ফাইল চিত্র
আমপান রেয়াত করেনি হুগলিকে। তছনছ হয় ১৮টি ব্লকই। যত দিন যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তত তীব্র হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, ক্ষতির পরিমাণ এবং ক্ষতিপূরণের মধ্যে আসমান-জমিন ফারাক!
যে সব বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ-প্রাপকের তালিকা নিয়ে এই জেলাতেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু আমপান হুগলিতে মূল আঘাত হেনেছে কৃষিতে। হুগলি কৃষিপ্রধান জেলা হিসেবেই পরিচিত। মোট ২০৩০টি মৌজার ১০০ শতাংশ চাষজমিই ক্ষতিগ্রস্ত বলে জেলা কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরের হিসেব। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬৮৯ কোটি টাকা।
ক্ষতিপূরণ কী মিলেছে?
‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে বাড়তি একটি কিস্তির টাকা। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী বছরে দু’টি মরসুমে দু’বার টাকা দেওয়া হয়। জমি অনুযায়ী এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা। বাড়তি একটি কিস্তির টাকা দেওয়া হলেও তা ক্ষতির তুলনায় যৎসামান্য বলে অসন্তোষ রয়েছে চাষিদের। তবে, বিপর্যয় মোকাবিলায় আমন চাষে ফলন এবং গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে হুগলিতে পুরনো প্রজাতির ধান বাতিল করে নতুন চার প্রজাতির ধান চাষে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।
পুরশুড়ার ডিহিবাতপুরের আনাজ-চাষি সনৎ বাইরির অভিযোগ, “পাঁচ কাঠায় বেগুন চাষ করতেই প্রাথমিক খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। আমপানে সব শেষ। ‘কৃষকবন্ধু’র দু’হাজার টাকা ক্ষতিপূরণে একদফার কীটনাশকও কেনা যাবে না।” জেলার এক কৃষি আধিকারিক বলেন, ‘‘জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের টাকা মিললে কৃষকদের অসন্তোষ থাকবে না।”
আমপানে জেলায় প্রায় ৭ হাজার ৫০০ ফুট মাছের পুকুরের পাড় ধসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষির সংখ্যা প্রায় ৫০০। এখনও পর্যন্ত কোনও আর্থিক সাহায্য মেলেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। তবে, মৎস্য দফতর এবং ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মেলবন্ধনে ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর পাড় সংস্কার শুরু হয়েছে। ভেঙে পড়া গবাদি পশুর খামারও সংস্কার চলছে। তবে, হাঁস-মুরগির মৃ্ত্যুর ক্ষতিপূরণ এখনও মেলেনি বলে অভিযোগ।
গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায় পুরোটাই স্বাভাবিক হলেও রাস্তাঘাটের এখনও হাল ফেরেনি বহু জায়গাতেই। ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধগুলিতে আপাতত বালির বস্তা ফেলা হয়েছে।
পান্ডুয়ার পাইকারা গ্রামের অলোকা বাগ বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে বাংলা আবাস যোজনায় ঘর করেছিলাম। ঝড়ে সব উড়ে গেল। ব্লক অফিস থেকে প্রতিশ্রুতি মিললেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। বাধ্য হয়ে পাশের বাড়িতে বাস করছি।’’
অসহায়তার কথা শোনা গিয়েছে জেলার আরও নানা প্রান্তে।
(তথ্য সহায়তা: সুশান্ত সরকার, দীপঙ্কর দে, তাপস ঘোষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy