চালুর অপেক্ষায় ৩১ নম্বর রুটের একটি বাস। —নিজস্ব চিত্র
এ যেন মরার উপরে খাঁড়ার ঘা!
টোটো-ট্রেকারের দৌরাত্ম্যের জেরে মার খেয়েছে বাস পরিবহণ ব্যবসা গোদের উপরে বিষফোড়া হয়েছে রাস্তা সংস্কারে ‘অনাবশ্যক’ বিলম্ব এই দুইয়ের ধাক্কায় জেলায় গুরুত্বপূর্ণ তিনটি রুটে বাস পরিবহণ ব্যবস্থা ধুঁকছে বলে অভিযোগ বাসমালিকদের একাংশের
সড়ক সংস্কারের কারণে শ্রীরামপুরের একাধিক রুটের বাস কার্যত বন্ধ হওয়ার জোগাড় বলে অভিযোগ বাস মালিকদের তাঁদের বক্তব্য, মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তা (নওগাঁ থেকে পিয়ারাপুর) সংস্কারের কাজে অনাবশ্যক বিলম্বের কারণে শ্রীরামপুর থেকে জাঙ্গিপাড়া, আউষবালি এবং হাওড়ার বিরশিবপুর রুটে বাস পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, শীঘ্রই সড়ক সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হবে
শ্রীরামপুরের নওগাঁ থেকে পিয়ারাপুরে দিল্লি রোড ছুঁয়ে ৩১ নম্বর রুটের বাস জাঙ্গিপাড়া যায় রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ না-হওয়ায় এই রুটে আপাতত বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে অপর দু’টি রুটের বাস দিল্লি রোড হয়ে চলে গত বছরের শেষ দিকে নওগাঁ থেকে পিয়ারাপুর ও বড়া হয়ে চণ্ডীতলা পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হয় বাসমালিকদের একাংশের দাবি, প্রশাসনের তরফে তখন তাঁদের বলা হয়েছিল, দ্রুততার সঙ্গে পোক্ত রাস্তা তৈরির জন্য ওই রাস্তার নওগাঁ থেকে পিয়ারাপুর পর্যন্ত অংশ বন্ধ রাখা হচ্ছে এক-দেড় মাসেই সেই কাজ হয়ে যাবে ওই সময় তাঁরা দিল্লি রোড থেকে বাস চালাতে পারেন
বাস মালিকদের অভিযোগ, মুখে এক-দেড় মাস বলা হলেও লকডাউন শুরুর আগে পর্যন্ত তাঁদের দিল্লি রোড থেকেই বাস চালাতে হয় বাস শ্রীরামপুর ঢুকতে না-পারায় যাত্রীসংখ্যাও কমে যায় ব্যাপক লোকসান হওয়ায় অনেকে রুট থেকে বাস তুলে নেন এর মধ্যেই লকডাউন শুরু হয় তিন মাস আগে আনলক-পর্ব শুরু হওয়ার পরেও বাস মালিকদের সেই দিল্লি রোড থেকেই বাস চালাতে বলা হয়
এক নজরে
•রাস্তার কাজ শুরু হয় গত বছরের শেষ দিকে
•নওগাঁ থেকে পিয়ারাপুর পর্যন্ত ১ কিমি রাস্তা বন্ধ
•কাজ শুরুর এক-দেড় মাসের মধ্যে ওই অংশে বাস চালুর কথা ছিল
• মাস খানেক আগে মূল রাস্তার উদ্বোধন হয়েছে
• কালভার্ট তৈরির
জন্য ওই অংশে বাস চালু হয়নি
•বাস না চলায় কয়েক গুণ খরচ বেড়েছে যাত্রীদের
শ্রীরামপুর মহকুমা বাস মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক রঞ্জন প্রামাণিক বলেন, ‘‘লকডাউনের পরে যাত্রী আরও কমে গিয়েছে বাধ্য হয়ে দু’য়েক দিন চালিয়েই অনেকে বাস বন্ধ করে দেন মাস খানেক আগে মূল রাস্তাটির উদ্বোধন হয় ভেবেছিলাম, এ বার শ্রীরামপুরে ঢোকা যাবে কিন্তু এখনও ওই এক কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজ শেষ হয়নি’’
শ্রীরামপুর-আউষবালি রুটের একটি বাসের মালিক পিনাকি মিত্র বলেন, ‘‘শ্রীরামপুরে আদালত, বড় হাসপাতাল-সহ পুলিশ-প্রশাসনের বিভিন্ন দফতর রয়েছে ওই সব জায়গার আসার জন্য লোক বাসে চাপতেন অথচ এক বছর ধরে শ্রীরামপুর শহরে ঢোকার ওই পথটাই বন্ধ বাস এখন আমাদের কাছে হাতি পোষার মতো’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এমনিতেই টোটোর দৌরাত্ম্যে কারবার লাটে উঠেছে রাস্তা খুললেই অবস্থা সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে না তবে, কিছুটা সুরাহা হবে’’
বাস পরিষেবা ধুঁকতে থাকায় ওই তিনটি রুটের বাসচালক এবং কন্ডাক্টরদের কেউ কেউ একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নাম লিখিয়েছেন বলে খবর কেউ আবার রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন বাসমালিক বাবু ঘোষের বক্তব্য, ‘‘কারও কাছে অভিযোগ করতে চাইছি না তবে এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে আর কত সময় লাগতে পারে, সেটা মাথায় ঢুকছে না এ ভাবে চললে ব্যবসা অচিরেই লাটে উঠবে’’
এই পরিস্থিতিতে পকেটে টান পড়ছে যাত্রীদের তাঁদের অভিযোগ, বাসে যে পথ ১২-১৫ টাকায় যাওয়া যেত, টোটোতে তার দ্বিগুণ-তিনগুণ খরচ হচ্ছে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়ার অঙ্কও বাড়ে সন্ধ্যার পরে বড়া থেকে শ্রীরামপুরে আসতে টোটোচালক ১৫০-২০০ টাকা ভাড়া হাঁকেন নওগাঁ থেকে পিয়ারাপুর
রাস্তা বন্ধ থাকায় বারুইপাড়া, শিয়াখালা, মশাট থেকে সরাসরি শ্রীরামপুরে আসার সুযোগ নেই একাধিক বার অটো-টোটো বদলে আসতে হয় টাকা এবং সময় দুই-ই বাড়তি লাগে বড়ার বাসিন্দা সুরজিৎ দাস শ্রীরামপুরে একটি দোকানের কর্মী তিনি বলেন, ‘‘বাসে ১৫ টাকা ভাড়া ছিল এখন দু’বার টোটো পাল্টে আসি ৩০-৩৫ টাকা লাগে বৃষ্টি হলে ভাড়া আরও বেড়ে যায়’’
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় সমস্যার কথা মানছেন তাঁর দাবি, ‘‘মাস খানেক আগে রাস্তা চালুর সময়ে তিনটি জায়গায় সমস্যা দেখা যায় সেই জন্য ওখানে কালভার্ট করা হচ্ছে কাজ প্রায় সম্পূর্ণ দিন সাতেকের মধ্যেই বাস চলতে পারবে বলে আশা করছি’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy