টোটোর পিছনে ফেস্টুন। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
এমনিতে বছরভর রাজনৈতিক ডামাডোল আরামবাগের মানুষের গা-সওয়া। ভোটের মুখে হিংসা-হানাহানি দেখতে এবং এক শ্রেণির নেতার অকথা-কুকথা শুনতেও তাঁর অভ্যস্ত। আর কয়েক মাস পরে বিধানসভা ভোট। অথচ, শহরটা কেমন যেন ঝিমিয়ে ছিল! রাজনৈতিক উত্তাপ আনল এক সাদামাটা ফেস্টুন!
রবিবার বিকেল থেকে শহরের বহু অটো-টোটোর পিছনে ওই ফেস্টুন চোখে পড়তে থাকে সকলের। যাতে শুধু লেখা, ‘সব বেচে দে নরেন’। ব্যস্। ফেস্টুনে না-আছে কোনও দলের নাম, না কোনও প্রচারকের। তাতেই শহরে ভোটরঙ্গ জমছে।
তৃণমূল থেকে ওই ফেস্টুন সাঁটা হয়েছে ধরে নিয়ে পাল্টা বিজেপির তরফে মজার কোনও ছড়া বা এমন কিছু লেখা ফেস্টুনের প্রতীক্ষাও করছেন অনেকে। যথারীতি বিজেপি-তৃণমূলের চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “চুরি-দুর্নীতি, কাটমানি ইত্যাদিতে লুটেপুটে খাওয়া তৃণমূলকে যে ভোটে মানুষ তাড়াচ্ছেন, এটা ওরা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। রাজ্য থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়ার আগে এ সব নোংরামি করছে। টোটো-অটো চালকদের বলে দেওয়া হয়েছে ওই ফেস্টুন খুলে ফেলতে। চালকরা নিরাপত্তা বা রুটিরুজি নিয়ে ভয় পেলে আমরাই খুলে ফেলে দেব।”
পক্ষান্তরে, শহর তৃণমূল সভাপতি তথা পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দীর দাবি, “ওই ফেস্টুন আমাদের তরফে লাগানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সরকারি সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছেন দেখে আগে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলত, এখন সাধারণ মানুষ বলছেন। তাঁরাই প্রতিবাদে ফেস্টুন বাঁধছেন।”
দু’দলের চাপানউতোরে টোটো-অটো চালকেরা কিঞ্চিৎ বিড়ম্বনায় পডে়ছেন। সোমবার বেশ কিছু অটো থেকে ফেস্টুন খুলতে দেখা যায়। শহর টোটো সংগঠনের সহ-সভাপতি কাশীনাথ দাস মোদক বলেন,
“আমরা ফেস্টুন লাগাইনি। স্ট্যান্ডে গাড়ি রেখে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কে কখন, কী ফেস্টুন লাগাচ্ছেন, তা দেখি না।” অটোচালক সংগঠনের শহর সম্পাদক শেখ খায়রুলেরও দাবি, “ফেস্টুন কারা লাগাচ্ছে আমাদের জানা নেই। আমাদের কোনও অটোতে ওই ফেস্টুন দেখতে পাইনি।”
প্রসঙ্গত, এর আগে একই ‘পোস্ট’ দেখা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আরামবাগে ‘নরেন’ শব্দটি বাদে ওই বাক্য লেখা টি-শার্ট পরেও লোকজনকে ঘুরতে দেখা গিয়ে্ছে। এখন ‘নরেন’ শব্দটি যোগ হওয়ায় তা অন্য মাত্রা পেয়েছে বলে মত ভোট রসিকদের।
সকলেই মানছেন, অনেককাল বাদে আরামবাগে ভোটের মজা ফিরেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy