বিতর্ক: এই জমির মালিকদের থেকেই কাটমানি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
নেতাদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে হুগলিতে জেরবার শাসক দল। তালিকায় নয়া সংযোজন— তারকেশ্বরের পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধান। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নবান্নের দ্বারস্থ হয়েছেন কয়েক জন। বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে।
প্রশাসক সূত্রের খবর, সম্প্রতি মোট ১৪ জনের সই করা একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও হুগলির জেলাশাসকের কাছে। এই অভিযোগপত্রে সরাসরি কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই দুই নেতার নামে। তবে অভিযুক্ত দুই নেতাই ‘কাটমানি’ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগকারীদের দাবি, ২০১০ সালে তারকেশ্বর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৬ কাঠা একটি জমি তাঁরা ‘প্লট’ হিসেবে কেনেন। অভিযোগ, এর পরেই পুরসভার উন্নয়নের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ‘কাটমানি’ নেওয়া হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে। সেই টাকাই এখন ফেরত চেয়েছেন ওই ১৪ জন। অভিযোগপত্রে তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমির ‘সাইট প্ল্যান’-এর জন্য পুরসভায় আবেদন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই কাজও পুরসভা ফেলে রেখেছে।
অভিযোগকারীদের এক জন, সিঙ্গুরের রাজারবাথানের বাসিন্দা নিমাইচন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘‘আমি ওখানে দুই কাঠার কিছুটা বেশি জমি কিনেছি। জমি কেনাবেচার সঙ্গে পুরসভার সম্পর্ক না থাকলেও পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত এবং উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডু এলাকার উন্নয়নের নামে কাঠা পিছু ৫০ হাজার টাকা করে চান। সেই মতো আমরা সবাই মিলে মোট ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চাউলপট্টিতে পুরপ্রধানের বাড়িতে দিয়ে আসি।’’ নিমাইবাবুর অভিযোগ, ‘‘পুরসভার কাজ হবে ভেবে আমরা টাকার রসিদ চেয়েছিলাম। কিন্তু উনি তা দেননি। তবে আশ্বাস দেন, সাইট প্ল্যান পেতে সমস্যা হবে না। কিন্তু সাড়ে তিন বছর ধরে বিষয়টা উনি ঝুলিয়ে রেখে দিয়েছেন।’’
ওই জায়গায় জমি কিনেছিলেন পিন্টু অধিকারীও। তাঁরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খবর পাচ্ছি, ওই জমিতে পুরসভা না কী উন্নয়নের কাজ করবে। জমি কিনলাম আমরা। সেখানে পুরসভা কী করে কাজ করবে? লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও এখন পুরসভার খামখেয়ালিপনার শিকার হচ্ছি। আমাদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক। মুখ্যমন্ত্রীকে গোটা ঘটনা জানানো হয়েছে। এখন প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে, সে দিকে তাকিয়ে আছি।’’
টাকার বিষয়টি অস্বীকার করেননি উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডু। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুরসভার তহবিলে স্বেচ্ছায় ওঁদের টাকা দেওয়ার কথা হয়েছিল। পুরসভার তরফে টাকার অঙ্ক নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। আর ব্যক্তিগত ভাবে আমি কোনও টাকা নিইনি। ওরা যাকে বা যাঁদের টাকা দিয়েছেন, তাঁদের কাছে ফেরত চান।’’ এ ব্যাপারে পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত বলেন, ‘‘ওঁরা যে টাকা নেওয়ার কথা বলছেন, তা অসত্য।’’ পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘শহরের উন্নয়নে ওই জমিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরবোর্ড। বিষয়টি জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছি।’’
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টিই আমি কাজে যোগ দেওয়ার অনেক আগে হয়েছে। ঠিক কী ঘটেছে, খোঁজ নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy