প্রতীকী ছবি।
সব দায় এসে পড়েছে ওঁদের ঘাড়ে!
করোনা সচেতনতার কাজ, ডেঙ্গি প্রতিরোধ, সেফ হাউস, নিভৃতবাস কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা, যাবতীয় সরকারি প্রকল্পের তদারকি— সব।
করোনা-আবহে কর্মী-আধিকারিকদের উপস্থিতির হার কার্যত তলানিতে ঠেকেছে হাওড়া জেলার ব্লক অফিসগুলিতে। ফলে, নামমাত্র কর্মী নিয়ে বিডিওদেরই ‘একা কুম্ভ’ হয়ে সব কাজ সামলাতে হচ্ছে। ধাক্কা খাচ্ছে
গ্রামোন্নয়নের কাজ।লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে রাজ্যের মুখ্যসচিব একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছিলেন, সরকারি অফিসগুলিতে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী হাজির থাকতে পারবেন। কিন্তু হাওড়ার ১৪টি ব্লক অফিসে কোথায় সেই হাজিরা?
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক-একটি ব্লক অফিসে কর্মী এবং আধিকারিক মিলিয়ে গড়ে ৫০ জন করে কাজ করেন। কিন্তু লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেও এক-একটি ব্লক অফিসে রোজ গড়ে গড়ে ৪-৫ জন করে আসছেন। কখনও আরও কম।
কেন?
বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, অফিসগুলিতে স্থানীয় কর্মী ও আধিকারিক কমই আছেন। বেশিরভাগ আসেন হুগলি, মেদিনীপুর, হাওড়া শহর বা কলকাতার বিভিন্ন এলাকা থেকে। মূলত যানবাহনের অভাবে তাঁরা আসতে পারছেন না ওই সব এলাকার কর্মীরা দাবি করেছেন।
তাঁদের মতে, এখনও রাস্তায় পর্যাপ্ত বাস নেই। ট্রেন বন্ধ। এক বিডিও জানান, তিনি প্রথম কয়েকদিন অফিসের তরফে কর্মীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তাতে প্রচুর খরচ। ফলে, সেই ব্যবস্থা আর বজায় রাখা যায়নি। অনেক ব্লকে মুখ্যসচিবের নির্দেশমতো হাজিরায় ‘রোটেশন’ পদ্ধতির চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু নিজেদের এলাকা ‘গণ্ডিবদ্ধ’ হয়ে গিয়েছে বা হাওড়ায় করোনার প্রকোপ বাড়ছে— এই সব কথা বলে কর্মী-আধিকারিকদের একটা বড় অংশ আসতে রাজি হচ্ছেন না বলে কয়েকজন বিডিও জানান। বিডিওরা সরকারি গাড়ি পান। তাই তাঁদেরই আসতে হচ্ছে।
সমস্যার কথা স্বীকার করেন জেলা প্রশাসনের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘গাড়ির সমস্যা সত্যি আছে। কোনও কর্মী যদি নিজেদের শরীর খারাপ বা করোনা আতঙ্কের কথা বলেন, তাঁকে মানবিকতার খাতিরে কিছু বলাও যায় না।’’ এক বিডিও বলেন, ‘‘আমাদেরই ব্লক অফিস খুলে রাখতে হচ্ছে। সব করতে হচ্ছে গুটিকয়েক কর্মী নিয়ে বা একা হাতে। এই ভাবে কি আর সব কিছু ঠিকঠাক চলে? থমকে যাচ্ছে উন্নয়নের কাজ।’’ গ্রামোন্নয়নের কাজে ব্লক অফিসের কর্মী-আধিকারিকদের গুরুত্ব যথেষ্ট। আবেদনপত্রের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি সহায়তা প্রকল্পের উপভোক্তাদের নাম বাছাই, অনলাইনে নিবন্ধীকরণ, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির কাজ সরেজমিনে দেখা, বাড়ির ছবি তোলা, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের রিপোর্ট তৈরি— কাজ প্রচুর। বিভাগীয় আধিকারিক অফিসে না-আসায় বিডিওরা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠাতে গিয়ে বিডিওরা
নাকাল হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy