বিদ্যুতের দাবিতে উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়ায় ওটি রোডে অবরোধ তুলতে চেষ্টা পুলিশের। ছবি: সুব্রত জানা
বহু এলাকা এখনও নিষ্প্রদীপ। পানীয় জল নেই। মোবাইল ফোন কাজ করছে না। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। ভেঙে পড়া গাছে এখনও অনেক রাস্তা অবরুদ্ধ।
চার দিন পার। আমপান-বিধ্বস্ত গ্রামীণ হাওড়ার জনজীবন শনিবারেও স্বাভাবিক হল না। পরিস্থিতির কবে উন্নতি হবে, তারও স্পষ্ট দিশা মিলছে না। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য জানান, ঝড়ে ক্ষতির যা আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। তার ফলেই স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে একটু সময় লাগছে। প্রশাসনের সব বিভাগ হাত মিলিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে। দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা
ফিরে আসবে।
আমপানে গ্রামীণ হাওড়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা তছনছ হয়ে যায়। বিদ্যুতের অসংখ্য খুঁটি উপড়ে পড়ে। গাছ পড়েও তার ছেঁড়ে। ট্রান্সফর্মার বিকল হয়। এ সবের জেরে গোটা গ্রামীণ হাওড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ঝড় থেমে যাওয়ার পর থেকেই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীরা কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু ক্ষতির বহর এতটা যে শনিবার পর্যন্ত মাত্র ৪০ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা গিয়েছে বলে বণ্টন সংস্থার উলুবেড়িয়া ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোদমে চালু করতে আরও অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বহু জায়গায় পানীয় জল মিলছে না। যদিও বণ্টন সংস্থা সূত্রের দাবি, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাম্প হাউসগুলিতে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, শনিবারেও অধিকাংশ পাম্প চলেনি। ফলে, বিভিন্ন ব্লকেই পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। নলকূপগুলির সামনে পড়ছে লম্বা লাইন। কয়েকটি ব্লকে জেনারেটর দিয়ে দিনে মাত্র এক ঘণ্টা করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাম্প চালিয়ে জল দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। তার সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে পানীয় জলের পাউচ। কিন্তু এ ভাবে যে সমস্যা মিটবে না, তা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ মেনে নিচ্ছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়ার বাসিন্দারা স্থানীয় ওটি রোড অবরোধ করেন শনিবার।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে কাজে লাগিয়েও এখনও অনেক জায়গায় গাছ সরানো সম্ভব হয়নি। তার উপরে আবার বহু ব্যক্তিগত উদ্যোগে লাগানো গাছ পড়ে রয়েছে। ফলে, রাস্তা বন্ধ। পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বিদ্যুৎ না-থাকায় তাঁরা মোবাইলে চার্জ দিতে পারছেন না। নেট পরিষেবাও অমিল। ফলে, অনেক জরুরি কাজ থমকে রয়েছে।
ঝড় কেটে যাওয়ায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু বহু বাড়িই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় ত্রিপলের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু প্রয়োজনমতো ত্রিপল মিলছে না, এই অভিযোগ ছিলই। এ দিন রটে যায়, উলুবেড়িয়া পুরসভার পক্ষ থেকে ত্রিপল বিলি করা হবে। সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ লাইন দেন। পরে পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, লাইনে দাঁড়াতে হবে না। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ত্রিপল চলে যাবে। সেখান থেকেই বিলি করা হবে। এই কথা শুনে দুর্গতেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুরসভার বিদায়ী
চেয়ারম্যান তথা প্রশাসক অভয় দাসের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে। অভয়বাবু বলেন, ‘‘একটা সমস্যা হয়েছিল।
তা মিটে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা সবাই ত্রিপল পাবেন।’’
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, প্রতিটি ব্লকে পর্যাপ্ত ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। আরও যদি প্রয়োজন হয় তা-ও দেওয়া হবে। সমস্যা হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy