Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Krishi Prayukti Sahayak

কেপিএস বাড়ন্ত, চাষিরা পরামর্শ পাবেন কোথায়? 

চাষিদের অভিযোগ, দিনের পর দিন কেপিএস-রা সে ভাবে মাঠে আসছেন না।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫৭
Share: Save:

কখনও আলুতে ক্ষতির মুখে পড়ে হাহাকার করছেন চাষি। কখনও ধানে। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় আনাজ চাষ করেও সব সময় চাষির মুখে হাসি ফুটছে না। তাঁদের পরামর্শ দেবেন কে? কৃষিপ্রযুক্তি সহায়ক কই?

রাজ্যের অন্যতম ‘শস্যগোলা’ হুগলি। অথচ, এই জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েতের জন্য রয়েছেন মাত্র ৩০ জন কৃষিপ্রযুক্তি সহায়ক (কেপিএস)। কৃষি দফতরের তরফে কেপিএস-দেরই সরাসরি চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার কথা। কিন্তু চাষিদের অভিযোগ, দিনের পর দিন কেপিএস-রা সে ভাবে মাঠে আসছেন না। ফলে, কৃষির আধুনিক প্রযুক্তির কথা তাঁরা জানতে পারছেন না। এর সুফলও মিলছে না। জেলার কৃষিকর্তাদের একাংশও মানছেন, কেপিএসের অভাবেই নতুন নতুন প্রকল্প সুষ্ঠু ভাবে রূপায়ণ করা যাচ্ছে না।

সমস্যাটির কথা স্বীকার করেছেন জেলা কৃষি আধিকারিক অশোক তরফদার। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় কেপিএস-এর পদ রয়েছে ২১৬টি। তার মধ্যে রয়েছেন ৩০-৩৫ জন। রাজ্য দফতর বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল।’’

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতপিছু একজন করে কেপিএস থাকার কথা। নিয়ম হল— সকাল ৮টার মধ্যে তাঁদের নির্দিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকায় পৌঁছতে হয়। দুপুর দু’টো পর্যন্ত চাষিদের নিয়ে তাঁদের বিভিন্ন খেত পরিদর্শন করতে হবে, প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিতে হবে। বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী ক্ষেত্র করে চাষিদের হাতে-নাতে শেখানোর দায়ভার কেপিএস-দেরই। কিন্তু এই জেলায় সে ভাবে কেপিএস না-থাকায় ছোট ছোট প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাষের উন্নত প্রযুক্তির ধ্যানধারণা চাষিরা জানতে পারছেন না বলে অভিযোগ।

জেলায় কর্মরত কেপিএস-রা জানিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ৮-১০টি পঞ্চায়েতের দায়িত্ব সামলাতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতে চাষিদের হাতে-কলমে নতুন প্রযুক্তি শেখানো দূরঅস্ত‌্, যোগাযোগ রাখাই তাঁদের পক্ষ দুরূহ হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি তাঁদের আবার সবাইকে ঝড়ের ক্ষতিপূরণ-সহ নানা কাজে ব্লক এবং মহকুমা কৃষি দফতরে কাজে লাগানো হচ্ছে।

আরামবাগের ৬টি ব্লকের ৬৩টি পঞ্চায়েতের জন্য মোট ১২ জন কেপিএস আছেন। তাঁদের অনেকেই স্বীকার করেছেন, কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করতে যাওয়া ছাড়া অন্য সময় তাঁরা মাঠে যাচ্ছেন না। একার পক্ষে ৮-১০টি পঞ্চায়েত এলাকার মাঠে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব নয়। নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন না করতে পারায় আধুনিক কৃষি-প্রযুক্তির প্রয়োগও নেই।

আরামবাগের রামনগর গ্রামের বিদ্যাপতি বাড়ুই বা পুড়শুড়ার জঙ্গলপাড়া গ্রামের বিমল হাটি বলেন, ‘‘কেপিএস না থাকায় কৃষির উন্নত পরিষেবা, নতুন নতুন চাষের উদ্যোগ, রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণের বিজ্ঞানভিত্তিক পরামর্শ— কিছু মিলছে না। স্থানীয় সারের দোকানদারদের পরামর্শ মতো রাসায়নিক সার, ওষুধ দিতে হচ্ছে।” ফলে, চাষে ক্ষতি হয়েই চলেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Krishi Prayukti Sahayak KPS Hooghly Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy