাত লক-আপে আটকে রাখল পুলিশ? ওসি-র জবাব, ‘‘সনাতনের ছোট ভাই রবি রাত সাড়ে দশটা নাগাদ থানায় এসে মেজ দাদা ষষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চান। খুনের ঘটনা। কেউ অভিযোগ করতে চাইলে তো আমরা তা নিতে বাধ্য। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ষষ্ঠীকে আটক করা হয়েছে।’’

এই ঘটনায় হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘আসলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া, চিকিৎসককে দেখিয়ে বোঝা গিয়েছে, উনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই ওঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। তবে তদন্ত চলবে।’’

কিন্তু রবি পুলিশের কাছে ষষ্ঠীর নামে অভিযোগ করলেন কেন? রবির বক্তব্য, ‘‘আমি শুনেছি, সে দিন মেজদার সঙ্গেই সেজদার গণ্ডগোল চলছিল। তাই অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি তো ঘটনাস্থলে ছিলামই না।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সনাতনেরা চার ভাই। বড় জন আগেই মারা গিয়েছেন। একই বাড়িতে থাকা বাকি তিন ভাইয়ের মধ্যে নিত্যদিন অশান্তি লেগে থাকত। মানসিক ভারসাম্যহীন ষষ্ঠীকে মারধর করা নিয়ে সেজ ভাই সনাতনের সঙ্গে ছোট ভাই রবির গোলমাল গত সোমবার রাতে চরমে ওঠে। তাঁদের মধ্যে মারপিটও হয়। পরের দিন সনাতনের ঘর থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়।

এলাকার বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, পারিবারিক বিবাদ মেটাতেই সোমবার রাতে স্থানীয় ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির অফিসে
সনাতন ও রবিকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু মীমাংসা তো দূর, সেখানেও দু’জনের মারপিট বেধে যায়। অভিযোগ, ওয়ার্ড অফিসের উল্টো দিকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারা হয় সনাতনকে। কিন্তু কে বা কারা সেই ঘটনায় যুক্ত ছিল, সে ব্যাপারে অন্ধকারে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে সনাতনের ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে।
এ বিষয়ে বালির তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এই ঘটনায় অপরাধীকে ধরতে পুলিশকে পুরোপুরি নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করতে বলেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Investigation Murder Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy